খেজুর খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা-খেজুর খাওয়ার নিয়ম


খেজুর খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা এবং সকালে খেজুর খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে যারা এখনো সঠিক তথ্য জানেন না তাদের জন্য আজকের এই আর্টিকেলটি সাজানো হয়েছে। আপনি চাইলে আমাদের আর্টিকেলটি সম্পূর্ণটা করতে পারবেন।

খেজুর খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা


সূচিপএঃ খেজুর খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা-খেজুর খাওয়ার নিয়ম

খেজুর খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা

অনেক মানুষ রয়েছে যারা এখনো ভালো হবে খেজুর খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে সঠিক তথ্য জানিনা তাই আজকে আমরা তাদেরকে এই বিষয়ে সঠিক একটি তথ্য জানাবো। বর্তমান বিশ্বে সবচেয়ে জনপ্রিয় একটি ফল হচ্ছে খেজুর। খেজুর চিনেনা বা খেজুর সম্পর্কে জানে না এমন মানুষ খুবই কমই রয়েছে।
 এটি কে মুসলিম জাহানের ফল বলা হয়ে থাকে। এটি দেখতে যেমন আকর্ষণীয় এবং এটির পুষ্টিগুণ চাহিদাও অনেক বেশি। রমজান মাসে ইফতারের সময় সবার ঘরে ঘরে এই ফলটি পাওয়া যায়।

প্রতিটি মুসলমানই ইফতারের সময় প্রথমে খেজুর খেয়ে তারপর অন্যান্য খাবার খাওয়া শুরু করে। তাই এই খেজর অনেক উপকারী এবং প্রয়োজনে একটি ফল। এই খেজুরের যেরকম উপকারিতা রয়েছে অনেক সেরকম এর কিছু অপকারিত রয়েছে তাই আজকে আমরা খেজুরের উপকারিতা এবং অপকারিতা নিয়ে আলোচনা করব।
  • উপকারিতা
খেজুর অত্যন্ত ক্যালরি যুক্ত একটি খাবার এবং এর মধ্যে বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন মিনারেল আস সমৃদ্ধ থাকে। খেজুরে ভিটামিন এ ভিটামিন বি ভিটামিন কে উপাদান থাকে যা আমাদের শরীরে পুষ্টি প্রদানের সাহায্য করে।বিশেষজ্ঞ ডাক্তারেরা প্রতিদিন আস যুক্ত খাবার খাওয়ার জন্য বলে থাকে আর আজ জাতীয় খাদ্য হিসেবে খেজুর সবচাইতে ভালো।

তাছাড়া সারাদিনের জন্য একটি খেজুর আমাদের চোখে সুস্থতা দান করে থাকে।খেজুরে প্রচুর পরিমাণ মিনারেল যেমন সিরিলিয়াম জিংক ইত্যাদি থাকায় তা আমাদের হারের গঠনে সাহায্য করে এবং হাড়ের বিভিন্ন সমস্যা থেকে আমাদেরকে রক্ষা করে।

এছাড়া খেজুরে প্রচুর পরিমাণ আয়রন রয়েছে যা আমাদের শরীরে শক্তি সঞ্চয় করে থাকে।একটি খেজুর থেকে আমরা ২৩ ক্যালোরি পেয়ে থাকি যার ফলে ওজন বাড়ানোর জন্য খেজুর অনেক বেশি উপকারী একটি ফল।
  • অপকারিতা
খেজুরে অসংখ্য পরিমাণ উপকারিতা এবং পুষ্টিগুণ থাকলেও কিছু পরিমাণ অপকারিতা এর রয়েছে। বিশেষ করে যাদের ডায়াবেটিস রয়েছে তাদের মিষ্টি জাতীয় খাবার থেকে দূরে থাকতে বলে ডাক্তাররা। কিন্তু খেজুর প্রচুর পরিমাণে মিষ্টি হওয়ায় এটি ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য অনেক ক্ষতিকারক হতে পারে এতে তাদের ডাইবেটিস বেড়ে যেতে পারে।

