সিরাজের সাথে ইংরেজদের বিরোধের কারণ-পলাশীর যুদ্ধের কারণ ও ফলাফল
সিরাজের সাথে ইংরেজদের বিরোধের কারণ এবং পলাশীর যুদ্ধের কারণ ও ফলাফল সম্পর্কে
জানতে চান তাহলে আমাদের আজকের আর্টিকেলটি আপনাকে সম্পূর্ণভাবে পড়তে হবে।
কারণ আজকের আর্টিকেলে আমরা নবাব সিরাজউদ্দৌলা নাটকের বিভিন্ন দিক নিয়ে আপনাদের
সাথে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করব তাই আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ মনোযোগ সহকারে পড়বেন।
সূচিপএঃ সিরাজের সাথে ইংরেজদের বিরোধের কারণ-পলাশীর যুদ্ধের কারণ ও ফলাফল
সিরাজের সাথে ইংরেজদের বিরোধের কারণ
সিরাজের সাথে ইংরেজদের বিরোধের কারণ কি এ সম্পর্কে আমরা আজকের এই আর্টিকেলে
বিস্তারিত আলোচনা করার চেষ্টা করব তাই আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ পড়ার অনুরোধ রইলো।
নবাব সিরাজউদ্দৌলার সাথে ইংরেজদের বিরোধিতার বেশ কিছু কারণ ছিল আর সে কারণগুলো
হল:
প্রথম কারণ : সিরাজ যখন থেকে বাংলার
নবাব হন তখন থেকেই ইংরেজিটা তার বিরোধিতা করতে শুরু করে এর মূল কারণ হচ্ছে ইস্ট
ইন্ডিয়া কোম্পানি বাংলায় একচেটিয়া ভাবে ব্যবসা করছিল এবং তারা তাদের একটি
আধিপত্য তৈরি করেছিল যার ঘোর বিরোধিতা করেছিল নবাব সিরাজউদ্দৌলা।
দ্বিতীয় কারণ : ইংরেজ এবং ফরাসিরা
বাণিজ্যিক স্বার্থে কলকাতায় দুর্গ সংস্কার করার উদ্যোগ নেয় কিন্তু নবাব
সিরাজউদ্দৌলা এ কাজ করতে তাদেরকে পালন করে যার ফলে ফরাসিরা দুর্গ নির্মাণ কাজ
থেকে বিরত থাকলেও ইংরেজরা নবাবের কথা অমান্য করে কলকাতায় দুর্গ সংস্কার করে যার
ফলে সেখানে ইংরেজদের সাথে নবাবের একটি বিরোধ তৈরি হয়।
তৃতীয় কারণ : এছাড়াও নবাব
সিরাজউদ্দৌলার পরম শত্রু জমিদার রাজবল্লভের পুত্র কৃষ্ণদাসকে ইংরেজ কোম্পানীরা
কলকাতায় আশ্রয় দেয় যার ফলে সে সময় নবাব ইংরেজদের প্রতি অনেক বেশি অসন্তুষ্ট
হন।
চতুর্থ কারণ : সিরাজ বাংলার নবাব
হওয়ার ফলে সিরাজের অনেক নিকটতম আত্মীয় এটি মেনে নিতে পারেনি এর মধ্যে ছিল তার
আপন খালা ঘসেটি বেগম এবং সেনাপতি মীরজাফর যার ফলে এর ইংরেজদের সাথে পরামর্শ করে
নবাবের বিরোধিতা করতে শুরু করেছিল।
পঞ্চম কারণ : নবাব সিরাজউদ্দৌলার কিছু
দুর্বলতা ছিল এর মধ্যে অন্যতম দুর্বলতা হচ্ছে তিনি মানুষকে খুব তাড়াতাড়ি
বিশ্বাস করতেন এবং ক্ষমা করে দিতেন যার পরিনিতি হিসেবে তাকে পরাজিত হতে হয়েছিল।
ষষ্ঠ কারণ : ১৭৫৭ সালে ইংরেজদের সাথে
