সকল ব্যবসায়ী এবং সরকারি বেসরকারি চাকরিজীবীদের হোম লোন নেওয়ার নিয়ম

বেসরকারি ও সরকারি চাকরিজীবীদের হোম লোন নেওয়ার উপায় কি? হোম লোনের সুদের হার কত? এবং হোম লোন ক্যালকুলেটর বাংলাদেশ বলতে কী বোঝায় এ সম্পর্কে আপনি যদি জানতে চান তাহলে আজকের আর্টিকেলটি আপনার জন্য।

সরকারি চাকরিজীবীদের হোম লোন


এছাড়াও হোম লোন নেওয়ার জন্য আপনার কি কি কাগজপত্রের প্রয়োজন হবে এবং কোন ব্যাংককে কত টাকা হলে ঋণের সুদ নেওয়া হয় এ সম্পর্কে আমরা আজকের আর্টিকেলে বিস্তারিত আলোচনা করব।

সূচিপত্রঃ সকল ব্যবসায়ী এবং সরকারি বেসরকারি চাকরিজীবীদের হোম লোন নেওয়ার নিয়ম

সরকারি চাকরিজীবীদের হোম লোন

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের আওতাধীন সকল সরকারি চাকরিজীবীদের হোম লোন দেওয়া হয়ে থাকে তাই আপনি যদি একজন সরকারি চাকরিজীবী হয়ে থাকেন তাহলে আপনি চাইলে সরকারি বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে হোম লোন নিতে পারবেন। 
কিন্তু এ লোন নেওয়ার জন্য বেশি কিছু নিয়ম রয়েছে যেগুলো আপনাকে অনুসরণ করতে হবে সেটি হল আপনি যে প্রতিষ্ঠানে সরকারি চাকরি করেন সেখানে চাকরি করার 5 বছরের পূর্ণ অভিজ্ঞতা থাকতে হবে এবং বয়সসীমা সর্বোচ্চ ৫৮ বছর পর্যন্ত থাকতে হবে। 

এছাড়াও আপনার মাসিক বেতনের সকল ডকমেন্টস ব্যাংকের নিকট দেখাতে হবে। যারা সরকারি চাকরি করে তাদের প্রত্যেককেই তাদের বেতনের গ্রেড বিভাগ জেলা এবং এলাকা অনুযায়ী একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা ঋণ করতে পারে তাই চলুন জেনে নেয়া যাক সরকারি চাকরির প্রতিটি গ্রেডে কত টাকা করে ঋণ নেওয়া যায়।

১। আপনার বেতন স্কেল যদি পঞ্চম গ্রেড এর হয়ে থাকে এবং আপনি কোন মহানগর বা সিটির বাসিন্দা হয়ে থাকেন তাহলে আপনি সর্বোচ্চ ৭৫ লাখ টাকা এবং লোন নিতে পারবেন। এছাড়া আপনি যদি জেলা অথবা অন্যান্য এলাকার হয়ে থাকেন তাহলে সেক্ষেত্রে আপনি ৫০ থেকে ৬০ লাখ টাকা নিতে পারবেন।

২। এবং ষষ্ঠ গ্রেড থেকে নবম গ্রেডের মধ্যে যদি আপনার বেতন হয় সে ক্ষেত্রে আপনি সিটি এবং জেলার উপর ভিত্তি করে সর্বনিম্ন ৪৫ লাখ টাকা থেকে ৬৫ লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণ নিতে পারবেন।

৩। দশম গ্রেড থেকে ১৩ তম গ্রেড পর্যন্ত আপনি সর্বনিম্ন ৩০ লাখ টাকা থেকে ৫৫ লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণ করতে পারবেন।

৪। এবং সর্বশেষ ১৪ তম গ্রেড থেকে ২০তম গেট পর্যন্ত আপনি সর্বনিম্ন ২০ লক্ষ টাকা থেকে ৪০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ঋণ করতে পারবেন।