আর ডায়াবেটিস হলে তাদের শরীরে বিভিন্ন রকম সমস্যা দেখা দিতে পারে। এছাড়াও যাদের শরীরে পটাশিয়ামের পরিমাণ বেশি তাদের বেশি খেজুর খাওয়া মোটেও ভালো নয়।

সকালে খেজুর খাওয়ার উপকারিতা

খেজুর খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা রয়েছে অনেক অপকারিতার থেকে উপকারিতায় বেশি রয়েছে বিশেষ করে সকালে খেজুর খাওয়ার উপকারিতা অনেক। খেজুর খাওয়া আমাদের স্বাস্থ্যের এবং ত্বকের জন্য অনেক উপকারী। এটি আমাদের শরীরে প্রচুর পরিমাণ শক্তির যোগান দেয়।
 ডাক্তারদের মতে প্রতিদিন সকালে একটি করে খেজুর খেলে শরীরে অনেক পরিমাণ শক্তি তৈরি হয়। তাই আজকে আমরা বলব যে সকালে খেজুর খেলে কি কি উপকারিতা হয়।
  • কোষ্ঠকাঠিন্য দূর
খেজুরে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার যা আমাদের কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সাহায্য করে। অনেক খেজুর রয়েছে যেগুলো অনেক শক্ত হয়ে থাকে তাই সেই খেজুরগুলোকে সারারাত পানিতে ভিজিয়ে সকালে খালি পেটে খেলে বদহজম এবং কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে রক্ষা পাওয়া যায়।
  • ওজন নিয়ন্ত্রণ করে
খেজুরে অনেক পরিমাণ ফাইবার থাকাই এটি আমাদেরকে ওজন কমাতে সাহায্য করে। এছাড়াও কোন প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তি যদি একসাথে দুই তিনটা খেজুর খাওয়ার পর এক গ্লাস পানি খায় তাহলে তারা কোন কিছু খেতে ইচ্ছা করবে না আর এভাবে আপনি চাইলে যে কোন খাওয়ার থেকে নিয়ন্ত্রণে এসে ওজন কমাতে পারেন।
  • ত্বককে ভালো রাখে
ভয়েস বাড়ার সাথে সাথে আমাদের মুখে অনেক রকম দাগ দেখা যায়। খেজুরে রয়েছে ভিটামিন বি যা এ ধরনের দাগ দূর করতে অনেক বেশি কার্যকরী ভূমিকা পালন করে।
  • কাশি দূর করে
অনেকের রয়েছে রাতে এবং সকালবেলাতে শুকনো কাশি হয়। যাদের এই সমস্যা রয়েছে তারা প্রতিদিন সকালে যদি একটি করে খেজুর খায় তাহলে তাদের এই সমস্যাটি দূর হয়ে যাবে।
তাই পরিশেষে বলা যায় যে আপনি যদি প্রতিদিন সকাল বেলায় খালি পেটে একটি করে খেজুর খান তাহলে আপনি এসব রোগ থেকে দূরে থাকবেন।

খেজুর খাওয়ার নিয়ম

আমরা প্রায় সবাই জানি যে খেজুর খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা রয়েছে কিন্তু আপনি যদি খেজুর খাওয়ার সঠিক উপকারিতা পেতে চান তাহলে তাকে খেজুর খাওয়ার নিয়ম জানতে হবে যদি সঠিক সময়ে খেজুরটি খেতে পারেন তাহলে আপনি অবশ্যই এর উপকারিতা পাবেন।

 খেজুরের অনেক পুষ্টি উপাদান রয়েছে আপনি যদি খেজুর থেকে সম্পূর্ণ পুষ্টি উপাদান পেতে চান তাহলে এটি আপনাকে কিছু নিয়ম মেনে খেতে হবে।
যে কোন সময় অথবা সব সময় খেলে এটি সম্পূর্ণ পুষ্টিগুণ নাও মিলতে পারে তাই সময় বুঝে এবং নিয়ম মেনে এটি খেতে হবে। তাই আজকে আমরা আপনাদের খেজুর খাওয়ার কিছু সঠিক নিয়ম সম্পর্কে বলবো।

