এইডস রোগের প্রতিকার লক্ষণ এবং এর চিকিৎসা


আপনি কি এইডস রোগ নিয়ে অনেক চিন্তিত আছেন? তাহলে আপনাকে এইডস রোগের প্রতিকার এবং এইডস রোগের লক্ষণ প্রকাশ পায় কত মাসে এ সম্পর্কিত আমাদের আর্টিকেলটি পড়তে হবে।
এইডস রোগের প্রতিকার


এছাড়াও আজকেরে আর্টিকেলে ছেলে ও মেয়েদের এইডস রোগের লক্ষণ গুলো কি কি এবং এ রোগের চিকিৎসা পদ্ধতি কেমন এই সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।

সূচিপত্রঃ এইডস রোগের প্রতিকার লক্ষণ এবং এর চিকিৎসা

এইডস রোগের প্রতিকার

এইডস রোগের প্রতিকার সম্পর্কে জানার আগে এইডস রোগ কি এবং এটি কিভাবে ছড়ায় এ সম্পর্কে আপনাদেরকে জানতে হবে। এইডস রোগ মূলত এইচআইভি নামে এক ধরনের ভাইরাসের কারণে হয়ে থাকে যাকে ইংরেজিতে Human Immunodeficiency Virus বলা হয়ে থাকে। 
এইডস এ আক্রান্ত রোগীর রক্ত লালা দৈহিক মিলন ইত্যাদির মাধ্যমে এই রোগটি ছড়ায় এই রোগে যখন কোন মানুষ আক্রান্ত হয় তখন সে প্রথমদিকে কোন কিছু বুঝতে পারে না পরে আস্তে আস্তে সে বুঝতে পারে। 

এটি এমন একটি রোগ এ রোগে কেউ যদি আক্রান্ত হয় তাহলে তার শরীরে সকল রকম রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায় যার ফলে যে কোন ধরনের ছোট অসুখ যেমন সর্দি কাশি জ্বর ইত্যাদি হলে সহজে ভালো হয় না আবার অনেক অংশে এসব ছোট ছোট অসুখ এর ফলে অনেকে মারাও যায়। 

তাই আমাদের প্রত্যেকেরই উচিত এ রোগটি থেকে সাবধানতা অবলম্বন করা যাতে করে এ রোগটি আমাদের না হয় তাই আজকেরে এই আর্টিকেলে আমরা এই রোগের কিছু প্রতিকার সম্পর্কে আলোচনা করব।

১। অন্য কারোর রক্ত নিজের শরীরে নেওয়ার আগে সে রক্তে এইচআইভি আছে কিনা সেটি পরীক্ষা করে দেখে নিতে হবে।

২। এবং ইনজেকশন নেওয়ার ক্ষেত্রে ইনজেকশনের সুচটা পরিবর্তন করে নিতে হবে।

৩। বিয়ে করা ব্যতীত কারো সাথে যৌন সম্পর্কে লিপ্ত হওয়ার যাবেনা এছাড়াও বিভিন্ন যৌনবাহিত রোগ প্রতিরোধের জন্য আপনি চাইলে কনডম ব্যবহার করতে পারেন।

৪। এছাড়াও এইডস প্রতিরোধের জন্য মানুষের মধ্যে শিক্ষা সচেতনতা এবং সঠিক জ্ঞান থাকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

৫। এবং সব সময় চেষ্টা করবেন ধর্মীয় অনুশাসন গুলো মেনে চলা বিবাহিত বহির্ভূত কোনরকম যৌন সম্পর্ক করা যাবে না কারণ এটি এইডস হওয়ার মূল কারণ।

৬। এইচআইভিতে আক্রান্ত মায়ের বুকের দুধ সন্তানকে পান করতে দেওয়া যাবে না এতে করে সন্তানের এ রোগটি হতে পারে।

