নাইলোটিকা মাছের আদিবাস কোথায়-এর চাষ পদ্ধতি ও উপকারিতা

আপনি যদি নাইলোটিকা মাছের আদিবাস কোথায় ও নাইলোটিকা মাছের উপকারিতা সম্পর্কে জানতে চান এই আর্টিকেলটি আপনার জন্য। তাই দয়া করে এই সম্পর্কে সম্পূর্ণ তথ্য জানতে আর্টিকেলটি বিস্তারিত পড়ুন।

নাইলোটিকা মাছের আদিবাস কোথায়

আমরা লাইলনটিকা মাছের সম্পর্কে আরো অনেক বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছি সেগুলো নিচে দেওয়া হল।

সূচিপএঃ নাইলোটিকা মাছের আদিবাস কোথায়-এর চাষ পদ্ধতি ও উপকারিতা

ভূমিকা

, বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং সুপরিচিত একটি মাছ হচ্ছে লাইলনটিকা। এটি চাষে অনেক লাভজনক এবং এটি খেতে অনেক সুস্বাদু। এর পুষ্টিগুণ অনেক বেশি যা মানব দেহের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ। এটি চাষ করে অনেক মানুষ আজ স্বাবলম্বী। এটি যে কোন পুকুর জলাশয় বা ডোবাতে চাষ করা হয়ে থাকে।

নাইলোটিকা মাছের বৈশিষ্ট্য

তেলাপিয়া গোত্রের লাইলনটিকা মাছ ১৯৭৪ সনে থাইল্যান্ড থেকে বাংলাদেশে আনা হয় দেখতে ধূসর নিলাভ থেকে সাদা বর্ণের। এ মাছটি বছরে ৪ বার ডিম দিয়ে বাচ্চা ফুট। তিন মাস বয়সে এরা বাচ্চা দেয় । 6 মাস বয়সে এদের ওজন হয় প্রায় ১৫০ থেকে ২০০ গ্রাম। খাওয়ার জন্য উপযোগী। এই মাছ সব ধরনের খাবার খাই। এই মাছটিতে কাটা কম থাকায় এ মাছটি খেতে অনেক সুস্বাদু।
 এদের রোগ বলায় কম হয় এবং এরা দ্রুত বর্ধনশীল।যে জলাশয়ে বছরে পাঁচ থেকে আট মাস পানি থাকে সেসব জলাশয়ে এ মাছ চাষ অনেক উপযোগীে।এরা নয় ডিগ্রী থেকে ৩৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় সহজে টিকে থাকতে পারে। এরা কম অক্সিজেন ও বেঁচে থাকতে পারে।

নাইলোটিকা মাছের আদিবাস কোথায়

লাইলনটিকা মাছের আদি নিবাস হলো আফ্রিকা। এর ইংরেজি নাম Nilotica, এবং বৈজ্ঞানিক নাম Telapia nilotica। এটি তেলাপিয়া গোত্রের একটি মাছ ১৯৭৪ সালের থাইল্যান্ড থেকে বাংলাদেশ আনা হয় এই লাইলোনটিকা মাছ।

এদের বিশেষ বৈশিষ্ট্য হচ্ছে এরা তিন মাস বয়সে প্রজনন ক্ষমতা লাভ করে এবং এ সময় পুরুষ লাইলোনটিকা পুকুরের তলদেশের শক্ত মাটিতে তার শরীরের দৈর্ঘ্যের তুলনায় দ্বিগুণ ব্যাসের স্থান জুড়ে প্রায় ২৫ সেন্টিমিটার গভীর গর্ত হলে স্ত্রী মাছকে ডিম ছাড়ার জন্য আমন্ত্রণ জানায়। ইস্ত্রি মাছ তখন ওই গর্তে আগমন করে ডিম ছাড়ে। পরে পুরুষ মাছ শুক্রাণু ছেড়ে ডিম গুলো নিষুক্ত করে।
 নিষিক্ত হওয়ার পর পরই স্ত্রী মাছ ডিমগুলো মুখে তুলে নিয়ে ওই স্থান ত্যাগ করে এবং মুখের মধ্যে রেখে তা দিয়ে ডিম ফুটিয়ে পোনা তৈরি করে। পুকুর, ডোবা,, পতিত পুকুর নালা,, বিল ধান ক্ষেত যেখানে ৫-৮ মাস পানি থাকে সেখানে মাছ চাষ করা যায়।

