শীতের পিঠা নিয়ে উক্তি ২০২৪ পিঠার নাম এবং তৈরির নিয়ম

 প্রিয় পাঠক আপনি যদি শীতের পিঠা নিয়ে উক্তি এবং বাংলাদেশের পিঠার নাম সম্পর্কে অনেক খোঁজাখুঁজির পরও সঠিক তথ্য পাচ্ছেন না। তাহলে এই আর্টিকেলটি আপনার জন্য। আমরা এই সম্পর্কে এখানে বিস্তারিত আলোচনা করেছি।

শীতের পিঠা নিয়ে উক্তি


নিচে শীতের বিভিন্ন পিঠা এবং এর তৈরি নিয়ম নিয়ে অনেক কিছু বলা হয়েছে। বিস্তারিত জানতে পুরো পাঠটি মনোযোগ দিয়ে পড়বেন।

সূচিপএঃ শীতের পিঠা নিয়ে উক্তি ২০২৪ পিঠার নাম এবং তৈরির নিয়ম

ভূমিকা

ভোজন রসিক বাঙালিরা শীতে এলেই যেন পিঠা বানানোর একটি আনন্দমুখর উৎসব পালন করে। এবং এই সময় তারা তাদের আত্মীয়-স্বজনদের দাওয়াত করে এবং তাদের মাঝে এই পিঠা পরিবেশন করে। বাংলাদেশ বিভিন্ন রকম পিঠা বানানো হয় যেমন ভাপা পিঠা, রস চিতায়, পাটিসাপটা ইত্যাদি। এবং এসব পিঠা নিয়ে তাদের অনেক উক্তি রয়েছে।

শীতের পিঠার নাম

বাঙ্গালীদের শীতের সময় একটি জনপ্রিয় খাদ্য হচ্ছে পিঠা। বাঙ্গালীদের মধ্যে পিঠা পছন্দ করে না এমন মানুষ হয়তো খুঁজে পাওয়া খুব কঠিন। বাঙালিরা শীতের সময় বিভিন্ন রকম পিঠাপুলি খেয়ে থাকে যেমন ভাপা পিঠা, দুধ পিঠা, পাটিসাপটা, মুখ সামলাই পিঠা ইত্যাদি। এই শীত এলেই বাঙালিরা সকালে ভাপা পিঠা এবং রাতে রস পিঠা ছাড়াও আরো বিভিন্ন পিঠা খেয়ে থাকে।
 এবং এ সময় তারা বিভিন্ন আত্মীয়-স্বজনদের বাসায় ঘুরতে যাই এবং নিজেদের বাসাতেও আত্মীয়-স্বজনদের দাওয়াত করে একরকম পিঠাপুলি দিয়ে পিঠা উৎসবে পালন করে। এছাড়াও এই শীতের সময় আর একটি জনপ্রিয় জিনিস হচ্ছে খেজুরের রস। ভোজন প্রেমী বাঙ্গালীদের কাছে এই খেজুর রসটি অনেক জনপ্রিয়। তারা শীতের সকাল এ খেজুর রস খেয়ে শুরু করে।

 বিশেষ করে এই খেজুর রস গ্রামাঞ্চলের দিকে বেশি পাওয়া যায়। গ্রাম অঞ্চলের মানুষেরা এই খেজুরের রস দিয়ে বিভিন্ন প্রকার পিঠাপুলি তৈরি করে থাকে। এবং এগুলো খেতেও অনেক সুস্বাদু হয়ে থাকে। যেমন এই খেজুরের রস দিয়ে তারা রস পিঠা, রস চিতায়, ক্ষীর, পায়েস ইত্যাদি নানান ধরনের জিনিস তৈরি করে থাকে।

বাংলাদেশের পিঠার নাম

বাংলাদেশে শীতকাল এলেই যেন প্রতিটি ঘরে ঘরে পিঠাপুলি তৈরির একটি উৎসব মুখর পরিবেশ তৈরি হয়। বাংলাদেশের এমন কোন মানুষ খুঁজে পাওয়া যাবে না যিনি এই শীতকালীন পিঠাপুলির সাথে পরিচিত না। কমবেশি সবাই শীতকালীন এসব পিঠা গুলির সাথে অতপ্রতভাবে পরিচিত।
 বাংলাদেশ শীতের সময় বিভিন্ন প্রকার পিঠা তৈরি হয়ে থাকে যেমন ভাপা পিঠা, রস পিঠা, রস চিতায়, পাটিসাপটা, মুখ সামলায় ইত্যাদি নানান রকমের পিঠা। বাংলাদেশের গ্রাম অঞ্চলের কৃষকরা শীতকালে নতুন ধানের চাল ঢেঁকিতে গুড়ো করে বিভিন্ন রকমের পিঠাপুলি এবং পায়েস তৈরি করে থাকে। এছাড়াও গ্রাম অঞ্চলে শীতকালে খেজুরের রস দিয়েও গ্রাম অঞ্চলের মানুষরা গুড় তৈরি করে থাকে।

