গর্ভাবস্থায় কি কি মাছ খাওয়া যাবে জানুন
গর্ভাবস্থায় কি কি মাছ খাওয়া যাবে এবং গর্ভাবস্থায় কি কি সবজি খাওয়া যাবে
আপনি যদি এ সম্পর্কে না জেনে থাকেন তাহলে আমাদের এই আর্টিকেলটি আপনার জন্য। কারণ
আমরা এই আর্টিকেলে একজন গর্ভবতী নারীর সকল রকম খাবার তালিকা সম্পর্কে আলোচনা
করেছি।
তাই আপনি যদি একজন গর্ভবতী হয়ে থাকেন তাহলে আমাদের এই আর্টিকেলটি সম্পূর্ণটা
একবার পড়ুন আশা করি আপনি উপকৃত হবেন।
সূচিপএঃ গর্ভাবস্থায় কি কি মাছ খাওয়া যাবে
গর্ভাবস্থায় কি কি মাছ খাওয়া যাবে
মাছ হলো একটি পুষ্টিকর ও সুস্বাদু একটি খাবার তাই গর্ভাবস্থায় কি কি মাছ খাওয়া
যাবে সে সম্পর্কে একজন গর্ভবতী নারীর জানা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। একটি গর্ভস্থ
মহিলা জন্য মাছ অনেক পুষ্টিকর ও উপকারী। মাছ হল চরবিহীন প্রোটিনের উৎস এতে করে
শিশুর চুল হাত ত্বক এবং মাংসপেশির জন্য কোষ গঠনে সহায়তা করে। তাছাড়া গর্ভের
বাচ্চার জন্য ডি এইচ এ ওমেগা থ্রি ফ্যাক্টিয়া সিড খুব গুরুত্বপূর্ণ যা সামুদ্রিক
মাছ থেকে পাওয়া যায়।
তিন মাস পর বাচ্চার ওজন তাড়াতাড়ি বাড়তে থাকে যার ফলে এই সময় সামুদ্রিক মাছ
খেলে বাচ্চা মেধা বিকাশে সাহায্য করে। আপনার হয়তোবা অনেকেই জানেন না যে
গর্ভাবস্থায় কি কি মাছ খেতে হয়। তাই আমরা আজকে আপনাদেরকে জানাবো যে
গর্ভাবস্থায় আপনারা কি কি মাছ খাবেন।
গর্ভবতী অবস্থায় যে মাছি খান মাছটি ভালোভাবে রান্না হয়েছে কিনা পরিষ্কার করা
হয়েছে কিনা এ বিষয়ে খেয়াল রাখতে হবে। গর্ভাবস্থায় বিভিন্ন মাছ খাওয়া যেতে
পারে যেমন চিংড়ি মাছ, রুই মাছ, মাগুর মাছ, বোয়াল মাছ, কাতল, ইত্যাদি। এসব মাছ
সাইজে বড় হয় এগুলোর মধ্যে অনেক পরিমান তেল থাকে যা প্রচুর প্রোটিনের সমৃদ্ধ।
এটি খেলে বাচ্চার শরীরের হাড় বৃদ্ধির পায়। এছাড়া ছোট মাছের মধ্যে রয়েছে জিওল,
আপ দা, টেংরা, শিং ইত্যাদি বিভিন্ন রকম মাছ। এই সময় ডাক্তাররা গর্ভবতীকে এসব মাছ
খাওয়ার জন্য উৎসাহিত করে থাকে। এসব মাছ গর্ভবতীদের মুখের রুচি বাড়ায় এবং তাদের
শরীরে প্রচুর পরিমাণ আইরন ভিটামিনের যোগান দেয়।
গর্ভাবস্থায় কি কি সবজি খাওয়া যাবে
গর্ভাবস্থায় কি কি মাছ খাওয়া যাবে এ সম্পর্কে প্রতিটা মেয়ের সচেতন থাকতে হবে
কারণ এই সময়টিতে প্রতিটা মেয়ের শরীলে বাড়তি পুষ্টির প্রয়োজন হয়ে থাকে
আর তাই মাছে প্রচুর পরিমাণ পুষ্টি থাকায় এটি তাদের শরীরের জন্য অনেক
গুরুত্বপূর্ণ।