১। সকালবেলা উঠে খালি পেটে আপনি খেজুর সেবন করতে পারেন এতে করে আপনার কোষ্ঠকাঠিন্য, গ্যাসটিক ইত্যাদি সমস্যা দূর হয়ে যাবে।

২। সকাল ১১ টা থেকে ১২টার মধ্যেও আপনি খেজুর খেতে পারেন এটিও আপনার শরীরের জন্য অনেক উপকারী হবে।

৩। বিকালে চারটা থেকে পাঁচটার মধ্যেও আপনি খেজুর খেতে পারেন এতে করে এটি আপনার শরীরের বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করবে।

৪। এছাড়াও আপনি যদি জিম করে থাকেন তাহলে আপনি দুধের সাথেও খেজুর খেতে পারবেন এতে করে এটি আপনার শরীরে অনেক বেশি শক্তির যোগান দিবে।

৫। আপনি চাইলে খেজুর কে গুঁড়ো করে এটি চিনি তৈরি করেও খেতে পারেন এতে করে এটি আপনার শরীরের প্রোটিনের চাহিদা পূরণ করবে।

৬। একজন সুস্থ সবল ব্যক্তির প্রতিদিন এক থেকে দুইটি করে খেজুর খাওয়া শরীরের জন্য অনেক ভালো কিন্তু আপনি যদি জিম অথবা মেহনতের কোন কাজ করেন তাহলে আপনার জন্য দিনে চার থেকে পাঁচটা খেজুর খাওয়া উচিত।

দুধ ও খেজুর খাওয়ার উপকারিতা

খেজুর খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে আর্টিকেলের উপর অংশে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে তাই এবার দুধ ও খেজুর খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে এই অংশে বিস্তারিত আলোচনা করা। খেজুর হচ্ছে সবচেয়ে পুষ্টিকর এবং উপকারী একটি ফল।

 এটি আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সঃ এর অনেক প্রিয় একটি খাবার ছিল। খেজুর সবচেয়ে বেশি উৎপন্ন হয় সৌদি আরবে সেখানে বিভিন্ন ধরনের খেজুর পাওয়া যায় সবচেয়ে বিখ্যাত খেজুর হচ্ছে আজওয়া খেজুর। যা সৌদি আরবে উৎপন্ন হয়ে থাকে।
কোন ব্যক্তি যদি প্রতিদিন দুই থেকে তিনটি খেজুর সেবন করে তাহলে তার কোন রোগ বালাই হবে না। খেজুরের সাথে যদি আপনি দুধ মিশিয়ে খান তাহলে এটি আপনার জন্য আরো বেশি উপকারী হবে কারণ দুধে রয়েছে আলাদা পুষ্টিগুণ এবং খেজুরে রয়েছে আলাদা পুষ্টিগুণ দুইটি একসাথে খেলে এটির উপকারিতা এবং পুষ্টিগুণ আরো বেশি বেড়ে যায়।

চারটি মাঝারি ওজনের খেজুর যদি আপনি খেতে পারেন তাহলে পাবেন ৯০ ক্যালরি 1 গ্রাম প্রোটিন ১৩ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম আট গ্রাম ফাইবার এবং এক গ্লাস গরুর দুধে রয়েছে ৬০% প্রোটিন ২১% ভিটামিন এ ২৫% ক্যালসিয়াম ৫৬ পার্সেন্ট রয়েছে ভিটামিন ডি। তাই আপনি যদি দুধ এবং খেজুর কে একসাথে করে খান তাহলে আপনি এইসব পুষ্টিগুন পাবেন।

বিশেষজ্ঞদের মতে রাতে ঘুমানোর আগে গরম দুধ এবং খেজুর আমাদের শরীরের জন্য অনেক বেশি উপকারী। আচ্ছা ডায়াবেটিস রোগীরা নিঃসন্দেহে এই দুধ এবং খেজুর একসঙ্গে খেতে পারবে এতে করে তাদের ডায়াবেটিসের কোন সমস্যা হবে না বরং তাদের রক্তের শর্করা মাত্রা নিয়ন্ত্রনে আসবে।