এইডস রোগের লক্ষণ প্রকাশ পায় কত মাসে

কিভাবে এইডস রোগের প্রতিকার করতে হয় এ সম্পর্কে আপনারা হয়তোবা অনেকেই আর্টিকেলের উপরের অংশ থেকে জেনে থাকবেন কিন্তু এইডস রোগের লক্ষণ প্রকাশ পায় কত মাসে এ সম্পর্কে আপনার হয়তোবা অনেকেই জানেন তাই আজকের আর্টিকেলের এই অংশে এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানানোর চেষ্টা করব। 

এইচআইভি এক ধরনের ভাইরাস থেকে মূলত এই এইডস রোগের জন্ম এ রোগটি খুব ভয়ানক একটি রোগ এ রোগে একবার কেউ আক্রান্ত হলে সে আর বাঁচতে পারে না। এই ভাইরাসটা মূলত প্রথম দিকে যখন আমাদের শরীরে প্রবেশ করে তখন আমাদের শরীরে নরমাল যেগুলো অসুখ রয়েছে যেমন সর্দি কাশি জ্বর ইত্যাদি এগুলো দেখা যায় এরপর এগুলো কয়েক সপ্তাহ পর ভালো হয়ে যায়। 

এইচআইভিতে আক্রান্ত রোগী প্রায় ৭ ৮ বছর কোন কিছুই বুঝতে পারে না কিন্তু এরপরে এইডস এ আক্রান্তের যে মূল সিমটম সেগুলো দেখা যায় যেমন ঘন ঘন ডায়রিয়া হওয়া এবং সামান্য জ্বর হলে দুই তিন মাস সেটি ভালো না হওয়া ইত্যাদি। 
এইচআইভি এই ভাইরাসটি মূলত আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধের যে টি সেল রয়েছে সেখানে সরাসরি আক্রমণ করে যার ফলে আমাদের শরীরে তখন আর কোন রোগ প্রতিরোধ করার ক্ষমতা থাকে না যার কারণে ছোট একটি রোগ হলেও সেটি সহজে ভালো হয় না। যার ফলে এ সময় যেকোনো ধরনের ছোটখাটো রোগ হলেও মানুষ মৃত্যুবরণ করে।

এইডস রোগের লক্ষণ

এইডস রোগের লক্ষণ আপনার মধ্যে আছে কিনা এই নিয়ে আপনি কি অনেক চিন্তিত রয়েছেন তাহলে আজকের আর্টিকেলটি আপনার জন্য। এইচআইভি নামক এক ধরনের ভাইরাস থেকে এই রোগটি হয়ে থাকে এছাড়াও এই ভাইরাসটির মূল কারণ হচ্ছে অবৈধ ভাবে কারো সাথে যৌন সম্পর্কে লিপ্ত হওয়া।

এইচআইভি কারো শরীরে পজিটিভ আসলে তার মধ্যে বিভিন্ন ধরনের লক্ষণ দেখা যায় মূলত এই লক্ষণগুলো প্রথমদিকে সেভাবে দেখা যায় না কিন্তু ধীরে ধীরে কয়েক বছর পর এগুলো বাড়তে থাকে। তাই চলুন জেনে নেয়া যাক এইডস রোগের সকল লক্ষণ গুলো সম্পর্কে।

১। কোন কারন ছাড়া কোন ব্যক্তি যদি সব সময় ক্লান্তি ভাব অনুভব করে তাহলে তাকে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব এইচআইভি পরীক্ষা করাতে হবে।
২। যেকোনো তাপমাত্রাতে ঘুমানোর সময় অতিরিক্ত ঘাম হওয়া এইচআইভি রোগের একটি লক্ষণ।

৩। কোন কারণ ছাড়া সব সময় সর্দি কাশি জ্বর হওয়া এবং কোন খাবার খাওয়ার পর বমি বমি ভাব হওয়া এইচআইভির লক্ষণ।

৪। অতিরিক্ত পানি খাবার পরও যদি আপনার গলা শুকনো থাকে পানি খেতে মন চায় তাহলে বুঝতে হবে এটিও এইচআইভির একটি লক্ষণ।

৫। এবং তাকে বিভিন্ন ধরনের রেস জাতীয় জিনিস বের হয় এবং এগুলো সহজে ভালো হয় না এটিও একটি লক্ষণ হতে পারে।

