ত্রিশ রোজার ত্রিশ ফজিলত এবং ইবাদতের তাৎপর্য


প্রিয় পাঠক আপনি যদি ত্রিশ রোজার ত্রিশ ফজিলত এবং রমজান মাসের নামাজের সময়সূচী সম্পর্কে জানতে চান তাহলে আজকের এই আর্টিকেলটি আপনার জন্য কারণ আমাদের এই আর্টিকেলে এই সম্পর্কে বিস্তারিত ভাবে আলোচনা করা হয়েছে।
ত্রিশ রোজার ত্রিশ ফজিলত


তাই আপনি যদি ত্রিশ রোজার ত্রিশ ফজিলত সম্পর্কে জানতে চান তাহলে আমাদের এই আর্টিকেলটি সম্পূর্ণটা একবার পড়ুন।

সূচিপত্রঃ ত্রিশ রোজার ত্রিশ ফজিলত এবং ইবাদতের তাৎপর্য

ত্রিশ রোজার ত্রিশ ফজিলত

রমজান মাসে আল্লাহ তাআলা প্রতিটি রোজাদার ব্যক্তিদের জন্য ত্রিশ রোজার ত্রিশ ফজিলত রেখেছেন। এবং এর সাথে আল্লাহতালা প্রতিটা মুসলিমদের প্রতি রমজান মাসের রোজাকে ফরজ করেছেন। যার ফলে রমজান মাসে প্রতিটা মুসলমানই চাই যে সে যেন এ রমজান মাসে ভালো ভাবে আল্লাহতালার এবাদত করতে পারে এবং আল্লাহ তালাকে রাজি খুশি করতে পারে। প্রতিবছরই রমজান মাসে প্রতিটি মুসলমানকে ত্রিশটি করে রোজা রাখতে হয় এটি প্রতিটা মুসলমানদের জন্য ফরজ একটি ইবাদত।
আর এ ৩০ টা রোজার জন্য আল্লাহ তা'আলা প্রতিটা মুসলমানদের ৩০ টি ফজিলত অথবা নেকির কথা বলেছেন। তাই আজকে আমরা প্রতিটা মুসলমান ভাইকে জানাবো যে রমজান মাসের ৩০ টি রোজা রাখার 30 টি ফজিলত সম্পর্কে।

১।একজন রোজাদারকে নবজাতক শিশুর মত আল্লাহ তা'আলা নিষ্পাপ করে দেন।

২।ফেরেশতারা প্রতিটি রোজাদারের ক্ষমার ঘোষণা করে থাকেন।

৩।প্রতিটি রোজাদার ব্যক্তির মা-বাবাকে ক্ষমা করে দেওয়া হয়।

৪। আসমানী বড় বড় চার কিতাবের সময় সব দেওয়া হয় রোজাদারকে।

৫। রোজাদারদেরকে মক্কা নগরীর মসজিদুল হারামের নামাজ পড়ার সোয়াব দেওয়া হয়।

৬।প্রতিটি রোজাদারকে ফেরেশতাদের সাথে সপ্তম আকাশে বায়তুল মামুর তাওয়াফে সোহাগ প্রদান করা হয়।

৭।ফেরাউনের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য মুসা আঃ কে সহযোগিতা করার সওয়াব দেওয়া হয়।

৮।ইবরাহীম আঃ এর মতো রহমত বষিত হয় রোজাদারদের ওপর।

৯।নবীদের সাথে এক কাতারে দাঁড়িয়ে ইবাদত করার মত সোওয়াব পাবে।

১০।একজন রোজাদারের সকল জাহানের কল্যাণ দান করা হয়।

১১। রোজাদারের মৃত্যু নবজাতক শিশুর মত হয়ে থাকে।

১২।হাশরের ময়দানে একজন রোজাদারের মুখ পূর্ণিমার মত উজ্জ্বল হয়ে যায়।

১৩।সকল প্রকার বিপদ থেকে একজন রোজাদারকে রক্ষা করা হয়।

১৪।রোজাদারের আসল ময়দানে সকল হিসেব সহজ করে দেওয়া হয়।

১৫। সকল ফেরেশতা রোজাদারদের জন্য দোয়া করতে থাকে।

১৬। আল্লাহতালা প্রতিটা রোজাদারকে জাহান্নাম থেকে মুক্তি দেয় এবং জান্নাত দান করেন।

১৭। রোজাদারদেরকে একদিনের জন্য আল্লাহ তা'আলা নবীদের মতো সম্মান এবং সোওয়াব দান করেন।

