প্রসাবে জ্বালাপোড়া কিসের লক্ষণ-প্রস্রাবে জ্বালাপোড়া কমানোর উপায়
আপনারা যদি প্রসাবে জ্বালাপোড়া কিসের লক্ষণ সম্পর্কে জানতে চান তাহলে আমাদের এই
আর্টিকেলটি আপনার জন্য। কারণ আমাদের এই আর্টিকেলে এটি ছাড়াও প্রসাবে জ্বালাপোড়া
ঘরোয়া চিকিৎসা সম্পর্কেও আলোচনা করা হয়েছে।
তাই আপনি যদি পুরো আর্টিকেলটি একবার পড়েন তাহলে বুঝতে পারবেন যে প্রসাবে
জ্বালাপোড়া কিসের লক্ষণ।
সূচিপত্রঃ প্রসাবে জ্বালাপোড়া কিসের লক্ষণ-প্রস্রাবে জ্বালাপোড়া কমানোর উপায়
প্রসাবে জ্বালাপোড়া কিসের লক্ষণ
প্রসাবে জ্বালাপোড়া কিসের লক্ষণ এটি নিয়ে অনেকেই চিন্তিত থাকে। প্রস্রাবে
জ্বালাপোড়া বলতে প্রস্রাবের সময় যৌনাঙ্গীতে যে ব্যথা অনুভব হয় তাকেই প্রস্রাবে
জ্বালাপোড়া বলা হয়ে থাকে। বর্তমানে এই সমস্যাটি প্রতিটি নারী-পুরুষে মধ্যেই
দেখা যায় প্রসাবে জ্বালাপোড়া সাধারণ কোনো কারণে হতে পারে আবার বড় কোন রোগের
উপসর্গ এটি হতে পারে।
আরো পড়ুনঃ গরমে প্রস্রাব কম হওয়ার কারণ
অনেক সময় দেখা যায় যে সারাদিন পানি না খেয়ে সারাদিন রোজা থাকার পর এবং
রাতে পানি না খাওয়ার ফলে অনেক সময় গারো এবং হলদে রঙের প্রস্রাব হয়ে থাকে এবং
প্রস্রাব জ্বালাপোড়া করতে থাকে আর এটিকে স্বাভাবিক একটি প্রস্রাব বলা হয়ে থাকে
এবং এই সময় আপনি যদি বেশি বেশি করে পানি পান করেন তাহলে এ সমস্যাটি দূর হয়ে
যাবে।
এছাড়াও অসুখের জন্য যে প্রস্রাবের জ্বালাপোড়া হয় এর কারণ হচ্ছে
প্রস্রাবে ইনফেকশন প্রস্রাবে ইনফেকশন মূলত ব্যাকটেরিয়া দিয়ে হয়ে থাকে আর এই
ব্যাকটেরিয়াটি প্রসাবের রাস্তার মুখ দিয়ে শরীরের ভিতরে প্রবেশ করে।
ছেলেদের ক্ষেত্রে যেটি হয় সেটি হল ছেলেদের প্রসাবের নালিটি অনেক বড় হয়
অর্থাৎ মুদ্রথলির রাস্তাটি অনেক লম্বা হয় যার কারণে তাদের ইনফেকশন হওয়ার চান্স
অনেক কম থাকে। কিন্তু মেয়েদের ক্ষেত্রে এটি বিভিন্ন মেয়েদের প্রসাবের নালিটি বা
মুদ্রা থলিটি অনেক কাছে অবস্থান করে যার ফলে তাদের ইনফেকশন হওয়ার চান্স অনেক
বেশি থাকে।
প্রস্রাবে ইনফেকশনের লক্ষণগুলো হচ্ছে আপনার ঘন ঘন প্রস্রাব হবে এবং
প্রস্রাবে ভীষণ পরিমাণ জ্বালাপোড়া করবে। এছাড়া যদি কিডনিতে ইনফেকশন হয় তাহলে
জ্বর আসবে এবং তলপেট ব্যথার করবে। তাই পরিশেষে বলা যায় যে প্রসাবে জ্বালাপোড়ার
দুইটি লক্ষণ হতে পারে এটি হচ্ছে স্বাভাবিক এবং অন্যটি হচ্ছে অস্বাভাবিক বা
ইনফেকশন জনিত কারণে।