৬। এ রোগের আরেকটি বড় লক্ষণ হচ্ছে দিন দিন ওজন কমে যাওয়া আপনি যখন এ রোগে আক্রান্ত হবেন তখন খেয়াল করবেন আপনার ওজন দিন দিন কমে যাবে।

৭। ঘন ঘন কোন কারণ ছাড়া অতিরিক্ত মাথাব্যথা করাও এই টাইপের একটি লক্ষণ হতে পারে।

৮। কোন রকম কঠিন কাজ না করেও যদি আপনার শরীরে অনেক বেশি ব্যথা অনুভব হয় তাহলে বুঝতে হবে এটি এইচআইভির একটি লক্ষণ।

৯। যেকোন আবহাওয়াতেও যদি আপনার ঠান্ডা লেগে যায় তাহলে এটিও এইচআইভির একটি লক্ষণ হতে পারে।

তাই পরিশেষে বলা যায় যে এইচআইভি হচ্ছে এমন একটি রোগ যা আপনার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা থাকে একবারে ধ্বংস করে দেয়। যার ফলে আপনার ছোটখাটো কোন রোগ হলে সেটি আর ভালো হতে চায় না আর সে সময়ে আপনি বুঝতে পারবেন যে আপনি এইচআইভি রোগে আক্রান্ত।

পুরুষদের মধ্যে এইচআইভি লক্ষণ

বর্তমানে সবচাইতে ভয়ানক একটি রোগ হচ্ছে এইডস মূলত নারী পুরুষ উভয়েরই এই রোগটি হয়ে থাকে কিন্তু নারী ও পুরুষের এইচআইভি সংক্রমণে কিছুটা আলাদা লক্ষণ দেখা দিয়ে থাকে। তাই আজকের আর্টিকেলে আমরা আপনাদেরকে জানাবো যে পুরুষদের মধ্যে এইচআইভি লক্ষণ গুলো কেমন হয়ে থাকে।

১। বিনা কারণ ছাড়া আপনার যদি শরীরে ক্লান্তি ভাব অনুভব হয় তাহলে এটি আপনার এইচআইভির লক্ষণ হতে পারে।

২। এবং সামান্য পরিমাণ সর্দি কাশি জ্বর হলে যদি সহজে ভালো না হয় তাহলে এটিও আপনার এইচআইভির লক্ষণ হতে পারে।

৩। এছাড়াও পুরুষদের ক্ষেত্রে রাতে ঘুমানোর সময় যে কোন আবহাওয়াতেই উদ্দিরিক্ত ঘেমে যাওয়াও এইচআইভির লক্ষণ গুলোর একটি।

৪। এবং সব সময় অতিরিক্ত ঠান্ডা অনুভব করা এটিও এইচআইভির একটি লক্ষণ হতে পারে।
৫। এবং প্রতিনিয়ত প্রচন্ড পরিমাণ মাথা ব্যথা করা যা এইচআইভির একটি লক্ষণ।

৬। এছাড়াও এইচআইভি আরেকটি বড় লক্ষণ হচ্ছে ধীরে ধীরে ওজন কমে যাওয়া।

মহিলাদের মধ্যে এইচআইভি লক্ষণ

এইডস রোগের প্রতিকার সম্পর্কে আমরা উপরের অংশে বিস্তারিত আলোচনা করেছি তাই এবার মহিলাদের মধ্যে এইচআইভি লক্ষণ গুলো কি কি এ সম্পর্কে আলোচনা করব। 

প্রত্যেকটি ছেলে এবং মেয়ে প্রত্যেকেরই এইচআইভির লক্ষণ একই রকম কিছুটা ভিন্নতা রয়েছে তাই এ সম্পর্কে এখানে বিস্তারিত আলোচনা করব। তাই চলুন কথা না বাড়িয়ে জেনে নেওয়া যাক যে মহিলাদের এইচআইভি হলে কি কি লক্ষণ দেখা যায়।

১। মহিলারা এইচআইভি ভাইরাসের আক্রান্ত হলে তারা তাদের শরীরে অনেক জ্বর অনুভব করে এবং তাদের দুটি স্তন অনেক বেশি ব্যথা করে।

