গরমে বাচ্চাদের ত্বকের যত্ন নেওয়ার উপায়
গরমে বাচ্চাদের ত্বকের যত্ন কিভাবে করবেন এবং গরমে বাচ্চাদের জন্য কোন ক্রিম ভালো
হবে আপনি যদি এ সম্পর্কে না জেনে থাকেন তাহলে আমাদের এই আর্টিকেলটি আপনার জন্য।
কারণ আমাদের এই আর্টিকেলে এই সম্পর্কে সকল তথ্য দেওয়া আছে।
তাই আপনি যদি গরমে বাচ্চাদের ত্বকের যত্ন করতে চান তাদের ত্বক ভালো রাখতে চান
তাহলে আপনাকে এ আর্টিকেলটি সম্পূর্ণটা করতে হবে।
সূচিপএঃ গরমে বাচ্চাদের ত্বকের যত্ন নেওয়ার উপায়
গরমে বাচ্চাদের ত্বকের যত্ন
গরমে বাচ্চাদের অনেক সমস্যা হয়ে থাকে তাই গরমে বাচ্চাদের ত্বকের যত্ন ভালোভাবে
নিতে হবে যাতে করে তাদের ত্বক এই গরমে গরমের আদ্রতা থেকে অনেক ভালো থাকে। ছোট
বাচ্চাদের ত্বক একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের চেয়ে অনেক বেশি সংবেদনশীল হয় যার
ফলে তাদের শরীরে তাপমাত্রা বেশি থাকে এবং অতিরিক্ত মাত্রায় ঘামে যা গরমে তাদের
ত্বকের ক্ষতি করতে পারে।
আরো পড়ুনঃ গর্ভাবস্থায় কি কি মাছ খাওয়া যাবে
তাই গরমে ছোট বাচ্চাদের ত্বকের এবং তাদের শরীরের বিশেষভাবে যত্ন নিতে হবে।
তাই এই গরমে কিভাবে আপনার বাচ্চার ত্বকের যত্ন নিবেন সে সম্পর্কে নিজে বিস্তারিত
হবে দেওয়া হলো।
১। ছোট বাচ্চারা একটু বেশি বেশি ঘামে যার ফলে তাদের শরীরে ডিহাইড্রশন হতে পারে
তাই গরমে তাদেরকে বেশি বেশি করে পানি পান করাতে হবে।
২। অনেকে রয়েছে যারা মনে করে প্রতিদিন বাচ্চাদের গোসল করালে সর্দি কাশি অথবা
জ্বর হতে পারে আসলে এটি ভুল ধারণা গরমের সময় বাচ্চাদেরকে প্রতিদিন গোসল করাতে
হবে এতে করে তাদের শরীর অনেক ফ্রেশ এবং ভালো থাকবে।
৩। গরমের সময় যেহেতু বাচ্চারা বেশি বেশি ঘেমে যায় তাই খেয়াল রাখতে হবে ঘামগুলো
যেন শরীরে বসে না যায় তার আগেই মুছে ফেলতে হবে। কারণ ঘাম না মুছলে পরে সেখান
থেকে বাচ্চা সর্দি কাশি জ্বর এবং শরীরে কফ জমে যেতে পারে।
৪। গরমে বাচ্চাদের সবচেয়ে কমন যে সমস্যা সেটি হচ্ছে শরীরে ছোট ছোট গুটি গুটি
ঘামাচি বের হওয়া এই ঘামাচি থেকে বাচ্চাকে রক্ষা করার জন্য আপনি চাইলে বিভিন্ন
ঘামাচি পাউডার ব্যবহার করতে পারেন এতে করে আপনার বাচ্চার ঘামাচি ভালো হতে পারে।
৫। এবং বাচ্চাদের প্রতিদিন গোসলের পর অলিভ অয়েল তেল এবং বেবি লোশন পুরো শরীরে
মাখাবেন এতে করে গরমের সময় তাদের ত্বক অনেক বেশি সফট থাকবে।
তাই পরিশেষে বলা যায় যে আপনি যদি গরমে আপনার বাচ্চার ত্বক ভালো রাখতে চান তাহলে