১৮। আল্লাহতালা রোজাদার এবং তার মা-বাবার প্রতি সন্তুষ্টির সংবাদ দেন।

১৯। পৃথিবীর সকল বস্তু রোজাদারদের জন্য দোয়া করতে থাকে।

২০। রোজাদারদেরকে আল্লাহর পথে শহীদ হওয়ার মত নেকি দান করা হয়।

২১। জান্নাতের সবচেয়ে সুন্দর প্রাসাদ তৈরি করা হয় রোজাদারদের জন্য।

২২। হাশরের ময়দানের সকল চিন্তা দূর করা হয় রোজাদারদের মাথা থেকে।

২৩। আল্লাহ তায়ালা রোজাদারদের জন্য জান্নাতে সুন্দর একটি শহর তৈরি করে দেন।

২৪। ২৪টি দোয়া কবুল করে নেয়া হয় রোজাদারদের।

২৫। রোজাদারদের জন্য কবরের সকল আজাব বন্ধ করে দেওয়া হয়।

২৬। রোজাদারদের চল্লিশ বছর ইবাদত করার নেকি দেওয়া হয়।

২৭। রোজাদারদের চোখের পলকের মধ্যেই পুলসিরার সেতু পার করানো হয়।

২৮। রোজাদারদের জন্য আল্লাহ তা'আলা জান্নাতের সকল নেয়ামত দ্বিগুণ করে দেন।

২৯।এবং রোজাদাররা ১০০০ কবুল হজের মত নেকি পান।

৩০। যারা ৩০ টা রোজা সম্পূর্ণভাবে পালন করে তাদের ফজিলত দ্বিগুণ করা হয়।

তাই পরিশেষে বলা যায় যে কোন ব্যক্তি যদি রমজান মাসে ৩০ টা রোজায় পালন করে তাহলে সে ব্যক্তি এই ৩০ টি ফজিলত পাবে। 

রমজান মাসের নামাজের সময়সূচী

রমজান মাস হলো প্রতিটা মুসলিম জাতির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং তাৎপর্যপূর্ণ একটি মাস কারণ আল্লাহতালা রমজান মাসের ত্রিশ রোজার ত্রিশ ফজিলত রেখেছেন। এ মাসটি প্রতিটি মুসলিম জাতির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং তাৎপর্যপূর্ণ একটি মাস।
কারণ এ মাসে প্রতিটা মুসলিম চাইলে ইবাদতের মাধ্যমে আল্লাহ তাআলার কাছে তার নিজের সকল গুনাহ মাফ করে নিতে পারবে এ মাসটি যেহেতু অনেক ফজিলত এবং তাৎপর্যপূর্ণ একটি মাস তাই এ মাস অন্যান্য মাসের তুলনায় একটু বেশি আল্লাহর ইবাদত করতে হয়। কিন্তু অনেকেই জানে না যে রমজান মাসে নামাজের সময়সূচী কখন বা কখন এবাদত করতে হবে।

তাই আজকে আমরা এই আর্টিকেলের মাধ্যমে আপনাদেরকে জানাবো যে রমজান মাসের নামাজের সময়সূচী সম্পর্কে। অন্যান্য মাসের মত রমজান মাসেও পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়তে হয় কিন্তু রমজান মাসে এই পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের সময় সূচি কিছুটা পরিবর্তন হয়। যেমন যোহর এবং আসর এই দুইটি নামাজ অন্যান্য মাসের মত সঠিক সময়েই হয়ে থাকে।

কিন্তু বাদ বাকি নামাজগুলো যেমন ফজর, মাগরিব এবং এশা নামাজ কয়েক মিনিট আগে পিছে হয়ে থাকে। কারণ রোজার সময় আমরা ফজরের এক ঘন্টা আগে উঠি এবং সেহেরী করি তারপর ফজরের নামাজ পরি এর ফলে অনেক সময় ফজরের আজান অন্যান্য মাসের তুলনায় একটু আগে হয়ে থাকে।

এবং এরপর আমরা সারাদিন রোজা থাকার পর মাগরিবের কয়েক মিনিট আগে ইফতার সামনে নিয়ে বসে যায় এবং ইফতার করার প্রস্তুতি নি যখনই মসজিদে মাগরিবের আজান শুনি তখনই আমরা ইফতার করি। এই সময় অন্যান্য মাসে তুলনায় মাগরিবের নামাজটি রমজান মাসে একটু পরে শুরু হয়ে থাকে কারণ আজানের পরপর সবাই ইফতারি করে।