নাইলোটিকা মাছের চাষ পদ্ধতি

বাংলাদেশের একটি সুপরিচিত ও জনপ্রিয় মৎস্য বা মাছ হল লাইলোনটিকা মাছ এবং এটির চাষ পদ্ধতি নিচে দেওয়া হলোঃ

  • পুকুর নির্বাচন
সারা বছর পানি থাকে অথবা মৌসুমী পুকুর এই  ধরনের পুকুরে মাছ চাষ অনেক ভালো হয়। পুকুরের আয়তন এক তিন বিঘা এর মধ্যে হলে খুব একটা ভালো হয়। তবে এর চেয়ে বড় বা। ছোট আকারের উপরেও মাছ চাষ করা যায় পুকুরটি আগাছা মুক্ত ও খোলামেলা এবং বন্যান মুক্ত স্থানে হতে হবে। পুকুরের গভীরতা ৩-৫ ফুটহতে হবে। 
 পুকুর পাড়ে বড় ধরনের গাছ পালা এবং গাছের লতাপাতা যেন পানিতে না পড়ে সেদিকে খেয়াল রাখা। কারণ গাছের পাতা পানিতে পড়ে এবং এটি পৌঁচে পানির গুনাগুন নষ্ট করে সাধারণত দোয়া ও কাদাযুক্ত পুকুরের জন্য জন্য উত্তম।
  • পুকুর প্রস্তুত
পুকুরে পোনা ছারার পূর্বে  অবশ্যই পুকুর ভালোভাবে প্রস্তুত করে নিতে হবে। মাছের শারীরিক বৃদ্ধির জন্য পুকুরে প্রয়োজনীয় পরিমাণ প্রাকৃতিক খাবার তৈরি করতে হবে।আর এর জন্য প্রয়োজন যেমন, জলজ আগাছা নিয়ন্ত্রণ রাক্ষসে মাছ মেরে ফেলা ও  চুন ও সার প্রয়োগ ইত্যাদি।
  • জলজাগাছা ও রাক্ষসী মাছ অপসারণ
পুকুরে অনেক সময় রাক্ষসী মাছ যেমন মাগুর টেংরা সহ সাব ব্যাংক ইত্যাদি ক্ষতিকারক প্রাণী থাকে এসব প্রাণী অনেক সময় লালনটিকা মাথায় পোনা খেয়ে ফেলে এবং মাছ চাষে বাধাগ্রস্ত করে। তাই এসব রাক্ষসী মাছ পুকুর থেকে নিষ্কাশন করতে হবে।

 এছাড়াও পুকুরে অনেক রকম উদ্ভিদ রয়েছে পুকুরে অপ্রয়োজনীয় যা পরবর্তীতে পৌঁছে পুকুরের মাছের গুনাগুন নষ্ট করে। যার ফলে এসব উদ্ভিদকেও পুকুর থেকে অপসারণ করতে হবে।
  • চুন প্রয়োগ
পুকুরের পানিতেও মাটিতে বিভিন্ন রকম জীবাণু পরজীবী এবং রোগ প্রতিরোধ করতে চুন প্রয়োগ করতে হবে। পুকুরের মাটি ও পানির গুনাগুনের উপর ভিত্তি করে চুন প্রয়োগ করতে হবে। উপরের তলদেশে শুকনো অবস্থায় চুন গুড়া করে শতাংশ প্রতি এক কেজি আরে সারা পুকুরে ছিটে দিতে হবে।

এবং অম্লীয়মান যদি চার হয় তাহলে ১০ কেজি করে চুন প্রয়োগ করতে হবে ৫ কেজি করে প্রয়োগ করতে হবে। এবং চুন প্রয়োগের প্রায় দুই থেকে তিন দিন পর পুকুরে পানি সরবরাহ করতে হবে।