 এই গুড় হল পিঠাপুলি বানানোর মূল উপকরণ এগুলো শীতকালে কোন পিঠাই জমে না। এছাড়াও শহর অঞ্চলের শীতকালের পিঠা তৈরি এবং খাওয়া কিছুটা ভিন্নতা রয়েছে। কারণ শহর অঞ্চলে বিশেষ করে মানুষ কাজের চাপে এই পিঠাপুলি বানানোর তেমন সময় পায় না।

 বিশেষ করে শীতকালে ঢাকা শহরে রাস্তাঘাটে বিভিন্ন স্থানে এ পিঠা গুলি বিক্রি করা হয় সেখানে বিভিন্ন রকমের পিঠা পাওয়া যায় যেমন পাটিসাপটা, রস পিঠা, পাকোড়া, চিতায়, ভাপা পিঠা ইত্যাদি। তাই বলা যায় যে বাংলাদেশ গ্রামাঞ্চল এবং শহর অঞ্চলে এ ধরনের পিঠা পাওয়া যায়।

শীতের পিঠা তৈরির নিয়ম

শীত আসার পরপরই বাংলার বিভিন্ন ঘরে ঘরে পিঠা তৈরির একটি উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করে। এ সময় বিভিন্ন পদের এবং বিভিন্ন স্বাদের পিঠাপুলি তৈরি করা হয়ে থাকে। এসব পিঠা পুলির প্রচলন আদিম যুগ থেকে আমাদের গ্রামবাংলায় হয়ে আসে। এ সময় বিভিন্ন রকম পিঠা তৈরি করা হয়ে থাকে যেমন ভাপা পিঠা, রস চিতায়, পাটিসাপটা, মুখশলা পিঠা ইত্যাদি।  পিঠা তৈরির নিয়ম নিচে দেওয়া হলঃ
  • ভাপা পিঠা
এই ভাপা পিঠার আরেকটি নাম আছে সেটি হলো ধুপি। এটিকে আমাদের বাংলার আঞ্চলিক ভাষায় ধুপি বলা হয়ে থাকে। এটি তৈরির জন্য প্রয়োজন দুধ চালের গুড়া দুই থেকে তিন কাপ এবং ভেঙে নেওয়া খেজুর অথবা কুসুরের গুড় এবং কুঁড়ে নেওয়া নারকেল কুচি এবং স্বাদ মতন লবণ। চালের গুড়া লবণ এবং পানি দিয়ে মিশিয়ে নিতে হবে।
 এরপর একটি চুল এক হাঁড়ি পানি ফুটাতে হবে এবং হাড়ের ঢাকনার মুখে ছোট ছিদ্র রাখতে হবে। এরপর চালের গুড় গুলো এবং খেজুরের গুড় সহ একটি ছোট পাত্রে করে ঢাকনার ছোট ছিদ্রে বসাতে হবে এমন ভাবে বসাতে হবে যাতে পানির বাষ্প গুলো বেরিয়ে না যায়। এভাবে এক মিনিট পর নামিয়ে নিলেই বাবা পিঠা তৈরি হয়ে যাবে।
  • রস চিতায়
এটি তৈরির জন্য প্রয়োজন এক কেজি মতো খেজুরের গুড় অথবা খেজুরের রস এবং চালের আটা আর দুধ। প্রথমে এক কেজি গুড় দুধের সাথে ভালো মত গুলিয়ে নিতে হবে এবং একটি সেরা তৈরি করতে হবে। এরপর চালের ময়দাগুলো একটি পাত্রে ভালোভাবে গুলে নিতে হবে।

 এরপর চুলোতে একটি ফ্লাই প্যান বসাতে হবে এবং এই ফ্রাই প্যানের উপরে গুলে রাখা চালের ময়দাগুলো দিয়ে শিখে নিতে হবে এবং গোল আকৃতির যাতে হয় সেদিকে খেয়াল করতে হবে। এরপর এগুলো গুলে রাখা গুড় এবং দুধের সেরা মধ্যে এক ঘন্টা ভিজিয়ে রাখতে হবে। তাহলেই চিতায় তৈরি হয়ে যাবে।
  • পাটিসাপটা
পাটিসাপটা তৈরির জন্য প্রয়োজন চালের ময়দা, চিনি, তেল, এবং দুধের খেরসা। প্রথমে চালের ময়দা ভালো করে চিনি দিয়ে এবং হালকা দুধ দিয়ে গুলি নিতে হবে। এরপর ফ্রান প্যান হালকা তেল নিয়ে এর মধ্যে বলে রাখা চালের ময়দাগুলো দিয়ে রুটির মতো আকৃতি করতে হবে। এবং এর দুধের খেরসা দিয়ে রুটিটি ভালোভাবে জোরে ফেলতে হবে। আর এভাবেই পাটিসাপটা তৈরি হয়।
  • মুখশলা
মুখ শলা পিঠা তৈরির জন্য প্রয়োজন চালের ময়দা, তেল, এবং দুধের খেরসা, এবং লবণ। এই পিঠা তৈরীর জন্য প্রথমে চালের ময়দা লবণ দিয়ে ভালোভাবে রুটির মত খামির করে নিতে হবে। এবং এরপর বেলুন দিয়ে বড় করে রুটির মতন গোল আকৃতি করতে হবে। এরপর আরেকটি পাত্রে একটি দুধ নিয়ে দুধের খিরসা তৈরি করতে হবে।

