আম গাছে সার এবং কীটনাশক স্প্রে করার নিয়ম


প্রিয় পাঠক আপনি যদি আম গাছে স্প্রে করার নিয়ম এবং আম গাছে সার প্রয়োগ পদ্ধতি সম্পর্কে জানতে চান তাহলে আজকের এই আর্টিকেলটি আপনার জন্য। কারণ এই আর্টিকেলে আমরা এই সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করেছি।

আম গাছে স্প্রে করার নিয়ম


তাই আপনি যদি আমাদের এই আর্টিকেলটি সম্পূর্ণটা পড়েন তাহলে আপনি অবশ্যই আম চাষে লাভবান হবেন।

সূচিপত্রঃ আম গাছে সার এবং কীটনাশক স্প্রে করার নিয়ম

আম গাছে স্প্রে করার নিয়ম

আম গাছে উপযুক্ত আমের ফলন পাওয়ার জন্য আম গাছে স্প্রে করার নিয়ম সম্পর্কে জানা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ আপনি যদি আম গাছে ভালো ফলন পেতে চান তাহলে আপনাকে গাছে ঠিকমতো সার স্প্রে করতে হবে। তাই আজকে আমরা এই আর্টিকেলে আপনাদেরকে জানাবো যে আম গাছে কিভাবে আপনারা স্প্রে করবেন এবং ভালো একটি ফলন পাবেন।
১। শিম্বুস ফেনম ইসি ইত্যাদি ১০ লিটার পানির সাথে ভালো করে মিশিয়ে আম গাছে ভালোভাবে স্প্রে করতে হবে।

২। মূলত আমগাছে দুইবার স্প্রে করতে হয় আম গাছে মুকুল আসার পর এবং মুকুল গুলো ছোট ছোট আমের আকার ধারণ করলে আরেকবার স্প্রে করতে হয়।

৩। আর স্প্রে করার সময় পুরো গাছে ভালোভাবে স্প্রে করতে হবে যাতে করে আম গাছে কোনরকম পোকার আক্রমণ না করে।

৪। ফল সংগ্রহের প্রায় ১০ থেকে ১৫ দিন পূর্বে কোনরকম বালাই নাশক স্প্রে করা যাবে না এতে করে আমের ক্ষতি হতে পারে।

৫। এবং চেষ্টা করবেন সব সময় ভিন্ন ভিন্ন গ্রুপের কীটনাশক এবং ছত্রাকনাশক ব্যবহার করা এর ফলে আমের ফলন ভালো হবে।

৬। এবং প্রয়োজনে স্থানীয় কৃষি বিজ্ঞানীদের কাছে বা কৃষি বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নিতে পারেন।

আম গাছে সার প্রয়োগ পদ্ধতি

আম গাছে স্প্রে করার নিয়ম সম্পর্কে আপনি না জানলে আপনি আম গাছে সার প্রয়োগ করতে পারবেন না। তাই আমরা এই আর্টিকেলের উপরের অংশে এটি সম্পর্কে আলোচনা করে ফেলেছি। তাই এবার আম গাছে সার প্রয়োগ পদ্ধতি সম্পর্কে আপনাদের সাথে এই অংশে আলোচনা করব।
  • আম গাছে সার প্রয়োগ
আম গাছের বয়স অনুযায়ী সেখানে সার প্রয়োগ করতে হবে। এবং সার প্রয়োগের আগে গাছের আশেপাশের সকল আগাছা গুলোকে ভালোভাবে পরিষ্কার করতে হবে কারণ এগুলো সার প্রয়োগের পর এ সকল সারে ভাগ বসাতে পারে। এবং এরপর গাছের চারিপাশে গোল করে নালা কাটতে হবে এবং এ নালার মধ্যেই সারগুলো প্রয়োগ করতে হবে।
 আম গাছের গোড়ায় গোবর, টিএসপি, জিংক জিপসাম, সালফেট, ইউরিয়া ইত্যাদি সার সেপ্টেম্বর মাসের মধ্যেই প্রয়োগ করতে হবে। এবং সার প্রয়োগ করার আগে গাছের চারিদিকে প্রায় ১ থেকে ১.৫ মিটার দূরে হালকা ভাবে মাটি কুপিয়ে নিতে হবে এবং সার প্রয়োগ করার আগে মাটিতে ভালো ভাবে সেচ দিয়ে নিতে হবে।

আম গাছের পরিচর্যা

ইতিমধ্যে আমরা উপরের অংশে আম গাছে স্প্রে করার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করেছি তাই এবার আমরা আলোচনা করব যে আম গাছে ভালো ফলন পাওয়ার জন্য আম গাছে পরিচর্যা কিভাবে করতে হয়।

 বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং সুস্বাদু একটি ফল হচ্ছে আম যেটি শুধু গ্রীষ্মকালেই পাওয়া যায় তাই প্রতিবার গ্রীষ্মকালকে ঘিরে আমের অনেক চাহিদা থাকে প্রতিটা বাজারে। এবং গ্রীষ্মকালের আগে থেকেই আম চাষিরা তাদের আম গাছের ভালোভাবে পরিচর্যা করা শুরু করে দেয় যাতে করে আমের ফলন ভালো হয়।
১। বর্ষার পর গাছের গোড়ায় অনেক পরিমাণ ঘাস জন্মায় যা আম গাছের জন্য অনেক ক্ষতিকর তাই ঘাসগুলো পরিষ্কার করে নির্দিষ্ট দূরত্বে ফেলে দিতে হবে এবং গাছের গোড়ায় সার প্রয়োগ করতে হবে।