নবাব সিরাজউদ্দৌলার পলাশীর প্রান্তরে একটি যুদ্ধ হয় যাকে পলাশীর যুদ্ধ বলা হয়ে
থাকে আর এই যুদ্ধে তিনি তার সেনাপতি মীরজাফরের জন্য পরাজিত হন আর যা ছিল ইংরেজ
এবং নবাব সিরাজউদ্দৌলার বিরোধিতার চূড়ান্ত কারণ।
পলাশীর যুদ্ধের কারণ ও ফলাফল
সিরাজের সাথে ইংরেজদের বিরোধের কারণ সম্পর্কে জানতে হলে আপনাকে সর্বপ্রথম পলাশীর
যুদ্ধের কারণ ও ফলাফল সম্পর্কে জানতে হবে আর এই সম্পর্কে আমরা আজকে বিস্তারিত
ভাবে আলোচনা করব।
বাংলার শেষ নবাব ছিলেন নবাব সিরাজউদ্দৌলা তিনি ১৭৫৬ সাল থেকে ১৭৫৭ ক্ষমতায় ছিলেন
তিনি ক্ষমতায় আসার পর তার নিকটবর্তী অনেকেই তার বিরোধিতা করতে শুরু করেছিল তার
মধ্যে অন্যতম ছিল তার খালা ঘষেটি বেগম এবং তার প্রধান সেনাপতি মীরজাফর।
এছাড়াও সে সময় বাংলায় ইংরেজ অর্থাৎ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির একটি আধিপত্য
চলছিল যার ঘর বিরোধিতা করতেন নবাব সিরাজউদ্দৌলা যার ফলে তখন থেকেই ইংরেজদের সাথে
নবাব সিরাজউদ্দৌলার একটি বিরোধ সৃষ্টি হয়েছিল।
আর এভাবেই একসময় ইংরেজ এর প্রধান ক্লাইভ সেনাপতি মীরজাফরকে হাত করে এবং তাকে বলা
হয় নবাব সিরাজউদ্দৌলাকে সিংহাসন থেকে সরিয়ে তাকে নবাব করা হবে আর এই কথায়
মীরজাফর রাজি হয়ে যায়।
পরবর্তীতে পলাশীর প্রান্তে ইংরেজদের সাথে নবাব সিরাজউদ্দৌলা একটি যুদ্ধ সংঘটিত
হয় যে যুদ্ধের নাম ছিল পলাশীর যুদ্ধ এ যুদ্ধে নবাব সিরাজউদ্দৌলার প্রধান সেনাপতি
ছিল মীরজাফর এবং যুদ্ধ যখন শুরু হয় তখন মীরজাফর তার সৈন্যদের নিয়ে সেখান থেকে
চলে আসে।
যার কারণে নবাব সিরাজউদ্দৌলা ইংরেজদের কাছে পরাজিত হয় এবং নবাব সিরাজউদ্দৌলা কে
কারাগারে বন্দী করা হয় এরপর মোহাম্মদী বেগ নামক এক ব্যক্তিকে দিয়ে নবাব
সিরাজউদ্দৌলাকে হত্যা করানো হয়।
নবাব সিরাজউদ্দৌলার পরাজয়ের কারণ
সিরাজের সাথে ইংরেজদের বিরোধের কারণ সম্পর্কে আমরা আর্টিকেলের উপরের অংশে
বিস্তারিত আলোচনা করেছি তাই এবার নবাব সিরাজউদ্দৌলার পরাজয়ের কারণ কি এ সম্পর্কে
বিস্তারিত আলোচনা করার চেষ্টা করব তাই আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়বে।
নবাব সিরাজউদ্দৌলার পরাজয়ের পিছনে বেশ কয়েকটি কারণ রয়েছে এর মধ্যে অন্যতম কারণ
হচ্ছে আপনজনদের ষড়যন্ত্র যেহেতু সিরাজউদ্দৌলার নানার কোন পুত্র সন্তান ছিল না
সেক্ষেত্রে সিরাজউদ্দৌলা ছিল একমাত্র উত্তরসূরী।
আরো পড়ুনঃ আঁশযুক্ত খাবারের তালিকা ও অপকারিতা