 তারপর কোনো গোল আকৃতির বাটি দিয়ে ছোট ছোট করে রুটিটি কেটে নিতে হবে। এবং এরপর এর ভেতরে দুধের খিরসা দিয়ে ভালোভাবে এর মুখ বন্ধ করতে হবে। এবং এরপর এটি ডুবু তেলে ভাসতে হবে।

শীতের পিঠা উৎসব

সেই প্রাচীন কাল থেকে বাঙ্গালীদের খাদ্য তালিকার মধ্যে পিঠা একটি জনপ্রিয় নাম। বাঙালিরা শীতকালেই এই পিঠা তৈরির একটি উৎসবমুখর আয়োজন করে। সেই প্রাচীনকাল থেকে শুরু করে তাই এখন পর্যন্ত বাঙালির ঘরে ঘরে এই পিঠা তৈরি হয়। এছাড়াও এখন বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে পিঠা উৎসব হয়ে থাকে।
 এই পিঠা উৎসবটি বিভিন্ন জেলা উপজেলা পর্যায় এবং স্কুল কলেজ ইউনিভার্সিটি প্রাঙ্গণে হয়ে থাকে। এসব পিঠা উৎসবে সকল প্রকার স্কুল কলেজ এবং ইউনিভার্সিটি শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করে। তারা তাদের বিভিন্ন পিঠা তৈরি করে এ পিঠা উৎসবে পিঠার স্টল দেয়। এবং তাদের মধ্যে পিঠা তৈরির একটা প্রতিযোগিতামূলক পরিবেশ সৃষ্টি হয়।

 এখানে তারা বিভিন্ন পদের পিঠা তৈরি করে থাকে যেমন রস পিঠা, পাপা পিঠা, মুখশলাই, পাটিসাপটা, ইত্যাদি নানান পদের পিঠা। এবং এসব পিঠা উৎসবে অনেক ভোজন রসিকরা ঘুরতে আসে এবং তারা এসব পিঠা খাই এবং উপভোগ করে। বিশেষ করে ঢাকাতে এই পিঠা উৎসবটি প্রতিবার শীতে হয়ে থাকে। এছাড়াও রাজশাহী সিলেট রংপুর বিভিন্ন জেলায় জেলাভিত্তিকভাবেও এ পিঠা উৎসব হয়ে থাকে।

শীতের পিঠা নিয়ে উক্তি

শীতকাল এলে যেন বাঙ্গালীদের মধ্যে একটি আনন্দমুখর পরিবেশ বিরাজ করে। বাংলাদেশে শীতের সময় বিভিন্ন রকমের এবং বিভিন্ন পাহাড়ের পিঠা পুলি তৈরি করা হয়। এই পিঠাপুলি গুলো দেখতে যেমন আকর্ষণীয় এবং এগুলো খেতে অনেক সুস্বাদু হয়ে থাকে।
 সে প্রাচীনকাল থেকে শুরু করে এখন পর্যন্ত শীতকে কেন্দ্র করে পিঠা বানানোর যে আমেজ রয়েছে তা আজও বাঙ্গালীদের মনে গেঁথে রয়েছে। শীতে এলে যেন বাঙালিরা এই শীতের পিঠা নিয়ে বিভিন্ন উক্তি করে থাকে।
  • শীতের হালকা আমেজ নিয়ে আজকেএলো রাত ঘুমের দেশে যাও হারিয়ে স্বপ বারাক হাত ।
  • আহারে কত না রঙের এবং স্বাদের পিঠা খেয়ে যেন মন ভরে গেল।
  • শীতের কুয়াশাচ্ছন্ন সেই ভরে ভাপা পিঠার ভাবটা যেন মুখে এসে লাগে এই সময় এই ভাবা পিঠার সাদ্বের কোন তুলনা হয় না।
  • গ্রামের বাড়ির সেই খেজুরের রসের মাখানো রস পিঠা খেতে খুবই মজা।

লেখকের মন্তব্য

পরিশেষে তাই বলা যায় যে আমাদের এই পাঠে শীতের পিঠা নিয়ে বিভিন্ন উক্তি এবং এর নাম ও তৈরি পদ্ধতি সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। তাই এই পাঠটি পড়ে যদি আপনি উপকৃত হয়ে থাকেন এটি অন্যদের মাঝেও শেয়ার করুন ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

rsfahim it নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url