যার ফলে একটু দেরি করে মাগরিবের নামাজ শুরু হয়। এরপর কয়েক ঘন্টা পর এশার আজান দিলে আমরা মসজিদে যাই এবং এশার নামাজ আদায় করি। এশার নামাজ আদায় করার পর আমাদেরকে তারাবির নামাজ আদায় করতে হয়। তাই বলা যায় যে অন্যান্য মাসে তুলনায় রমজান মাসে নামাজের সময়সূচী কিছুটা পরিবর্তন হয়।

রমজান মাসের ফজিলত

আল্লাহ তাআলা রমজান মাসে রোজাদার ব্যক্তিদের জন্য ত্রিশ রোজার ত্রিশ ফজিলত দান করেছেন কারণ অন্যান্য মাসের তুলনায় রমজান মাসের ফজিলত অনেক বেশি। মুসলমানের জন্য সারা বছরের ন্যায় রমজানের এই একটি মাস অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি সময়। কারণ এই সময় প্রতিটা মুসলমানই আল্লাহ তায়ালার উদ্দেশ্যে রোজা রাখে এবং আল্লাহ তায়ালাকে রাজি খুশি করে। বছরের অন্যান্য দিনের থেকে রোজার এই একটি মাস আল্লাহতালা পৃথিবীর সকল জিনিসের বরকত দিয়ে দেন।

এই সময় এমন কোন মানুষ খুঁজে পাওয়া যাবে না যে কেউ না খেয়ে থাকে কারণ এটি হলো একটি বরকতের মাস। মহানবী সাঃ এর সময় মহানবী এবং তার সাহাবারা ছয় মাস আগে থেকেই অপেক্ষা করতেন যে কবে রমজান মাস আসবে। এ রমজান মাস আল্লাহ তায়ালা অন্যান্য মাসের তুলনায় সবচেয়ে বেশি মর্যাদা এবং ফজিলত দান করেছেন।
কারণ এই রমজান মাসে আমরা সেহরির থেকে শুরু করে ইফতারের আগ পর্যন্ত সকল প্রকার খাবার থেকে বিরত থাকি। এই সময় আমরা চাইলে যে কোন কিছু খেতে পারতাম কেউ দেখত না কিন্তু তারপরও আমরা খাই না কারণ কেউ না দেখলেও দেখে আল্লাহ এই ভয়টি আমাদের সবার মধ্যে কাজ করে।

রমজান মাসে আমাদের অনেক কষ্ট হয় না খেয়ে থাকার কারণে অনেক সময় পানির জন্য গলা ফেটে যায় তারপরও আমরা পানি খাই না একমাত্র আল্লাহর নির্দেশে এবং আল্লাহকে রাজি খুশি করার জন্য। তাই আমাদের এই ত্যাগের জন্য এ মাসটিতে আল্লাহতালা অনেক মর্যাদা এবং ফজিলত দিয়েছেন।

আমাদের জন্য এ মাসে যে কোনো দান-খয়রাত এবং দোয়া খুব সহজেই আল্লাহতালা কবুল করে নেন। এবং আমাদের সকল সম্পদের আল্লাহতালা বরকত দিয়ে দেন। এছাড়াও হাদিসে এসেছে রমজান মাসে আল্লাহ তায়ালা সকলের কবরের আজাব বন্ধ করে দেন এবং জাহান্নামের দরজা বন্ধ করে রাখেন।

তাই পরিশেষে বলা যায় যে প্রতিটি মুসলিম দের জন্য রমজান মাসটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কারণ এ রমজান মাসে যে কেউ চাইলে তার জীবনের সকল গুনাহ খাতা আল্লাহ তাআলা এবাদতের মাধ্যমে মাফ করে নিতে পারে।

রোজার গুরুত্ব ও তাৎপর্য

রমজান মাসের ত্রিশ রোজার ত্রিশ ফজিলত আল্লাহতালা প্রতিটি মানবজাতিকে সৃষ্টি করেছেন তার ইবাদতের জন্য। এবং তিনি পৃথিবীতে কিছু ফরজ ইবাদত আমাদেরকে দিয়েছেন যা আমাদের জন্য পালন করা প্রত্যাবর্ষক। আর এই ফরজ ইবাদত গুলোর মধ্যেই রমজান মাসের রোজা হল অন্যতম কারণ রোজার গুরুত্ব ও তাৎপর্য অনেক বেশি। আল্লাহতালা নির্দেশে রমজান মাসে সেহরি থেকে শুরু করে মাগরিবের আগ পর্যন্ত সব প্রকার খাবার এবং পানাহার থেকে নিজেকে দূরে রাখি।