 
  • সার প্রয়োগ
পুকুরে মাছের জন্য বিভিন্ন উদ্ভিদ ও প্রাণীজ জাতীয় প্রাকৃতিক খাদ্য তৈরি করার জন্য পুকুরে অনেক সময় জৈব ও অজৈব সার প্রয়োগ করতে হয়। নিচে সারগুলোর দেওয়া হলঃ
  • গোবর সারঃ ৬-৭ কেজি
  • হাঁস মুরগির বিষ্ঠা সারঃ ১ ২ কেজি
  • কম্পোস্টঃ ৯-৮ কেজি
  • ইউরিয়াঃ ২০০ গ্রাম
  • টিএসপিঃ ১০০ গ্রাম
এগুলো একটি পাত্রে সবগুলো একসাথে নিয়ে ভালোভাবে গুলিয়ে নিয়ে সূর্য আলোকিত দিকে রাখতে হবে। এরপর সমস্ত পুকুরে এটি ছিটিয়ে দিতে হবে পিএসপি সার বলতে একটু সময় লাগে বলে অন্তত ১২ ঘন্টা পানিতে টি ভিজিয়ে রাখতে হবে।

 এভাবে সার প্রয়োগ করলে প্রায় চার থেকে পাঁচ দিনের মধ্যেই এগুলো পুকুরে ভালোভাবে মিশে যায় এবং পানির রং হালকা সবুজ বা লালচে সবুজ হয়।

নাইলোটিকা মাছের উপকারিতা

বাংলাদেশের সবচেয়ে পরিচিত একটি মাছ হচ্ছে লাইলনটিকা মাছ। এটি দেখতে কিছুটা ছোট এবং খেতে অনেক সুস্বাদু। এই মাছটি আমাদের শরীরের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এটিতে উচ্চমাত্রার প্রোটিন রয়েছে যা আমাদের শরীরের বৃদ্ধির জন্য অনেক উপকারী এছাড়াও এতে এক ধরনের অ্যামাইনো এসিড আছে এবং এটিতে ভিটামিন এ বি সি রয়েছে।
 যা আমাদের শরীরের সকল রোগ বালাই থেকে দূরে রাখে। এই মাছে অন্যান্য মাছের মত আষ্টে গন্ধ লাগে না। এছাড়াও এই মাছ যে কোন জলাশয়ে চাষ করা যেতে পারে এটিতে বেশি খরচ হয় না। এবং এটি বিভিন্ন রকম। শেওলা খেয়ে বেঁচে থাকতে পারে তাই বাড়তি কোন খাবারের প্রয়োজন হয় না। বিশেষ করে মাছট হার্টের রোগীদের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ।

নাইলোটিকা মাছ চাষ কেন লাভজনক

লাইলনটিকা মাছ কাপ মার্চের সাথে খুব সহজে চাষ করা যায়। এবং এটি খুব দ্রুত বর্ধনশীল এবং এটিকে প্রাকৃতিক খাবারের সঙ্গে ৩-৫ শতাংশ সম্পূরক খাদ্য দিতে হয়। এটি যেকোনো জলাশয় ডুবা ইত্যাদিতে খুব সহজে কম খরচে চাষ করা যায়। এবং এটি পুকুরে থাকা বিভিন্ন রকমের শ্যাওলা উদ্ভিদ ইত্যাদি খেয়ে বেঁচে থাকে যার ফলে একটি চাষ করার সময় তেমন সম্পূরক খাদ্য প্রয়োজন হয় না।
 যার ফলে খুব কম খরচে লাল টিকা মাছ বেশি ফলন পাওয়া যায়। এছাড়াও মাছের রোগ বালাই খুবই কম হয় এদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অন্যান্য মাছের তুলনায় অনেক বেশি হয়ে থাকে। যার ফলে যে কেউ চাইলে খুব কম মুনাফা নিয়ে এই মাছটি চাষ করতে পারে এবং অনেক টাকা আয় করতে পারে।

 এতে করে অনেক মানুষের কর্মসংস্থান তৈরি হতে পারে যাতে করে বেকারত্ব দূর হয়। তাই এসব কারণে চাষ অনেক লাভজনক।

লেখকের মন্তব্য

তাই বলা যায় যে উপরোক্ত পাঠে আমরা নাইলোটিকা মাছের আদিবাস কোথায় ও এর এর উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। তাই আপনাদের যদি উক্ত পাঠটি ভালো লাগে তাহলে অন্যকে শেয়ার করতে পারেন।


এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

rsfahim it নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url