হোম লোন ক্যালকুলেটর বাংলাদেশ

সরকারি চাকরিজীবীদের হোম লোন সম্পর্কে আর্টিকেলের উপরের অংশে আমরা বিস্তারিতভাবে আলোচনা করেছি তাই এবার আমরা হোম লোন ক্যালকুলেটর বাংলাদেশ বলতে কী বোঝায় এ সম্পর্কে আমরা বিস্তারিত আর্টিকেলের এই অংশে আলোচনা করব। 

মূলত হোম লোন ক্যালকুলেটর হচ্ছে এমন একটি প্রক্রিয়া যেটির মাধ্যমে আপনি আপনার সুদ ঋণের পরিমাণ ও মাসিক কিস্তির টাকা নির্ধারণ করতে পারবেন। আপনি গুগলে সার্চ দেন তাহলে সেখানে প্রত্যেকটি ব্যাংকেরই হোম লোন ক্যালকুলেটর এর ওয়েবসাইট পেয়ে যাবেন। 
এরপর আপনি যদি সেই ওয়েবসাইটের হোম লোন ক্যালকুলেটর অপশনে ক্লিক করে কত টাকা ঋণ নিতে চান এবং এর সুদের হার কত পারসেন্ট এবং এর মেয়াদ কত বছর এগুলো লিখেন তাহলে কিছুক্ষণ পরে ক্যালকুলেটরে মূল উত্তর আপনি পেয়ে যাবেন।

হোম লোন সুদের হার বাংলাদেশ

সরকারি চাকরিজীবীদের হোম লোন সম্পর্কে আপনারা অনেকেই ইতিমধ্যে জেনে গেছেন কিন্তু হোম লোন করার পরে বাংলাদেশের কোন কোন ব্যাংকে কত % করে সুদের হার নেই এ সম্পর্কে আপনারা অনেকেই জানেন না তাই আজকে তাদের জন্যই আজকের আর্টিকেলের এই অংশটি সাজানো হয়েছে।
বাংলাদেশের প্রায় অনেকগুলো সরকারি বেসরকারি ব্যাংক রয়েছে যেগুলো বাড়ি করার জন্য হোম লোন প্রদান করে থাকে এবং বাংলাদেশের প্রায় সবগুলো ব্যাংকে হোম লোন নেওয়ার নিয়ম প্রায় একই কিন্তু সুদের হার এক একটি ব্যাংকে একেক রকম করে নির্ধারণ করা হয়ে থাকে তাই আজকে আমরা হোম লোন সুদের হার বাংলাদেশ সম্পর্কে আপনাদের সাথে আলোচনা করব।
  • Dutch Bangla Bank : 9.00%
  • Dhaka Bank : 10.50%
  • Islami Bank : 14:00%
  • ab Bank : 12.50%
  • Standard Bank : 12.00%
  • Prime Bank : 11.50%
  • City bank : 11.50%
  • Asia Bank : 10.50%
  • NCC Bank : 8.99%
  • Trust Bank : 9.00%
  • BR AC Bank : 9.50%
  • premier Bank : 10.50%
  • Shahjalal Islami Bank : 11.00%

হাউজ লোন নিতে কি কি কাগজ লাগে

আপনারা হয়তো অনেকেই জানেন বাংলাদেশের সকল পেশার মানুষ এবং বেসরকারি সরকারি চাকরিজীবীদের হোম লোন প্রদান করা হয়ে থাকে যেহেতু বাংলাদেশের প্রায় প্রতিটি ব্যাংকেই হোম লোন দেওয়া হয়ে থাকে তাই হোম লোন নেয়ার জন্য আপনাকে কিছু কাগজপত্র ব্যাংকে জমা দিতে হবে।

এরপর ব্যাংক সে কাগজ গুলোকে ভালো করে পর্যবেক্ষণ করে দেখবে যে আপনি এ লোন পাওয়ার যোগ্য কিনা তাই চলুন দেরি না করে জেনে নেয়া যাক যে হাউজ লোন নিতে কি কি কাগজ লাগে।