প্রসাবে জ্বালাপোড়া ঘরোয়া চিকিৎসা
প্রসাবে জ্বালাপোড়া কিসের লক্ষণ এ সম্পর্কে ইতিমধ্যে আমরা উপরের অংশে বিস্তারিত
ভাবে আলোচনা করেছি। তাই এবার আপনাদেরকে জানাবো যে প্রেসাবে জ্বালাপোড়া থেকে
বাঁচার কিছু ঘরোয়া চিকিৎসা সম্পর্কে যেগুলো মেনে চলার মাধ্যমে আপনারা প্রস্রাবে
জ্বালাপোড়া থেকে কিছুটা হলেও রক্ষা পাবেন।
আরো পড়ুনঃ দিনে কতবার প্রস্রাব হওয়া উচিত
প্রস্রাবে জ্বালাপোড়া দুই রকমের হয়ে থাকে একটি হচ্ছে স্বাভাবিক এবং
আরেকটি হচ্ছে অস্বাভাবিক যদি স্বাভাবিক ভাবে আপনার প্রস্রাব জ্বালাপোড়া হয়ে
থাকে তাহলে এটি ঘরোয়া উপায় এর মাধ্যমে ভালো করা যাবে।
কিন্তু এটি যদি ইনফেকশন জনিত কারণে হয়ে থাকে তাহলে আপনাকে অবশ্যই
ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে। তাই চলুন দেরি না করে জেনে নিই প্রসাবে জ্বালাপোড়া
ঘরোয়া চিকিৎসা সম্পর্কে।
- পানি পান করা
প্রস্রাবের জ্বালাপোড়া থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য পানি খাওয়ার কোন বিকল্প নেই।
তাই প্রতিদিন পর্যন্ত পরিমাণে পানি পান করতে হবে আপনি যদি ভারী কোন কাজ করেন
তাহলে আপনাকে দিনে চার থেকে পাঁচ লিটার পানি পান করতে হবে এবং আপনি যদি তেমন কোন
কাজ না করেন তাহলে আপনাকে দিনে দুই থেকে তিন লিটার পানি পান করতে হবে।
পানি বেশি পান করার ফলে আমাদের বারবার প্রস্রাবের চাপ হয় এবং এ প্রস্রাবের
সাথে ভেতরে থাকা সকল ব্যাকটেরিয়া জীবাণু এবং পাঙ্গাস বাইরে বের হয়ে যায় এবং
জ্বালাপোড়া থেকে আমরা রক্ষা পাই।
- লেবু পানি পান করা
লেবুর রস পানিতে মিশিয়ে প্রতিদিন পান করুন তাহলে এটি আপনার শরীরের জন্য যেমন
উপকারী হবে তেমনি আপনার প্রস্রাবের জ্বালাপোড়া থেকেও এটি আপনাকে রক্ষা করবে।
প্রতিদিন সকালে হালকা গরম পানির মধ্যে এক থেকে দুই টেবিল চামচ লেবুর রস মিশিয়ে
পান করুন এবং এভাবে কয়েক দিন পান করুন তাহলে আপনার সমস্যা দূর হয়ে যাবে।
কারণ লেবুতে রয়েছে ভিটামিন সি যা আমাদের শরীরে সকল প্রকার জীবাণু এবং
ব্যাকটেরিয়া দূর করতে সাহায্য করে।
- শসা খাওয়া
প্রস্রাব জ্বালাপোড়া কমানোর জন্য শসা অনেক উপকারী ভূমিকা পালন করে। আপনি যদি
প্রতিদিন খোসা সহ একটি গোটা শসা খেতে পারেন তাহলে আপনার প্রস্রাবে আর কোন সমস্যা
হবে না। কারণ শসাতে থাকা আশ প্রস্রাবের রাস্তায় কোন প্রকার বাধা বিহীন
প্রস্রাবকে বাইরে বেরিয়ে আসতে সাহায্য করে এছাড়াও কাঁচা শসা কিডনির জন্য অনেক