এবং এর সাথে বিভিন্ন প্রকার সবজি খাওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কারণ
সবজিতে রয়েছে আইরন এবং ভিটামিন যা গর্ভাবস্থায় প্রতিটা নারীর জন্যই অত্যন্ত
গুরুত্বপূর্ণ।
বিশেষ করে গর্ভাবস্থায় কি কি সবজি খাওয়া যাবে তা হয়তোবা অনেকেই জানেনা। তাই
আমরা আজ আলোচনা করব যে একজন গর্ভবতী অবস্থায় কি কি সবজি খেতে পারবে বা খাওয়া
উচিত।
১। গর্ভাবস্থায় যে সবজিটি খাওয়ার সবচাইতে ভালো সেটি হলো মিষ্টি আলু। কারণ
মিষ্টি আলুতে রয়েছে ভিটামিন এ ভিটামিন বি এবং ভিটামিন সি যা খুব সহজে হজম হয়
এবং পুষ্টিে উপাদানে অনেক বড় অবদান রাখে।
২। এছাড়াও গর্ভাবস্থায় প্রচুর পরিমাণে মটরশুটি খেতে পারেন এতে প্রচুর পরিমাণে
রয়েছে ভিটামিন সি এবং ভিটামিন কে এবং প্রচুর পরিমাণে ফাইবার রয়েছে।
৩। পাকা টাটকা বিষমুক্ত টমেটো গর্ভাবস্থায় মায়ের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ। এই
টমেটোতে রয়েছে ভিটামিন সি ভিটামিন কে এবং বায়োডিন। খুব কম সবজি রয়েছে যার
মধ্যে সরাসরি বায়োডিন থাকে তার মধ্যে টমেটো একটি। তাই গর্ভাবস্থায় প্রতিদিন
একটি করে টাটকা বিষমুক্ত টমেটো খাওয়া উচিত।
৪। গর্ভাবস্থায় ধনেপাতা অনেক গুরুত্বপূর্ণ এতে রয়েছে ভিটামিন ই প্রোটিন এবং
রাইবোফ্লাইবিন। তাই গর্ব অবস্থায় বিভিন্ন রকম সালাত এবং ভর্তার সাথে এই ধনেপাতা
অনেক উপকারী।
৫। এবং আপনি চাইলে গর্ভবতী অবস্থায় সবুজ ফুলকপি খেতে পারেন। অনেক হয়তোবা সবুজ
ফুলকপি চেনেন না এটি ফুলকপিরে একটি জাত। এই সবজিতে রয়েছে ভিটামিন সি ভিটামিন কে
এর মত বিভিন্ন রকম পুষ্টিগুণ উপাদান যা গর্ভবতীর জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ।
৬। আপনি গর্ভবতী অবস্থায় ক্যাপসিকাম খেতে পারেন। এটি দেখতে প্রায় টমেটোর মত
এটিতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন বিশেষ করে ডাইটেরি ফাইবার বেশি থাকে।
৭। গর্ভবতী অবস্থায় প্রচুর পরিমাণে সবুজ শাক খাওয়া প্রয়োজন। কারণ গর্ভবতী
অবস্থায় একজন গর্ভবতী মায়ের শরীরে প্রচুর পরিমাণ আয়রন এবং ভিটামিনের প্রয়োজন
হয় যা এই সবুজ শাকে থাকে।
৮। কলার মোচা একজন গর্ভবতী মায়ের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ কারণ কলার মোচাতে
প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকে যা গর্ভবতী মায়ের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ।
গর্ভবতী মায়ের খাবার তালিকা
ইতিমধ্যে আপনারা গর্ভাবস্থায় কি কি মাছ খাওয়া যাবে এই সম্পর্কে জেনেছেন এবার
