সিজারের পর পেটের দাগ কমানোর ৫টি উপায় জানুন


আপনি যদি একজন সিজারিয়ান হয়ে থাকেন তাহলে আজকের এই আর্টিকেলটি আপনার জন্য কারণ আজকের এই আর্টিকেলে আমরা সিজারের পর পেটের দাগ কমানোর উপায় এবং সিজারের পর পেট ফুলে যায় কেন এ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেছি ।

সিজারের পর পেটের দাগ কমানোর উপায়


তাই আপনি যদি আপনার পেটের দাগ দূর করতে চান তাহলে আমাদের এই আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ টা একবার পড়ুন।

সূচিপএঃ  সিজারের পর পেটের দাগ কমানোর ৫টি উপায় জানুন

সিজারের পর পেটের দাগ কমানোর উপায়

অনেক মায়েরাই সিজারের পর পেটের দাগ কমানোর উপায় সম্পর্কে আমাদের কাছে জানতে চাই তাই আজকে আমরা এই আর্টিকেলে এ সম্পর্কে আলোচনা করব। বর্তমান সময়ে সারা বিশ্বে সন্তান প্রসবের দুইটি মাধ্যম রয়েছে একটি হচ্ছে নরমাল এবং আরেকটি হচ্ছে সিজার। কিন্তু বর্তমানে সন্তান প্রসবের সবচেয়ে সহজ এবং কোন ব্যথা মুক্ত আরামদায়ক একটি পদ্ধতি হচ্ছে সিজার পদ্ধতি।

 এ পদ্ধতির মাধ্যমে একজন গর্ভবতী মায়ের তলপেট কেটে তারপর সন্তান বের করে হয় এবং এরপর পেটেরকাটাই স্থানটি ভালো হবে সেলাই করে দেওয়া হয়। এবং এরপর যে সমস্যাটি হয় সেটি হল সেলাই করা স্থানটি কয়েকদিন পর ভালো হয়ে যায় কিন্তু সেলাই করা স্থানটি যে দাগ সেটি সারা জীবন থেকে যায় আর এটিকে প্রচলিত ভাষায় সিজারের দাগ বলা হয়ে থাকে।
 কিন্তু বর্তমান আধুনিক যুগে লেজারের মাধ্যমেও এই দাগ দূর করা সম্ভব কিন্তু এটির খরচ অনেক ব্যয়বহুল হওয়ার কারণে সবাই এটি করতে পারে না। তাই আজকে আমরা এমন কিছু উপায় সম্পর্কে আপনাদেরকে বলবো যেগুলোর মাধ্যমে আপনারা ঘরে থাকা কিছু জিনিস দিয়েই এই দাগটি অনেকটা দূর করতে পারবেন।

১।অ্যালোভেরা জেল

পোড়া ক্ষত অপারেশনের দাগ এছাড়াও শরীরের যেকোন দাগ দূর করতে অ্যালোভেরা জেল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। বিশেষজ্ঞদের মতে অ্যালোভেরা কোনোরকম কেমিক্যাল না থাকায় এটি মায়ের ত্বকের জন্য অত্যন্ত নিরাপদ।

২।লেবুর রস

লেবুর রস এ রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি এবং এক ধরনের সাইট্রিক এসিড যা যে কোন প্রকার ক্ষত দাগ অথবা কালচেদার দূর করতে সাহায্য করে। এজন্য সিজারের প্রতিটি নারীর জন্য এই লেবু খাওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এটি সিজারের দাগকে ধীরে ধীরে হালকা করে দেয়।

৩।আলুর রস

আলুর রসে এক ধরনের প্রাকৃতিক ব্লিচ উপাদান রয়েছে যার শরীরের যেকোনো কালচে দাগ অথবা ক্ষত দাগকে দূর করতে সাহায্য করে। এর জন্য আপনি যদি সিজারের দাগ দূর করতে চান তাহলে সিজারের দাগে আলুর টুকরো অথবা আলুর রস ভালোভাবে লাগিয়ে 15 মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন দেখবেন ধীরে ধীরে দাগ দূর হয়ে যাবে।

৪।টি ব্যাগ

চায়ের মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি অক্সাইড যা সিজারের দাগ হালকা করতে সাহায্য করে। এর জন্য গ্রিন টি ব্যাগ গরম পানিতে চুবিয়ে তারপর ঠান্ডা পানিতে ঠান্ডা করে এটি সিজারের কাটা স্থানে ধরুন এভাবে করে প্রায় ১০ থেকে ১৫ মিনিট ধরে দিনে কয়েকবার করে এটি রাখতে হবে।

৫।মধু

মধু যেমন আমাদের শরীরের জন্য অনেক উপকারী তেমনি আমাদের শরীরের বিভিন্ন প্রকার দাগ দূর করার জন্য এটি অনেক উপকারী। বিশেষ করে এটি সিজারের দাগ দূর করার জন্য অনেক উপকারী ভূমিকা পালন করে। এতে রয়েছে এন্টিসেপটিক যা বিভিন্ন প্রকার দাগ দূর করতে সাহায্য করে।