এছাড়াও দুধ এবং খেজুর একসাথে খাওয়ার ফলে আপনাদের দৃষ্টি শক্তি আরো বৃদ্ধি পাবে বিশেষ করে যাদের অঞ্জনি হয় এবং যারা কম্পিউটারে সারারাত কাজ করে তাদের জন্য এটি আরো বেশি কার্যকারী। এছাড়াও যাদের যৌন বিষয়ক বিভিন্ন সমস্যার রয়েছে তাদের জন্য দুধ এবং খেজুর অনেক উপকারী একটি খাবার।

বিশেষ করে বিয়ের পর অনেক ছেলে মেয়ে দুধ এবং খেজুর খেতে পারে এতে করে তাদের এনার্জি অনেক বেড়ে যাবে।

খেজুর খাওয়ার উপযুক্ত সময়

খেজুর খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা রয়েছে অনেক কিন্তু আপনি যদি খেজুর খাওয়ার উপযুক্ত সময় নির্ধারণ করতে পারেন তাহলে আপনি অবশ্যই এটি সঠিক উপকারিতা পাবেন। স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকারী একটি ফল হচ্ছে খেজুর।

 এই ফলটিতে অ্যান্টি-অক্সাইড ছাড়া রয়েছে ভিটামিন বি ভিটামিন এ সালফার প্রোটিন ফাইবার ইত্যাদি। তাই প্রতিটি মানুষের প্রতিদিন এনার্জির জন্য এক থেকে দুইটি খেজুর খাওয়া খুবই প্রয়োজন। আমাদের নবীজি হযরত মুহাম্মদ সাঃ তিনি খেজুর খেতে অনেক বেশি পছন্দ করতেন।
এবং তিনি যে খেজুরটি খেলেন সেটি হল আরবের সবচাইতে বিখ্যাত খেজুর আজুয়া খেজুর। হাদিসে এসেছে কোন ব্যক্তি যদি প্রতিদিন পাঁচটি করে আজুয়া খেজুর সেবন করে তাহলে কোন বিষধর সাপের বিষ সেদিন তার শরীরে কাজ করবে না।

খেজুরে রয়েছে অনেক পরিমান পুষ্টিগুণ এবং এটি খাওয়ার কিছু উপযুক্ত সময় এবং নিয়ম রয়েছে যা মেনে যদি আপনি খেতে পারেন তাহলে আপনি অনেক উপকৃত হবেন। খেজুর খাওয়ার সবচাইতে সঠিক সময় হচ্ছে সকালবেলায় খালি পেটে খাওয়া এতে করে কোষ্ঠকাঠিন্য এবং গ্যাসটিকের বিভিন্ন সমস্যা থেকে আপনি দূরে থাকতে পারবেন।

খেজুর প্রতিদিন নিয়ম করে চার থেকে পাঁচটা খেতে হবে আপনি যদি প্রতিদিন অতিরিক্ত খেজুর খান তাহলে আপনার পেটে সমস্যা হতে পারে।

তাই বলা যায় যে খেজুর খাওয়ার উপযুক্ত সময় হচ্ছে সকালবেলায় খালি পেটে খাওয়া। এছাড়াও আপনি চাইলে দশটা এগারোটা এবং বিকেল বেলায় চারটা পাঁচটার দিকেও এটি খেতে পারেন। কোন কিছু খাওয়ার এক ঘন্টা আগে অথবা পরে খেজুর খাওয়া সবচেয়ে বেশি উত্তম।

লেখকের মন্তব্য

আপনারা যদি আমাদের এই আর্টিকেলটি পড়ে খেজুর খাওয়ার বিভিন্ন রকম উপকারিতা সম্পর্কে জেনে যদি উপকৃত হয়ে থাকেন তাহলে এ আর্টিকেলটি অন্যদেরকেও শেয়ার করুন এবং তাদেরকেও উপকৃত করুন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

rsfahim it নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url