আপনাকে উক্ত বিষয়গুলো মেনে চলতে হবে। এবং এখন যেহেতু গরমকাল চলে এসেছে তাই
চেষ্টা করবেন কোন প্রয়োজন না ছাড়া বাচ্চাকে ঘরের বাইরে বের না করা কারণ সূর্যের
তির্যক রশ্মি আপনার বাচ্চা ত্বকে কালো করে দিতে পারে এবং বাচ্চাদের বিভিন্ন রকম
সমস্যা দেখা দিতে পারে।
গরমে বাচ্চাদের জন্য কোন ক্রিম ভালো
অন্যান্য সময়ের চেয়ে গরমে বাচ্চাদের ত্বকের যত্ন একটু বেশি করে নিতে হয় কারণ
এই সময় অতিরিক্ত গরম পড়ার কারণে বাচ্চাদের ত্বকে রেশ, ঘামাচি ইত্যাদি সমস্যা
দেখা দেয়। তাই এ সকল সমস্যা থেকে বাচ্চাদেরকে বাঁচানোর জন্য গরমে বাচ্চাদের জন্য
কোন ক্রিম ভালো সে সম্পর্কে জানা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
কারণ অনেক বাবা-মা রয়েছে যারা বাজার থেকে যেকোনো ধরনের ক্রিম কিনে তাদের
বাচ্চাদের ব্যবহার করে থাকে যা পরবর্তীতে বাচ্চাদের শরীরে এবং ত্বকে নানা রকম
ক্ষতি হয়ে থাকে। তাই প্রত্যেক বাবা মায়ের উচিত প্রত্যেকটা ক্রিমের পিএইচ মান
এবং আরো অন্যান্য গুণাগুণ আছে কিনা সেটি দেখে নেওয়া।
আরো পড়ুনঃ গর্ভাবস্থায় কি কি সবজি খাওয়া যাবে
তাই আজকে আমরা এই আর্টিকেলের মাধ্যমে আপনাদেরকে জানাবো যে গরমে বাচ্চাদের
জন্য কোন কোন ক্রিম ভালো হবে।
জনসন মিল্ক এন্ড ড্রাই ক্রিমঃ এই ক্রিমটি প্রথমত একটি ডাক্তার
রিকোমেন্টট একটি ক্রিম এবং এই ক্রিমে রয়েছে হাইবো এলার্জি নিক অর্থাৎ কোন বাচ্চা
যদি এলার্জি অথবা রেশ সমস্যা থেকে থাকে সে ক্ষেত্রে এটি ব্যবহার করা যাবে।
এছাড়াও এই ক্রিমটি যেহেতু সাইন্স ল্যাবরেটরী দ্বারা পরীক্ষিত তাই এটিতে কোনরকম
সাইড ইফেক্ট নেই।
সেটাফিল বেবিঃ ছোট বাচ্চাদের জন্য সেটাফিল এই ক্রিমটার
গরমকালে অনেক ভালো কাজ করে। ছোট বাচ্চাদের সংবেদনশীল ত্বকের জন্য এটি অনেক
উপযুক্ত একটি ক্রিম। এবং এটিতে কোন প্রকার ছাড়াই নিঃসন্দেহে এটি ব্যবহার করা
যেতে পারে।
মুস্তেলাঃ মুস্তেলা এই এই ক্রিমটি ছোট বাচ্চাদের জন্য অনেক
ভালো একটি ক্রিম এই ক্রিমে রয়েছে হাইড্রেটিং যা সূর্যের তীব্র রশ্মি থেকে ত্বককে
সুরক্ষা করে এবং ছোট বাচ্চাদেরকে ডি হাইড্রেশন থেকে রক্ষা করে।
ময়েশ্চারাইজিং লোশনঃ এই ক্রিমটি ছোট বাচ্চাদের ত্বক প্রায় অনেকক্ষণ
ধরে আর্দ্র রাখবে। এই ক্রিমটিতে দুধ এবং এলোভেরা রয়েছে যা ছোট বাচ্চাদের ত্বকের
পুষ্টি চাহিদা পূরণ করে। এছাড়াও এটিতে রয়েছে গ্লিসারিনের উপাদান যা বাচ্চাদের
ত্বককে নরম এবং অনেক সফট করে।
