গার্মেন্টস কাপড়ের ব্যবসা শুরু করার সঠিক নিয়ম
আপনি কি গার্মেন্টস কাপড়ের ব্যবসা শুরু করার জন্য একটি ছোট গার্মেন্টস কারখানা
প্রতিষ্ঠিত করতে চাইছেন? কিন্তু কিভাবে করবেন তা বুঝতে পারছেন না। তাহলে আমাদের
আজকের এই আর্টিকেলটি আপনার জন্য এই আর্টিকেলে আমরা এ সকল বিষয় সম্পর্কে
বিস্তারিত আলোচনা করেছি।
তাই আপনি যদি পুরো আর্টিকেলটি পড়েন তাহলে আপনি বুঝতে পারবেন যে কিভাবে একটি
গার্মেন্টস কাপড়ের ব্যবসা করতে হয়।
সূচিপত্রঃ গার্মেন্টস কাপড়ের ব্যবসা শুরু করার সঠিক নিয়ম
গার্মেন্টস কাপড়ের ব্যবসা
আপনি যদি গার্মেন্টস কাপড়ের ব্যবসা শুরু করতে চান তাহলে আপনাকে অবশ্যই এটি
সম্পর্কে সম্পূর্ণ একটি ধারণা থাকতে হবে। গার্মেন্টস বলতে বোঝায় যেখানে কাপড়
উৎপাদন করা হয় আসলে গার্মেন্টসের কাপড়ের ব্যবসা আপনি দুই ভাবে করতে পারবেন।
আরো পড়ুনঃ এক্সপোর্ট কাপড়ের ব্যবস
একটি হচ্ছে নিজের গার্মেন্টস ফ্যাক্টরি বা কারখানা তৈরি করে অথবা
গার্মেন্টস থেকে পাইকারি দামে কাপড় কিনে সেটি বাজারের দামে কৃতাদের কাছে বিক্রি
করে। কিন্তু বর্তমানে বাংলাদেশে প্রায় অনেক মানুষই এই গার্মেন্টসের ব্যবসা করে
আজ মাসে লাখ লাখ টাকা ইনকাম করছে।
বাংলাদেশে প্রায় ৭০ পার্সেন্ট বৈদেশিক মুদ্রা আসে পোশাক শিল্প থেকে তাই
আপনি যদি গার্মেন্টসের ব্যবসা শুরু করেন তাহলে আপনি খুব কম সময়ে লাভবান হতে
পারবেন। কিন্তু তাই বলে যদি আপনি কোন কিছু না জেনে হুটহাট করে এ ব্যবসাটি নেমে
যান তাহলে আপনি এখান থেকে ভালো কিছু করতে পারবেন না তাই আপনার প্রথমে প্রয়োজন
অভিজ্ঞতা।
অভিজ্ঞতা অর্জনের জন্য আপনি প্রথমে বড় বড় গার্মেন্টস ব্যবসায়ীদের সাথে
পরামর্শ করতে পারেন কারণ তারা এ বিষয়ে অনেক অভিজ্ঞ। এছাড়া আপনি চাইলে যে কোন
গার্মেন্টস ফ্যাক্টরি অথবা কারখানায় কয়েকদিন চাকরি ও করতে পারেন এতে করেও আপনার
এই বিষয়ে ভালো একটি অভিজ্ঞতা হবে।
এবং আপনি বুঝতে পারবেন যে একটি গার্মেন্টস ফ্যাক্টরি দাঁড় করাতে হলে কি কি
প্রয়োজন হয়। কারণ একটি গার্মেন্টস ফ্যাক্টরি দাঁড় করাতে গেলে অনেকগুলো বিষয়
সম্পর্কে জ্ঞান থাকা দরকার বিশেষ করে কাপড় তৈরির কাঁচামাল কোথায় ভালো পাওয়া
যায় এবং কিভাবে বিদেশি বায়ারদের সাথে কথা বলতে হয় ইত্যাদি।
এছাড়া আপনি যদি চান রেডিমেড গার্মেন্টস ব্যবসা করতে সেটিও করতে পারবেন।
রেডিমেড গার্মেন্টস ব্যবসায় আপনাকে কোনরকম ফ্যাক্টরি অথবা কারখানা তৈরি করতে হবে
না আপনি স্বল্পমূল্যে গার্মেন্টস ফ্যাক্টরি থেকে কাপড় সংগ্রহ করবেন এবং সেগুলো
বেশি দামে ক্রেতাদের কাছে সরবরাহ করবেন।
বর্তমানে এই ব্যবসাটি অনেক লাভজনক কিন্তু এখান থেকে আপনি ইনকাম করতে পারবেন
এর চেয়ে দ্বিগুণ ইনকাম আপনি গার্মেন্টসে ব্যবসা থেকে ইনকাম করতে পারবেন। বর্তমান
বাংলাদেশের ঢাকা এবং নারায়ণগঞ্জে অনেকগুলো পোশাক শিল্প কারখানা গড়ে উঠেছে এবং