২। বর্তমান সময়ে সবাই প্রায় রাসায়নিক সার বেশির ব্যবহার করে থাকে রাসায়নিক সার বেশি ব্যবহার না করে জৈব সার ব্যবহার করতে হবে। জৈব সারের একটি উল্লেখযোগ্য স্থান হচ্ছে গরুর গোবর আপনি চাইলে গাছে মুকুল আশার এক থেকে দুই মাস আগে এই গরুর গোবর সার-গাছের গোড়ায় ব্যবহার করতে পারেন।

৩। এবং ঠিকঠাক মত সার প্রয়োগ করা হয়ে গেলে এরপর গাছের গোড়ায় গোল করে গর্ত করে পানি সেচের একটি ব্যবস্থা করতে হবে।

৪। গাছে মুকুল ধরার পর অনেকগুলো মুকলে পোকার আক্রমণ দেখা দিতে পারে যে সকল মুকূলে পোকার আক্রমণ হবে সে সকল মুকুলগুলোকে ছেঁটে ফেলতে হবে।

৫। গাছে ভালোভাবে আম ধরার পর গাছের ডালপালাগুলো ঝুলে যেতে পারে তাই বাস অথবা খুটি দিয়ে এগুলোকে ভালোভাবে মাটির সাথে ঠেকা দিতে হবে। বিশেষ করে আমরুপালি আমের গাছ অনেক ছোট হয় যার ফলে এই গাছটি আমের ভার ঠিকমতো নিতে পারে না।

আম গাছে কি কি সার দিতে হয়

আম গাছে স্প্রে করার নিয়ম সম্পর্কে জানার আগে আপনাকে অবশ্যই জানতে হবে আপনি আম গাছে কি কি সার দিয়ে স্প্রে করবেন। কারণ আপনি যদি আম গাছে ঠিকঠাকমতো স্যার দিতে না পারেন তাহলে আপনার আম গাছের আমের ফলন খুব একটা ভালো হবে না।

 তাই আপনি যদি আম গাছে ভালো একটা আমের ফলন পেতে চান তাহলে আপনাকে অবশ্যই কখন কোন সময়ে আম গাছে কি কি সার দিতে হয় এ সম্পর্কে জানা।
  • সার প্রয়োগ
গাছের সার প্রয়োগ করার আগে খেয়াল করতে হবে যাতে আশেপাশে কোন আগাছা না থাকে কারণ এ সকল আগাছা গাছের সার প্রয়োগে ভাগ বসাতে পারে তাই সার প্রয়োগের আগে আগাছা গুলো ভালো হবে পরিষ্কার করতে হবে। গাছের বয়স ভিত্তিতে মূলত নির্ধারণ করতে হবে যে গাছে কতটুকু সার দিতে হবে।
 মূলত এক বছর বয়সী গাছগুলোতে গোবর সার 5 থেকে 6 কেজি এবং ইউরিয়া সার ১১০ গ্রাম টি এস পি স্যার ১০০ গ্রাম পটাশ সার পঞ্চাশ গ্রাম জিপসাম সার ৪০ গ্রাম জিংক সালফেট ৪ গ্রাম বরুণ 6 গ্রাম ইত্যাদি।

 এইভাবে গাছের বয়স বাড়ার সাথে সাথে এটির পরিমাণও বৃদ্ধি করতে হবে মনে করেন যদি গাছের বয়স দুই বছর হয় তাহলে এটিকে দুই দিয়ে গুন করলে যে পরিমাণ হয় সে পরিমাণ সার প্রয়োগ করতে হবে।

আম গাছের কীটনাশক

আম গাছের সাধারণ একটি সমস্যা হচ্ছে পোকামাকড় আক্রমণ করা বিশেষ করে আম গাছের পাতায় এবং গাছে মুকুল এলে মুঘলে এই পোকামাকড়ের আক্রমণ দেখা যায়। এ পোকামাকড়ের আক্রমণ থেকে বাঁচার জন্য প্রতিনিয়ত আম গাছে কীটনাশক স্প্রে করতে হবে।
 তাই আজকে আমরা এই আর্টিকেলে আপনাদেরকে জানাবো যে আম গাছের কীটনাশক কিভাবে দিতে হয় এবং কি পরিমান দিতে হয় এই সম্পর্কে।
  • গাছে কীটনাশক প্রয়োগ
আমি মুকুল আসার পরপরই সঠিক সময় এবং সঠিক পরিমাণে কীটনাশক আম গাছে প্রয়োগ করতে হবে যাতে করে আমের মুকুলে কোনরকম পোকামাকর না লাগে। আমের ক্ষেত্রে হপার পোকার যে কীটনাশক রয়েছে সেটি স্প্রে করতে হবে।

 এছাড়া ১০ লিটার পানিতে প্রায় ১০ গ্রাম প্লেনাম জাজ ৫০ গ্রাম এই দুটো ওষুধ একসাথে পানিতে মিশে স্প্রে করবেন। এবং দ্বিতীয় স্ত্রীতে দশ লিটার পানিতে প্লে নাম এবং রিদমিল গোল্ড 70 গ্রাম একসাথে মিশিয়ে গাছে স্প্রে করতে হবে। আর এভাবেই আপনি চাইলে আম গাছের বিভিন্ন ছত্রাক এবং পোকামাকড় দূর করতে পারবেন

লেখকের মন্তব্য

আম গাছে স্প্রে করার নিয়ম সম্পর্কিত আজকের এই আর্টিকেলটি আপনাদের কাছে যদি ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই আর্টিকেলটিতে একটি লাইক এবং কমেন্ট করুন। এবং এ ধরনের সকল রকম গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পেতে আমাদের ওয়েবসাইটের সাথে যুক্ত থাকুন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

rsfahim it নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url