২। এছাড়াও কোনো কারণ ছাড়া ঘন ঘন বমি ভাব হওয়াও এইচআইভি অন্যতম একটি লক্ষণ।
৩। বর্তমানে গর্ভকালীন অনেক মহিলাদের এইচআইভি হচ্ছে যার ফলে পরবর্তীতে মায়ের দুধ পান করার জন্য ছোট বাচ্চার ও এইচআইভি ধরা পড়ছে।

৪। মহিলাদের ক্ষেত্রে এইচআইভির আরেকটি লক্ষণ হচ্ছে ধীরে ধীরে ওজন কমে যাওয়া।

৫। এছাড়াও বিনা কারণে ঘন ঘন ঠান্ডা লাগা এবং সর্দি কাশি হওয়া এইচআইভির আরেকটি বড় লক্ষণ।

এইডস রোগের চিকিৎসা

আমাদের প্রত্যেকের উচিত এইডস রোগের প্রতিকার করা কারণ এটি বিশ্বব্যাপী অনেক ভয়ানক একটি রোগ এছাড়াও কেউ যদি এইডস রোগে আক্রান্ত হয় তাহলে সে ক্ষেত্রে ভয়ের কোন কারণ নেই কারণ বর্তমানে বাংলাদেশ সহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এইডস রোগের চিকিৎসা অনেক ভালো হচ্ছে। 

একটি সময় ছিল যখন মানুষ মনে করত এইডস রোগ হওয়া মানে মৃত্যু কিন্তু বর্তমান সময়ে একজন রোগী ও সুস্থ সকল ভাবে জীবন যাপন করতে পারবে। যদিও এখন পর্যন্ত এইডস রোগ ভালো একবারে ভালো হয়ে যাবে এমন কোন মেডিসিন তৈরি হয়নি তারপরও এমন কিছু মেডিসিন আছে যেগুলোর মাধ্যমে একজন এইডস রোগেও সাধারণভাবে জীবন যাপন করতে পারবে। 
এইডস রোগের মূল কারণ হচ্ছে এইচআইভি ভাইরাস আর এই ভাইরাসটি যখন একটি মানুষের শরীরে প্রবেশ করে তখন এটি সরাসরি মানুষের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার যে টিসেল থাকে সেখানে আক্রমণ করে যার ফলে মানুষের একটি মানুষের শরীরে রোগ প্রতিরোধ করার ক্ষমতা একেবারে শূন্যে নেমে আসে। 

আর বর্তমানে বাংলাদেশে এইডস রোগীর চিকিৎসার ক্ষেত্রে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করার জন্য একটি ট্যাবলেট তৈরি করা হয়েছে যার যার ফলে ট্যাবলেটটি এইডস রোগীদের শরীরে প্রবেশ করার পর তাদের শরীরে টিসেলকে শূন্য থেকে একেবারে ১০০ পারসেন্ট বৃদ্ধি করে দেয়। 

আর তাই এ সময় তাদের শরীরে বিভিন্ন ধরনের পরিবর্তন আসে যেমন জ্বর আসা বমি বমি ভাব করা ইত্যাদি কিন্তু কিছুক্ষণ পর এটি ঠিক হয়ে যায় এবং সে সুস্থ ভাবে জীবন যাপন করতে পারে।

লেখকের শেষ মন্তব্য

এইডস রোগের প্রতিকার লক্ষণ এবং এর চিকিৎসা সম্পর্কে আজকের এই আর্টিকেলে বিস্তারিত আলোচনা করেছি তাই আজকের এই আর্টিকেলটি পড়ে আপনাদের যদি ভালো লেগে থাকে তাহলে আর্টিকেলটিতে অবশ্যই একটি লাইক এবং কমেন্ট করবেন। এবং আর্টিকেলটি আপনাদের আশেপাশে সবাইকে শেয়ার করবেন যাতে করে তারা সবাই এইডস রোগ থেকে দূরে থাকতে পারে।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

rsfahim it নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url