হিমালয় হারবাল বেবি লোশনঃ হিমালয় হারবাল বেবি লোশনটি ল্যাব
দ্বারা পরীক্ষিত এটিতে রয়েছে এলমল অয়েল অলিভ অয়েল জয়তুন তেল ইত্যাদি যা
বাচ্চাদের ওকে অনেক নরম সতেজ এবং সফট করে। এছাড়াও এটি ব্যবহারের ফলে বাচ্চাদের
ত্বকের উজ্জ্বলতা অনেকটা বেড়ে যায়।
নবজাতকের ত্বকের যত্ন
গরমে বাচ্চাদের ত্বকের যত্ন নেওয়াটা যেমন গুরুত্বপূর্ণ তেমনি একজন নবজাতকের
ত্বকের যত্ন নেওয়াটাও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এক থেকে দুই মাসের বাচ্চাদেরকে
নবজাতক শিশু বলা হয়ে থাকে তাই একটি প্রাপ্তবয়স্ক ছোট বাচ্চার চেয়ে একজন
নবজাতকের একটু বেশি যত্ন নিতে হয়।
আর গরম কালে নবজাতক শিশুদের একটি বেশি যত্ন নিতে হয় কারণ এই সময়
তাপমাত্রা বেশি থাকার কারণে তাদের ত্বকে বিভিন্ন রকম সমস্যা দেখা দিতে পারে যেমন
ঘামাচি রেশ ইত্যাদি। তাই আজকে আমরা আপনাদেরকে বলবো যে কিভাবে আপনারা গরমকালে একটি
নবজাতক শিশুর ত্বকের যত্ন নিবেন।
১। অতিরিক্ত গরমের কারণে নবজাতক শিশুর তবে রেশ এবং ঘামাচি হয়ে থাকে আর এগুলো
থেকে শিশুকে রক্ষা করার জন্য সব সময় ঢিলেঢালা এবং সুতির নরম পোশাক পড়াতে হবে
এতে করে তারা অতিরিক্ত গরম থেকে রক্ষা পেতে পারবে।
২। এবং সব সময় চেষ্টা করবেন নবজাতক শিশুকে একটি সহনশীল তাপমাত্রায় রাখা। আপনি
যদি শিশুকে এসিতে রাখেন তাহলে এসির তাপমাত্রা ২৬ ডিগ্রির মধ্যে রাখবেন এতে করে
শিশু ভালো থাকবে।
৩। এবং শিশুর শরীরে যেকোনো ধরনের ক্রিম অথবা পাউডার ব্যবহার করার পূর্বে ভালোভাবে
যাচাই-বাছাই করে তারপরে ব্যবহার করবেন। এছাড়াও আপনি চাইলে ডাক্তারের পরামর্শ
অনুযায়ী কোন ক্রিম অথবা পাউডার ব্যবহার করতে পারেন।
৪। এবং নবজাতক বাচ্চার এক দুই মাস হওয়ার পর তাকে প্রতিদিন গোসল করাবেন এ সময়
খেয়াল রাখবেন গোসলের পানি যেন কুসুম কুসুম গরম পানি হয় কারণ নবজাতক শিশুদের
ত্বক অনেক বেশি সফট হয় তাই আপনি যদি তাকে ঠান্ডা পানি দিয়ে গোসল করান তাহলে তার
তাকে অনেক রকম সমস্যা দেখা দিতে পারে।
তাই পরিশেষে বলা যায় যে আপনি যদি এই গরমের সময় আপনার নবজাতক শিশুকে সুস্থ রাখতে
চান এবং তার ত্বকে কমল এবং সফট রাখতে চান তাহলে উপরে থাকা সকল নিয়মকানুন আপনাকে
মেনে চলতে হবে। কারণ একজন প্রাপ্তবয়স্ক ছোট বাচ্চার যে পরিমাণ যত্ন করতে হয়
একজন নবজাতক শিশুর তার চেয়ে দ্বিগুণ যত্ন করতে হয়।
গরমে দুই মাসের শিশুর যত্ন