এভাবে আমরা রমজানের এক মাস পর্যন্ত রোজা পালন করে থাকি। আল্লাহতালা রমজান মাসকে অন্যান্য মাসের তুলনায় অত্যন্ত ফজিলত গুরুত্ব এবং তাৎপর্য দান করেছেন। এছাড়াও আল্লাহতালা রমজান মাসে প্রতিটি জিনিসের মধ্যেই একটি বরকত নাযিল করে দেন এ সময় প্রতিটা মানুষের ধন-সম্পদেও আল্লাহ বরকত দান করে দেন।

রমজান মাসটি প্রতিটি মুসলিম জাতির জন্য অনেক বড় একটি সুযোগ হাদিসে বলা আছে কোন ব্যক্তি রমজান মাস পেল কিন্তু তারপরও সে তার গুনা মাফ করতে পারল না তাহলে তার মত হতভাগা আর কেউ নেই। তাই প্রতিটি মুসলমানেরই রমজান মাসটি সবচেয়ে বড় একটি সুযোগ নিজেদের গুনাহ আল্লাহর কাছে করে নেওয়া।

এছাড়াও এ মাসটিতে বেশি বেশি দাম খয়রাত করার কথা বলা হয়েছে এ মাসটি যেহেতু অন্যান্য মাসের তুলনায় অনেক গুরুত্ব এবং তাৎপর্যপূর্ণ একটি মাস তাই এ মাসে আপনি যদি দান করেন তাহলে আপনার দানটি বৃথা যাবে না আল্লাহর কাছে কবুল হবে। তাই বলা যায় যে রমজান মাসটি প্রতিটা মুসলিম জাতির জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ এবং তাৎপর্যপূর্ণ একটি মাস।

রমজান মাসের নামাজের ফজিলত

প্রতিটি মাসের ন্যায় রমজান মাস একটু আলাদা কারণ রমজান মাসে আল্লাহ তায়ালা অন্যান্য মাসের তুলনায় অনেক ফজিলত এবং তাৎপর্য দান করেছেন। যার ফলে এই মাসে নামাজের এবং বিভিন্ন ইবাদতের অনেক বেশি ফজিলত আল্লাহতালা দান করে থাকেন।

অন্যান্য মাসে নামাজ পড়লে অথবা আল্লাহর এবাদত করলে যেমন সোওয়াব পাওয়া যায় রমজান মাসের নামাজের ফজিলত তার থেকে অনেক বেশি। রমজান মাসে যখন প্রতিটি মানুষ আল্লাহর নির্দেশে সারাদিন রোজা রাখার পরও ইফতারের কয়েক মিনিট বাকি থাকার পরেও কোন খাবার খাই না তখন আল্লাহ তা'আলা অবাক হয়ে ফেরেশতাদের বলতে থাকে যে ওরা খায় না কেন।
তখন ফেরেশতারা উত্তরে বলে আপনি আদেশ দেওয়া না পর্যন্ত ওরা কিছু খাবে না। তখন আল্লাহ তা'আলা বলেন তাহলে ওরা কি চায় তখন ফেরেশতা বলে ওরা আপনার সন্তুষ্টি লাভ করতে চাই তখন আল্লাহ তা'আলা বলেন ওরা যা চায় তাই ওদেরকে দিয়ে দাও। এছাড়াও রমজান মাসের পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের মধ্যে সবচেয়ে ফজিলতপূর্ণ নামাজ হচ্ছে এশার পর তারাবির নামাজ।

রমজান মাসে এই নামাজ টিকে ওয়াজিব বলা হয়ে থাকে কোন ব্যক্তি যদি ৩০ দিন তারাবির নামাজ জামাতের সাথে আদায় করে তাহলে আল্লাহতালা তার জীবনের সকল গুনাহ খাতা মাফ করে দেন। তাই বলা যায় যে রমজান মাসে আল্লাহ তায়ালা অন্যান্য মাসে তুলনায় নামাজের এবং এবাদতের জন্য দ্বিগুণ ফজিলত এবং নেকি দান করেন।

লেখকের মন্তব্য

আপনি যদি রমজান মাসের বিভিন্ন ফজিলত এবং গুরুত্ব সম্পর্কে আমাদের এই আর্টিকেলটি পড়ে বুঝতে পারেন তাহলে আমাদের এই আর্টিকেলটিতে একটি লাইক কমেন্ট করুন। এবং এই আর্টিকেলটি অন্যদের মাঝে শেয়ার করে তাদেরকেও রমজান মাসের ফজিলত এবং গুরুত্ব বুঝার সুযোগ করে দিন।


এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

rsfahim it নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url