উপকারী এটি কিডনিতে পাথর জমিতে বাধা দেয়।
- ডাবের পানি পান করা
পস্রাব জ্বালাপোড়া রোদে ডাবের পানি একটি উপকারী ভূমিকা পালন করে। ডাবের পানি
আমাদের শরীরকে অনেক ঠান্ডা রাখে যার ফলে আমরা প্রস্রাব জ্বালাপোড়া থেকে রক্ষা
পেতে পারি এছাড়াও যাতে প্রস্রাবের রং হলুদ রঙের তাদেরও ডাবের পানি পান করা উচিত।
তাই আমাদের উচিত প্রতিদিন ডাবের পানি পান করা।
গরমে প্রস্রাবে জ্বালাপোড়া
অনেক ব্যক্তি রয়েছে যাদের গরম এলেই প্রস্রাবের নানান রকম সমস্যা দেখা দেয় বিশেষ
করে গরমে প্রস্রাবে জ্বালাপোড়া করা। গরমের সময় যেহেতু তাপমাত্রা অনেক বেশি থাকে
যার ফলে আমাদের শরীর থেকে অতিরিক্ত মাত্রায় ঘাম ঝরে যার ফলে শরীরে প্রচুর পরিমাণ
পানি শূন্যতা দেখা দেয় আর এ সময় শরীরে পানিশূন্যতার কারণে আমাদের প্রচুর পরিমাণ
প্রস্রাব জ্বালাপোড়া করে।
গরমে এই প্রস্রাব জ্বালাপোড়া থেকে রক্ষা পেতে বেশি বেশি করে পানি পান করতে
হবে একজন প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তির জন্য প্রতিদিন দুই থেকে তিন লিটার করে পানি পান
করা প্রয়োজন। গরমে যেহেতু তাপমাত্রা বেশি থাকে যার ফলে গরমে তিন থেকে চার লিটার
পানি পান করতে হবে তাহলে আমরা প্রস্রাবের জ্বালাপোড়া থেকে রক্ষা পেতে পারি।
আরো পড়ুনঃ গরমে বাচ্চাদের জন্য কোন ক্রিম ভালো
এই সমস্যাটি ছেলেদের চেয়ে মেয়েদের বেশি হয়ে থাকে কারণ ছেলেদের থেকে
মেয়েদের মুদ্রণালী খুব কাছে থাকে যার ফলে খুব সহজে তাদের মুদ্রণালীতে বিভিন্ন
প্রকার ফাঙ্গাস এবং ব্যাকটেরিয়া প্রবেশ করে এবং যার ফলে প্রস্রাবের সময় তাদের
অনেক জ্বালাপোড়া অনুভব হয়।
তাই বেশি বেশি করে পানি পান করলে ঘন ঘন প্রস্রাব হয় এবং প্রস্রাবের সাথে এ
ব্যাকটেরিয়া পাঙ্গাসগুলো বাইরে বেরিয়ে আসে। তাই পরিশেষে বলা যায় যে গরমে
প্রস্রাবে জ্বালাপোড়া রোধে বেশি বেশি করে পানি পান করতে হবে।
প্রস্রাবে জ্বালাপোড়া কমানোর উপায়
বর্তমানে অধিকাংশ নারী পুরুষেরই সাধারণ একটি সমস্যা হচ্ছে প্রস্রাবে জ্বালাপোড়া
করা। বিভিন্ন রকম ব্যাকটেরিয়া জীবাণু এবং ফাঙ্গাসের কারণে প্রস্রাবে জ্বালাপোড়া
হয়ে থাকে। অনেকে প্রস্রাবে জ্বালাপোড়া কড়া নিয়ে অনেক বেশি চিন্তা করে মনে করে
যে এটি অস্বাভাবিক কোন রোগ কি না। তাই আজকে আমরা এই আর্টিকেল আলোচনা করব যে
প্রস্রাবে জ্বালাপোড়া কমানোর উপায় সম্পর্কে।