আমরা আপনাদেরকে গর্ভবতী মায়ের সম্পন্ন খাবার তালিকা সম্পর্কে জানাবো।
প্রত্যেকটি গর্ভবতী মায়েই চেষ্টা করে তার সন্তানের জন্য নিজেকে ভালো রাখতে।
যার ফলে এই সময়টাতে প্রত্যেকটি গর্ভবতী মা চেষ্টা করে ভালোভাবে থাকতে এবং
ভালোভাবে চলাফেরা করতে। তাই এই সময়টিতে একজন গর্ভবতী মায়ের খাবার তালিকা
তৈরি করতে হবে।
কারণ আমরা সবাই জানি যে একজন গর্ভবতী অবস্থায় খাবারের দিকটা বিশেষভাবে খেয়াল
রাখতে হবে। কারণ এই সময় আগের তুলনায় তার বেশি খাবারের প্রয়োজন হবে কারণ তার
সাথে বাচ্চারও খাবার দরকার হয়। ডাক্তাররা একজন গর্ভবতী মায়ের গর্ভধারণ থেকে
শুরু করে বাচ্চা হওয়ার আগ পর্যন্ত তিনটি ভাগে ভাগ করেন।
যেমন প্রথম তিন মাস, দ্বিতীয় তিন মাস, এবং তৃতীয় তিন মাস। আর এভাবেই একজন
গর্ভবতী মায়ের খাবারের তালিকা করা হয়ে থাকে। তাই আমরা আজকে আপনাদেরকে জানাবো যে
একজন গর্ভবতী মায়ের কেমন খাবার তালিকা হওয়া উচিত।গর্ভবতী একজন মা এই সময়
প্রায় সব রকম খাবার সে খেতে পারবে। প্রথম তিন মাস একজন গর্ভবতী মায়ের তেমন কোন
শারীরিক পরিবর্তন দেখা যায় না।
তাই এই সময় তেমন কোন অতিরিক্ত খাবারের প্রয়োজন হয় না। কিন্তু এই সময় মা যাতে
পুষ্টিকর এবং প্রোটিন জাতীয় খাবার বেশি খায়। এতে করে বাচ্চার সুনির্দিষ্ট
শারীরিক গঠন তৈরি হতে সহায়তা করে। এবং দ্বিতীয় তিন মাসে গর্ভবতী মায়ের ওজন
আগের চেয়ে বেশ কিছুটা বেড়ে যায়। যার ফলে এই সময় খাবারের চাহিদাটাও অনেক অংশ
বাড়ে।
এই সময় একজন গর্ভবতী মায়ের কিছুক্ষণ পর পর ক্ষুধা লাগে এবং বাথরুম হয়। এ সময়
তার খাদ্য তালিকায় বিভিন্ন প্রকার সবজি মাছ মাংস সহ বিভিন্ন প্রকার খাবার রাখা
যেতে পারে। বিশেষ করে লাল শাক সবুজ শাক আয়রন জাতীয় খাবার রাখতে হবে। তৃতীয় তিন
মাসে মায়ের ওজন আরো বেশি বৃদ্ধি পায়।
এবং এই সময় একজন গর্ভবতী মায়ের খাদ্য তালিকায় দুধ ডিম সহ যত রকম পুষ্টিকর
খাবার রয়েছে সব যুক্ত করতে হবে। সবসময় মনে রাখতে হবে এই সময় কোন খাবারই বাদ
দেওয়া যাবে না যা খাওয়া যাবে তাই লাভ। আর এভাবেই একজন গর্ভবতী মায়ের গর্ভস্থ
সময় খাবার খেতে হবে।
গর্ভবতী মায়ের নিষিদ্ধ খাবার তালিকা
এতক্ষণ আপনারা গর্ভাবস্থায় কি কি মাছ খাওয়া যাবে এবং কি কি সবজি খাওয়া যাবে এই
সম্পর্কে জেনেছেন এবার আমরা আপনাদেরকে গর্ভবতী মায়ের নিষিদ্ধ খাবার তালিকা
সম্পর্কে জানাবো। প্রতিটি মানুষেরই সময় মতো পর্যপ্ত পরিমান খাবার খায়ার দরকার