এবং সিরাজউদ্দৌলা যখন বাংলার নবাব হন তখন তার বয়স অনেক কম ছিল যার কারণে অনেকেই
সেটি মেনে নিতে পারেনি আর যার ফলে তারা সিরাজউদ্দৌলার বিরুদ্ধে বিভিন্ন রকম
ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছিল সিরাজের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রকারীদের মধ্যে অন্যতম হচ্ছে
তার খালা ঘসেটি বেগম।
এছাড়াও সিরাজউদ্দৌলার পরাজয়ের পিছনে তার নিজেরও অনেক দোষ ত্রুটি রয়েছে কারণ সে
তার শত্রুদের সঠিকভাবে শাস্তি না দিয়ে ক্ষমা করে দিতেন কারণ তিনি অনেক সরল মানুষ
ছিলেন। তার বিরুদ্ধে তার খালা ঘসেটি বেগুন এবং তার প্রধান সেনাপতি মীরজাফর
ষড়যন্ত্র করত সিরাজ সেটি বুঝতে পেরেও তাদেরকে এমন কিছু বলতেন না এটি হলো তার
পরাজয়ের মূল কারণ।
এভাবে করে ১৭৫৭ যখন ইংরেজদের সাথে পলাশীর প্রান্তরে যুদ্ধ শুরু হয় তখন মীরজাফর
তার সকল সৈন্যকে নিয়ে নবাব সিরাজউদ্দৌলাকে একা ফেলে দিয়ে চলে আসে যার ফলে নবাব
ইংরেজদের কাছে চরমভাবে পরাজয় গ্রহণ করে।
নবাব কেন যুদ্ধে পরাজিত হয়েছিলেন
নবাব কেন যুদ্ধে পরাজিত হয়েছিলেন এ সম্পর্কে আপনি যদি উপরের অংশ পড়ে থাকেন
তাহলে আপনি খুব সহজে বুঝতে পারবেন যে নবাব সিরাজউদ্দৌলা কেন ইংরেজদের সাথে যুদ্ধে
পরাজিত হয়েছিল।
ইংরেজদের সাথে পলাশীর যুদ্ধে নবাবের পরাজয়ের একমাত্র কারণ হচ্ছে তার বিরুদ্ধে
ষড়যন্ত্র করা কারণ সিরাজউদ্দৌলা যখন বাংলার নবাব হন তখন তার বিরুদ্ধে তার খালা
ঘসেটি বেগম এবং মীরজাফর বিভিন্নভাবে ষড়যন্ত্র করে।
আরো পড়ুনঃ এইডস রোগের প্রতিকার লক্ষণ এবং এর চিকিৎসা
আপনি ইতিহাস ঘাটে দেখতে পারবেন যে বাংলার শেষ নবাব সিরাজউদ্দৌলা যুদ্ধে পরাজিত
হওয়ার নূন্যতম কারণ হচ্ছে মীরজাফরের ষড়যন্ত্র কারণ নবাব সিরাজউদ্দৌলা যখন
ইংরেজদের সাথে যুদ্ধে যাই তখন মীরজাফর সকল সৈন্যদেরকে নিয়ে যুদ্ধের প্রান্ত থেকে
চলে আসে যার ফলে নবাব সিরাজউদ্দৌলা সেই যুদ্ধে পরাজয় গ্রহন করেন।
লেখকের মন্তব্য
সিরাজের সাথে ইংরেজদের বিরোধের কারণ কি এবং কিভাবে নবাব সিরাজউদ্দৌলা কে পরাজয়
গ্রহণ করতে হয়েছিল এ সম্পর্কে আপনি যদি আমাদের আর্টিকেল থেকে জেনে উপকৃত হয়ে
থাকেন তাহলে আর্টিকেলটিতে অবশ্যই একটি লাইক কমেন্ট এবং শেয়ার করবেন এবং এই ধরনের
সকল রকম তথ্য পেতে আমাদের ওয়েবসাইটের সাথে যুক্ত থাকবেন ধন্যবাদ।
rsfahim it নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url