সিজারের পর পেট ফুলে যায় কেন

সিজারের পর পেটের দাগ কমানোর উপায় এই সম্পর্কে উপরের পাঠে আমরা বিস্তারিত আলোচনা করেছি তাই এবার আমরা আলোচনা করব যে সিজারের পর পেট ফুলে যায় কেন এই সম্পর্কে।

 অনেক গর্ভকালীন মা রয়েছে যাদের সিজারের মাধ্যমে সন্তান প্রসব করার পর তাদের তলপেটের নিজের অংশটি তুলনামূলকভাবে অনেক ফুলে যায় অথবা ঝুলে যায়। আবার অনেক সময় দেখা যায় যে দুইটা বাচ্চা হওয়ার পরে এটি আরো বেশি ঝুলে যায়।
এটির মূল কারণ হচ্ছে পুরুষ হরমোনে বাচ্চা হওয়ার পর এ হরমনটি মেয়েদের পেটের নিচে গিয়ে পেটের একটি ঝুলের কারণ এবং পেট ফুলে যাওয়ার কারণ হতে পারে।এ হরমোন যত নিম্ন স্থলে সংকোচিত হবে ততই কর্মকারের মায়ের পেটের চামড়া সংকুচিত হবে এবং ফুলে যাবে।

কিন্তু এই সমস্যাটি দীর্ঘায়িত একটি সমস্যা নয় এটি একসময় ঠিক হয়ে যায় আবার অনেকে রয়েছে যাদের দীর্ঘকাল ধরে এটি থেকে যায়। তারা চাইলে এটি ডাক্তারের পরামর্শে সার্জারি করার মাধ্যমে এটি ভালো করতে পারবে।

সিজারের পর পেট কমানোর উপায়

সিজারের পর পেটের দাগ কমানোর উপায় সম্পর্কে আমরা জেনেছি তাই এবার আমরা জানবো যে সিজারের পর পেট কমানোর উপায় সম্পর্কে।বর্তমানে প্রতিটি গর্ভবতী মাই নরমাল ডেলিভারির ব্যাথা থেকে বাঁচার জন্য সিজার এর মাধ্যমেই বাচ্চা প্রসব করে থাকে।

 সিজারে যেহেতু পুরোটা অবশ করে তলপেট কেটে বাচ্চা বের করা হয় তাই এটিতে গর্ভবতী মায়ের তেমন কোন কষ্ট হয় না। কিন্তু সিজার করার পর মেয়েদের সবচেয়ে বড় একটি সমস্যা সেটি হচ্ছে পেট ফুলে যাওয়া।
অনেক মহিলা রয়েছে যারা বাচ্চা হওয়ার আগে অনেক চিকন এবং স্লিম ছিল কিন্তু বাচ্চা হওয়ার পরে তাদের অনেকেই মোটা হয়ে যায় অথবা পেট ফুলে যায়। এটি শুধু সিজারের ক্ষেত্রেই হয় এমনটা নয় অনেক ক্ষেত্রে নরমাল ডেলিভারিতেও এটি দেখা যায়।

কিন্তু গবেষণায় দেখা গেছে যে সিজার করা মহিলাদেরই এই সমস্যাটি বেশি দেখা যায়। তাই আজকে আমরা আপনাদের কাছে আলোচনা করব যে সিজারের পথ যদি পেট ফুলে যায় তাহলে কিভাবে এটিকে স্বাভাবিক পর্যায়ে নিয়ে আসবেন।

১। বাচ্চাকে সঠিকভাবে বুকের দুধ পান করাতে হবে। বাচ্চাকে প্রায় ছয় মাস ধরে বুকের দুধ খাওয়াতে হবে এতে করে মায়ের পেটের অতিরিক্ত মেদ কমে যাবে।

২। বাচ্চা হওয়ার প্রায় 6 সপ্তাহ থেকে শারীরিক ব্যায়াম শুরু করে দিতে হবে। এর ফলে আপনার ওজন অনেক কমে যাবে। কিন্তু 6 সপ্তাহএর আগে কোনোভাবে ব্যায়াম করা যাবে না কারণ এতে করে শরীরের ক্ষতি হতে পারে।

৩। পেট কমানোর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ একটি উপায় হচ্ছে পেটে বেল্ট পড়ে থাকা। বাচ্চা হওয়ার পর থেকে আপনি ২৪ ঘন্টা এই বেল্ট পড়ে থাকবেন এতে করে আপনার পেট ফোলা অনেক কমে যাবে।

৪। প্রতিদিন নিয়ম করে পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পান করতে হবে কারণ পানি দেহ থেকে অতিরিক্ত সকল প্রকার মেদ দূর করে। তাই প্রতিদিন পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পান করবেন এতে করে আপনার পেট ভরা থাকবে এবং ক্ষুধা কম লাগবে।

৫। কার্বোহাইড্রেট এবং প্রোটিনযুক্ত সকল খাবার প্রয়োজনের বেশি খাওয়া যাবে না এতে করে আপনার ওজন বেড়ে যেতে পারে। কিন্তু তাই বলে একেবারে কম খেলেও চলবে না কারণ এতে করে আপনার বাচ্চার ক্ষতি হতে পারে।