বিশেষ করে গর্ভাবস্থায় এটা আরো বেশি প্রয়োজন।
গর্ভাবস্থায় খেয়াল রাখতে হবে গর্ভবতী মায়ের খাবারের মাঝে যেন যথেষ্ট
পরিমাণ পুষ্টি থাকে। কিন্তু এমন কোন খাবার গর্ভবতী মাকে দেওয়া যাবে না যাতে
মায়ের এবং বাচ্চার উভয়েরই ক্ষতি হয়।
- চা অথবা কফি
চা কফি হল এক ধরনের ক্যাফিন জাতীয় খাবার। প্রেগনেন্সিতে অনেকেই রয়েছে যারা
ক্লান্তি দূর করার জন্য চা অথবা কফি খেয়ে থাকে। কিন্তু ডাক্তারদের মতে গর্ভবতী
অবস্থায় ২০০ মিলির বেশি ক্যাফিন জাতীয় খাবার বেশি গ্রহণ করা যাবে না।
২০০ মিলি বলতে আমরা বুঝি দুই কাপ চা এবং এক কাপ কফি। কিন্তু কোন গর্ভবতী মা যদি
এর চেয়ে বেশি চাও অথবা কফি খায় তাহলে বাচ্চার ওজন কমে যাওয়া এবং পেটে প্রচন্ড
পরিমাণ ব্যথা হওয়া ইত্যাদি বিভিন্ন সমস্যা হতে পারে।
-
অ্যালকোহল বা মদ্যপান
প্রেগনেন্সিতে কোনরকম মধ্যপান অথবা অ্যালকোহল গ্রহণ করা যাবে না। এক্ষেত্রে আপনার
বাচ্চার এভশন হতে পারে এবং কম ওজনের বাচ্চা হতে পারে।
এছাড়াও এটি খাওয়ার ফলে সবচেয়ে বড় যে সমস্যাটি দেখা দেয় সেটি হল বাচ্চার সঠিক
ফেস ডেভলপমেন্ট সঠিক গ্রোথ এবং বাচ্চার বিহেভিয়ার ইত্যাদির ত্রুটি দেখা দিতে
পারে। এর জন্য প্রেগনেন্সির সময় কোনরকম অ্যালকোহল অথবা মদ্যপান করা যাবে না।
- আনারস
পেগনেন্সির সময় ডাক্তাররা আনারস খাওয়া থেকে বিরত থাকতে বলে। কারণ আনারসে এক
ধরনের এনজাইম থাকে যার ফলে গর্ভবতী মায়ের খুব তাড়াতাড়ি পেটে ব্যথা উঠতে পারে
এবং বাচ্চার নষ্ট হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। যার ফলে এই সময়টিতে আনারস খাওয়া
থেকে বিরত থাকতে হবে।
- কাঁচা ডিম
অনেকে বলে গর্ভবতী অবস্থায় প্রতিদিন সকাল বেলায় একটি করে কাঁচা ডিম অথবা অর্ধ
সিদ্ধ ডিম খেলে নাকি বাচ্চা অনেক পুষ্টি পায়। কিন্তু এটি আসলে একটি প্রচলিত ভুল
ধারণা। কাঁচা ডিম খাওয়ার ফলে অনেক সময় এটির মধ্যে থাকা।
ব্যাকটেরিয়ার ফলে গর্ভবতী মায়ের গ্যাসটি সহ বিভিন্ন ধরনের সমস্যা হতে পারে।
হ্যাঁ যদি ডিমটি ভালোভাবে ভাজি করা হয় অথবা রান্না করা হয় তাহলে খেতে পারে।
কিন্তু একেবারে কাঁচা ডিম বা অর্ধ সিদ্ধ ডিম খাওয়া ঠিক নয়।
লেখকের মন্তব্য
আপনি যদি একজন গর্ভবতী হয়ে থাকেন। এবং আপনি যদি আমাদের এই আর্টিকেলটি পড়ে বুঝতে
পারেন যে গর্ভবতী অবস্থায় কি কি খাবার খাওয়া দরকার তাহলে এই আর্টিকেলটি আপনার
মত আরো যারা গর্ভবতী আছে তাদেরকে শেয়ার করুন।
rsfahim it নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url