১। প্রস্রাবে জ্বালাপোড়া রোধ করার জন্য বেশি বেশি করে পানি পান করতে হবে এতে করে
ঘন ঘন প্রস্রাব হবে এবং প্রসবের সাথে সকল প্রকার ব্যাকটেরিয়া এবং ফাঙ্গাস বাইরে
বেরিয়ে যাবে।
২। একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের প্রতিদিন প্রায় দুই থেকে তিন লিটার করে পানি পান
করতে হবে। এবং কোন ব্যক্তি যদি ভারি কোন কাজ করে তাহলে তাকে তিন থেকে চার লিটার
পানি পান করতে হবে।
৩। প্রসাব জ্বালাপোড়া রোদে দই অনেক বেশি কার্যকরী কার্যকরী। টক দই এবং মিষ্টি দই
উভয়ের মধ্যে রয়েছে স্বাস্থ্যকর এক ধরনের ব্যাকটেরিয়া এই ব্যাকটেরিয়া আমাদের
দেশের সকল রকম জীবাণু ধ্বংস করে।
৪। এছাড়াও প্রসাব জ্বালাপোড়া রোদ করতে শাকসবজি খাওয়াটা অনেক গুরুত্বপূর্ণ কারণ
শাকসবজিতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ও অ্যান্টিঅক্সাইডরা যা আমাদের দেহের
পানির অভাব পূরণ করে।
প্রসাবে জ্বালা করে কেন
প্রসাবে জ্বালাপোড়া কিসের লক্ষণ এ সম্পর্কে আমরা আলোচনা করেছি তাই এবার আমরা
আপনাদেরকে জানাবো যে প্রসাবে জ্বালা করে কেন এই সম্পর্কে। বর্তমানে প্রায়
প্রতিটি মানুষেরই সাধারন একটি সমস্যা হচ্ছে প্রস্রাবে জ্বালাপোড়া করা। প্রস্রাবে
জ্বালাপোড়া করার বিশেষ করে দুইটি কারণ রয়েছে একটি হচ্ছে স্বাভাবিক এবং আরেকটা
হচ্ছে অস্বাভাবিক।
পানি না খাওয়ার কারণে অর্থাৎ শরীরে পানি শূন্যতার কারণে প্রস্রাবের যে
জ্বালাপোড়া হয়ে থাকে তাকে স্বাভাবিক প্রস্রাবে জ্বালাপোড়া বলে এমন অবস্থায়
বেশি বেশি করে পানি পান করলে প্রস্রাবে জ্বালাপোড়া ঠিক হয়ে যায়। কিন্তু
অস্বাভাবিক প্রসাবে জ্বালাপোড়া বলতে প্রস্রাবের নারীতে জীবাণু বা বিভিন্ন
ফাঙ্গাসের কারণে যে জ্বালাপোড়া হয় তাকে বোঝানো হয়।
বিশেষ করে এই সকল জীবাণু গুলো প্রস্রাবের ছিদ্র দিয়ে প্রবেশ করে
মুদ্রণালীতে গিয়ে আক্রমণ করে এবং এর পরে প্রস্রাবে জ্বালাপোড়া এবং আপনি যদি
করেন এটি কি অবহেলা করেন তাহলে পরবর্তীতে এটি কিডনিতে আক্রমণ করতে পারে।
লেখকের মন্তব্য
প্রসাবে জ্বালাপোড়া কিসের লক্ষণ সম্পর্কিত আজকের এই আর্টিকেলটি যদি আপনাদের ভালো
লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই আর্টিকেলটি নিচে একটি লাইক এবং কমেন্ট করুন। এবং
আর্টিকেলটি অন্যদেরকেও শেয়ার করুন যাতে করে তারা এই সকল বিষয়ে জেনে উপকৃত হয়।
rsfahim it নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url