অন্যান্য সিজনের চেয়ে গরমে বাচ্চাদের ত্বকের যত্ন একটু বেশি করে করতে হয় কারণ
এই বিশেষ করে ছোট নবজাতক শিশুদের অনেক রকম সমস্যা দেখা দেয়। গরমে যেহেতু
তাপমাত্রা অনেক বেশি থাকে তাই ছোট শিশুদের এই সময় ঘামাচি এবং রেশ ইত্যাদি হয়ে
থাকে।
এছাড়াও ছোট নবজাতক শিশুদের যেহেতু ছয় মাস পর্যন্ত পানি খাওয়া বারণ যার
ফলে এই সময় তাদের শরীরে পানি শূন্যতা দেখা দিতে পারে। এবং যার ফলে অনেক বাবা-মা
খুব চিন্তায় থাকে তাদের সন্তানকে নিয়ে যে কিভাবে এই গরমে তাদের সন্তানের যত্ন
করবে।
তাই আজকে আমরা এই আর্টিকেলের মাধ্যমে তাদেরকে জানাবো যে গরমে দুই মাসের
শিশুর যত্ন কিভাবে করতে হয়।
১। যেহেতু নবজাতক শিশুরা ছয় মাসের আগে পানি খেতে পারে না তাই তাদেরকে বেশি বেশি
করে মায়ের দুধ পান করাতে হবে। এতে করে গরমের সময় শিশু ডিহাইড্রেশন থেকে রক্ষা
পাবে।
২। এবং নবজাতক শিশুকে সকালের রোদে নিয়ে বসতে হবে কারণ সকালের রোদে ভিটামিন ডি
থাকে যা নবজাতকের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু এটি ছয়টা থেকে সাতটার মধ্যেই
করতে হবে কারণ তারপরে রোদ উঠে যাবে এবং শিশুর ক্ষতি হবে।
৩। এবং গরমে শিশু অতিরিক্ত ঘামতে পারে তাই যতবার ঘামবে শুকনো একটি কাপড় দিয়ে
ঘামটি মুছে ফেলতে হবে কারণ ঘাম বসে গেলে শিশুর সর্দি কাশি এবং জ্বর হতে পারে।
৪। শিশুকে প্রতিদিন গোসল করাতে হবে এবং গোসলের পর অলিভ অয়েল তেল অথবা বেবি লোশন
দিয়ে পুরো শরীর ভালো করে মালিশ করতে হবে এতে করে তার ত্বক অনেক বেশি কোমল এবং
সফট থাকবে।
৫। এবং সবসময় চেষ্টা করবেন শিশুকে স্বাভাবিক তাপমাত্রার মধ্যে রাখা এবং শিশুকে
যদি এসিতে রাখেন তাহলে এসে তাপমাত্রাটাও স্বাভাবিক মাত্রায় রাখবেন কারণ এসির
টেম্পারেচার বেশি কমিয়ে দিলে শিশুর ঠান্ডা লেগে যেতে।
৬। গরমের শিশুকে সবসময় নরম এবং পাতলা সুতি কাপড় পরাবেন এতে করে শিশুর শরীরে এবং
ঘামাচি হওয়া থেকে রক্ষা পাবে।
তাই পরিশেষে বলা যায় যে আপনি যদি এভাবে আপনার নবজাতকের যত্ন করতে পারেন তাহলে এই
গরমেও আপনি আপনার নবজাতককে সুস্থ রাখতে পারবেন।
লেখকের মন্তব্য
প্রিয় পাঠক আপনাদের যদি গরমে ছোট নবজাতক এবং ছোট বাচ্চাদের ত্বকের যত্ন
সম্পর্কিত আমাদের এই আর্টিকেলটি ভালো লেগে থাকে তাহলে আমাদের আর্টিকেলটিতে একটি
লাইক এবং কমেন্ট করুন। এবং এ ধরনের সকল রকম তথ্য পেতে আমাদের ওয়েবসাইটে সাথেই
যুক্ত থাকুন।
rsfahim it নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url