এগুলোতে প্রচুর পরিমাণ নারী শ্রমিক কাজ করে।
এবং এইসব পোশাক শিল্পের মালিকরা প্রতিমাসে লাখ লাখ টাকা করে বৈদেশিক মুদ্রা
অর্জন করছে। তাই পরিশেষে বলা যায় যে আপনি যদি গার্মেন্টসের এবং এবং রেডিমেট
কাপড়ের ব্যবসা করতে চান তাহলে আপনাকে এই সকল বিষয়গুলো অবশ্যই মাথায় রাখতে হবে।
ছোট গার্মেন্টস কারখানা
আপনার যদি একটি ছোট গার্মেন্টস কারখানা দেওয়ার ইচ্ছা থাকে তাহলে আপনাকে অবশ্যই
গার্মেন্টস কাপড়ের ব্যবসা সম্পর্কে জানতে হবে। কারণ আপনি যদি গার্মেন্টস ছোট
একটি কারখানাও তৈরি করতে যান তারপরও আপনাকে এই সকল বিষয় সম্পর্কে জানতে হবে।
আপনি যদি ছোট আকারের একটি গার্মেন্টস কারখানা দিতে চান তাহলে আপনি কম খরচের
মধ্যেই করতে পারবেন।
এছাড়াও আপনি যদি চান তাহলে আপনার বাসাতেই প্রথমে ছোট আকারে শুরু করতে
পারেন। আপনার বাসাতে যদি দুই একটা রুম থাকে সেখানে সেখানে আপনি দুই একটা টিশার্ট
তৈরির মেশিন দিয়ে শুরু করতে পারেন। টি-শার্ট তৈরিতে তেমন কোন বড় বড় মেশিনের
প্রয়োজন হয় না আপনার কাছে যদি তিনটি মেশিন থাকে তাহলে আপনি একটি টি শার্ট তৈরি
করে ফেলতে পারবেন।
আরো পড়ুনঃ অনলাইনে কাপড়ের ব্যবসা করার নিয়ম
আসলে গার্মেন্টস ছোট না বড় এটি বড় বিষয় না বড় বিষয় হচ্ছে আপনার কাজের
দক্ষতা কেমন এবং আপনি সে দক্ষতা অনুযায়ী কেমন অর্ডার পারছেন এবং কে তাদেরকে
সন্তুষ্ট করতে পারছেন। বর্তমানে প্রায় অনেক মানুষই এইভাবে করে ছোট পরিসরে একটি
গার্মেন্টস কারখানা তৈরি করছে এবং মাসে প্রায় লাখ টাকার মত ইনকাম করছে।
প্রথম বাংলাদেশের ঢাকা এবং নারায়ণগঞ্জে অনেকগুলো ছোট ছোট গার্মেন্টস
কারখানা রয়েছে যেগুলোতে কাপড় তৈরি খুব কম মেশিন রয়েছে এবং সেখানে শ্রমিক
সংখ্যাও অনেক কম। তাই পরিশেষে বলা যায় যে আপনি যদি পরিসরে একটি গার্মেন্টস
কারখানা তৈরি করতে চান তাহলে আপনাকে সর্বপ্রথম এই কাজে দক্ষ হতে হবে।
গার্মেন্টস ব্যবসার আইডিয়া
গার্মেন্টস কাপড়ের ব্যবসা সম্পর্কিত সকল বিষয়ে আমরা উপরের অংশে বিস্তারিত
আলোচনা করেছি। তাই এবার আমরা কিছু গার্মেন্টস ব্যবসার আইডিয়া সম্পর্কে আপনাদেরকে
জানাবো যাতে করে আপনাদের ভবিষ্যতে যেকোন গার্মেন্টস কারখানা করে ব্যবসা করতে কোন
অসুবিধা না হয়।
- ট্রেড লাইসেন্স বা সরকারি অনুমোদন
যে কোন ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান তৈরি করার জন্য আপনাকে প্রথমে সরকারি ভাবে এটির
অনুমোদন বা ট্রেড লাইসেন্স তৈরি করতে হবে। আপনি যখন একটি পোশাক শিল্প স্থাপন
করবেন তখন শেষ শিল্প কারখানা স্থাপন করার জন্য সরকারের অনুমোদন গ্রহণ করতে হবে।
আরো পড়ুনঃ ডিজিটাল মার্কেটিং এর ভবিষ্যৎ
সরকার যদি আপনাকে শিল্প কারখানাটি করার অনুমোদন দেয় তাহলে আপনি শিল্প
কারখানা বা গার্মেন্টস স্থাপন করতে পারবেন। এছাড়াও গার্মেন্টস কারখানা স্থাপন