৬। এবং কোন কিছু নিয়ে চিন্তা ভাবনা করা যাবে না। কারণ আমরা যখন কোন কিছু নিয়ে চিন্তা করি তখন আমাদের শরীরে এক ধরনের হরমোন তৈরি হয় যা আমাদের ওজন বাড়ি দিতে পারে। আর প্রতিটা মায়ের একটি কমন সমস্যা হচ্ছে তারা প্রেগনেন্সি থেকে শুরু করে বাচ্চা হওয়া পর্যন্ত প্রচুর পরিমাণ চিন্তা টেনশন করে।

তাই পরিশেষে বলা যায় যে আপনি যদি সিজারের পরপর আপনার ওজন কমাতে চান তাহলে আপনাকে এই সকল নিয়মগুলো মেনে চলতে হবে।

সিজারের পর পেট শক্ত

সিজারের পর পেট শক্ত থাকার কারণে অনেক নারীরা এটি নিয়ে অনেক বেশি চিন্তিত থাকে। অনেক নারী সিজারের পর এ বিষয়টি নিয়ে অনেক বেশি চিন্তিত থাকে যে এটি খারাপ কোন রোগ কি না। আবার অনেকে এটি ঋতুস্রাব মনে করে ভুল করে। আসলে এটি একটি কমন সমস্যা সিজারের পর এটি যে কোন নারীর হতে পারে এবং এটি একটি সময় ভালো হয়ে যায়।
সিজারের সময় যখন পেট কেটে বাচ্চা বের করা হয় তখন পেটের বাইরে এবং ভেতরে অনেকটা চামড়া মেদ এবং মাংস পেশী কাটা পরে এবং ওই স্থানগুলোতে ক্ষত সৃষ্টি হয়। পরবর্তীতে সে ক্ষতস্থানগুলোতে এক ধরনের স্কার টিস্যু তৈরি হয় এবং এই স্কার ধীরে ধীরে শক্ত হয়ে যায় এবং যার ফলেই সিজারের পর অনেকে পেটে একটি টান অনুভব করে এবং ক্ষতর আশেপাশে শক্ত হয়ে যায়।

এটি বেশিদিন স্থায়ী হয় না কিছুদিন পর এটি ঠিক হয়ে যায়। আপনি যদি এ সমস্যাটি তাড়াতাড়ি দূর করতে চান তাহলে আপনাকে নিয়মিত বেল্ট করতে হবে।

সিজারের পর পেট কমানোর বেল্ট

সিজারের পর পেটের দাগ কমানোর উপায় এর মধ্যে ভালো একটি উপায় হচ্ছে সিজারের পর পেট কমানোর বেল্ট নিয়মিত ব্যবহার করা। একটি নারীর জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এবং কষ্টদায়ক একটি মুহূর্ত হচ্ছে সন্তান জন্ম দেওয়া।

 সন্তান পেটে থাকাকালীন যেমন নিজের যত্ন নিতে হয় তেমনি সন্তান হয়ে গেলেও তার চেয়ে বেশি যত্ন নিতে হয়। বর্তমানে স্বাভাবিকের তুলনায় যদি সিজারে বাচ্চা হয় তাহলে মেয়েদের সবচেয়ে বেশি যে সমস্যাটি হয় সেটি হলো পেটের অতিরিক্ত মেদ বেড়ে যাওয়া।
তাই সিজার করার পর পেটের মেদ কমানোর জন্য তাকে নিজের প্রতি আরো বেশি যত্ন নিতে হয়। পেটের এই মেদ কমানোর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উপায় হচ্ছে সিজারের পরপরই কোমরে বেল্ট পড়া। এর ফলে আপনি খুব তাড়াতাড়ি আপনার পেটের মেদ নিয়ন্ত্রণে আনতে পারবেন। পেটের মেদ কমানো বাদে আরও বিভিন্ন সুবিধা পাওয়া যায় এই বেল্ট পড়ার ফলে।

সিজারের সময় পেটের বাইরে এবং ভেতরে অনেক মাংসপেশি বাদ দিতে হয় এই বেল্ট পড়ার কারণে এ মাংসপেশিগুলো তাড়াতাড়ি জোড়া লাগে। এছাড়াও এটি পড়ার ফলে বাচ্চাকে কোলে নিয়ে বুকের দুধ খাওয়াতে পারে। তাই পরিশেষে বলা যায় যে সিজারের পর প্রতিটা মেয়ের জন্য বেল্ট পরা অত্যন্ত জরুরী কারণ এতে করে সে খুব তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে উঠতে পারবে।

লেখকের মন্তব্য

প্রিয় বন্ধুরা আপনাদের যদি আমাদের আজকের মেয়েদের সিজারে বাচ্চা জন্ম দেওয়া সম্পর্কিত এই আর্টিকেলটি ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই আর্টিকেলটিতে একটি লাইক এবং কমেন্ট করুন। এবং এই আর্টিকেলটি প্রতিটি গর্ভবতী মায়েদেরকে শেয়ার করুন যাতে করে তারা উপকৃত হতে পারে।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

rsfahim it নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url