১। কোথায় আপনার জাতীয় পরিচয় পত্রের একটি ফটোকপি পাসপোর্ট সাইজের একটি রঙিন ছবির প্রয়োজন হবে।

২। এরপর আপনার বাড়ির বিদ্যুৎ বিল, গ্যাস বিল, পানির বিল ইত্যাদি ফটোকপির প্রয়োজন হবে।
৩। এরপর আপনি যদি একজন চাকরিজীবী অথবা ব্যবসায়িক হয়ে থাকেন তাহলে আপনার আয়-ব্যয়ের একটি প্রমাণ পত্র ব্যাংকের নিকট জমা দিতে হবে।

৪। এবং এরপর আপনার সম্পত্তির দলিল পত্রের প্রয়োজন হবে।

গ্রামে বাড়ি করার জন্য ব্যাংক লোন

যেহেতু বাংলাদেশের সকল ব্যবসায়ীদের ও বেসরকারি সরকারি চাকরিজীবীদের হোম লোন দেওয়া হয়ে থাকে তাই আপনি চাইলে গ্রামে বাড়ি করার জন্য ব্যাংক লোন করতে পারবেন কিন্তু শহরের তুলনায় গ্রামে বাড়ি করার জন্য লোন নেওয়াটা একটু কষ্টকর হয়ে যায়। 

কারণ আপনি যদি ব্যাংক থেকে লোন নিয়ে শহরে একটি বাড়ি তৈরি করেন তাহলে সে বাড়িটি আপনি ভাড়া দিয়ে ব্যাংকের টাকা শোধ করতে পারবেন সে ক্ষেত্রে ব্যাংক আপনাকে সহজেই লোন দিয়ে দিবে। কিন্তু আপনি যদি গ্রামে বাড়ি করার জন্য লোন নেন তাহলে আপনার অবশ্যই বৈধ একটি চাকরি অথবা ব্যবসা থাকতে হবে। 
আপনি যদি কোথাও চাকরি করেন তাহলে সেটির কাগজপত্র ব্যাংকে জমা দিতে হবে আর যদি ব্যবসা করেন তাহলে আপনার ব্যবসার ট্রেড লাইসেন্স ব্যাংকে জমা দিতে হবে। এর সাথে আপনার কিছু কাগজপত্রের প্রয়োজন হবে যেমন ভোটার আইডি কার্ড, পাসপোর্ট সাইজের ছবি, এবং আপনার সম্পত্তির দলিল পত্র। 

এবং এ সকল কাগজ পত্র যখন আপনি ব্যাংকে জমা দিবেন তখন তারা সবকিছু বিবেচনা করে আপনাকে বাড়ি করার জন্য লোন দিবে এবং এ লোনের টাকাটি আপনাকে অবশ্যই তাদের সুদ হিসেবে প্রতিমাসে পরিশোধ করতে হবে।

লেখকের মন্তব্য

প্রিয় পাঠক বৃন্দ আজকে আমরা আপনাদের সামনে খুব গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছি আর তা হল হোম লোন কিভাবে পাওয়া যায় আমাদের মধ্যে অনেকেই রয়েছে যারা নতুন একটি বাড়ি তৈরি করতে চাই কিন্তু তার কাছে সে পরিমাণ অর্থ না থাকায় সেটি করতে পারে না। 

তাই তাদের সুবিধা অর্থে আমরা আজকের এই আর্টিকেলটিতে হোম লোন কিভাবে পাওয়া যায় এ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেছি তাই আশা করি আর্টিকেলটি পড়ার পর আপনি অবশ্যই উপকৃত হয়েছেন। তাই এ ধরনের আরো নতুন নতুন তথ্যমূলক আর্টিকেল পড়তে আমাদের ওয়েব স্যারের সাথে যুক্ত থাকবেন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

rsfahim it নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url