করার জন্য আপনি যে জমি ক্রয় করবেন সেটি তো অনেক আইনগত বিষয় রয়েছে।
- দক্ষ শ্রমিক
আপনি যদি গার্মেন্টসের ব্যবসায় সফল হতে চান তাহলে আপনাকে অবশ্যই ভালো এবং দক্ষ
শ্রমিকের প্রয়োজন হবে। কারণ একটি গার্মেন্টস কারখানায় যেহেতু কাপড় তৈরি করা
এবং একটি কাপড় তৈরি করতে অনেক অভিজ্ঞতা এবং দক্ষতা প্রয়োজন হয় তাই এ কাজটি
করতে একজন ভালো শ্রমিক থাকা অনেক প্রয়োজনীয়। তাই সবসময় চেষ্টা করবেন ভালো এবং
দক্ষ শ্রমিক রাখা।
- ডিজিটাল মার্কেটিং এর গুরুত্ব
কাপড়ের বা গার্মেন্টসের ব্যবসা করার জন্য আপনাকে ডিজিটাল মার্কেটিং এর উপর অনেক
গুরুত্ব দিতে হবে। কারণ আপনি যখন অনলাইনের মাধ্যমে বিদেশী ক্রেতাদের কাছে পণ্য
বিক্রি করতে যাবেন তখন আপনাকে ডিজিটাল মার্কেটিং এর সাহায্য নিতে হবে।
আর আপনি যদি ডিজিটাল মার্কেটিং এ একজন অভিজ্ঞ ব্যক্তি হন তাহলে আপনি
গার্মেন্টসের ব্যবসা করে মাসে লাখ টাকার উপরে ইনকাম করতে পারবেন। তাই
গার্মেন্টসের ব্যবসাতে ডিজিটাল মার্কেটিং এর গুরুত্ব অনেক।
গার্মেন্টস ব্যবসা করতে কত টাকা লাগে
গার্মেন্টস কাপড়ের ব্যবসা সম্পর্কে আমরা ইতিমধ্যে বিস্তারিত আলোচনা করেছি তাই
এবার আমরা আলোচনা করব যে গার্মেন্টস ব্যবসা করতে কত টাকা লাগে। বর্তমানে প্রতিটা
মানুষই চাই যে সে কোটি কোটি টাকার মালিক হবে কিন্তু সেটি কয়জনই বা পারে।
আপনি যদি মাসে লাখ টাকার উপরে ইনকাম করতে চান এবং ভবিষ্যতে কোটি কোটি টাকার
মালিক হতে চান তাহলে আপনার জন্য সবচেয়ে ভালো একটি ব্যবসা হচ্ছে একটি গার্মেন্টস
ফ্যাক্টরি দিয়ে সেখানে কাপড়ের ব্যবসা করা।
আরো পড়ুনঃ ডিজিটাল মার্কেটিং এ আয় কেমন
বর্তমানে বাংলাদেশের প্রায় অনেকগুলো গার্মেন্টস ফ্যাক্টরি রয়েছে। আপনি
যদি একটি গার্মেন্টস ফ্যাক্টরি করতে চান তাহলে আপনার সর্বনিম্ন ৭ থেকে ৮ কোটি
টাকা খরচ হতে পারে এবং আপনি যদি আরো বড় আকারে এটি করতে চান তাহলে 60 থেকে 70
কোটি টাকা খরচ হতে পারে।
আপনি যেহেতু প্রথম অবস্থায় এই ব্যবসাটি শুরু করবেন তাই আপনার উচিত হবে
প্রথমে ছোট পরিসরে এটি শুরু করা আপনি চাইলে প্রথম অবস্থায় একটি বড় হল রুম ভাড়া
করতে পারেন এবং এর মধ্যে আপনি আপনার কার্যক্রম চালাতে পারেন। পরবর্তীতে আপনি যখন
এটি থেকে ভালো পরিমাণ টাকা ইনকাম করবেন তখন আপনি বড় পরিসরে করতে পারেন।
লেখকের মন্তব্য
প্রিয় পাঠক আমাদের আর্টিকেলের আজকের আলোচনার বিষয়বস্তু ছিল যে কিভাবে একটি
গার্মেন্টস তৈরি করে সেখানে কাপড়ের ব্যবসা করা যায়। এবং এই সম্পর্কে উপরের অংশে
আমরা বিস্তারিতভাবে আলোচনা করেছি।
তাই আপনি যদি আমাদের আর্টিকেলটি পড়ে উপকৃত হয়ে থাকেন তাহলে আর্টিকেলটিতে
অবশ্যই একটি লাইক এবং কমেন্ট করুন। এবং এ ধরনের সকল তথ্য পেতে আমাদের ওয়েবসাইটের
সাথে যুক্ত থাকুন।
rsfahim it নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url