ইফতারে কি খাওয়া উচিত রমজান মাসে সুস্থতার জন্য

 

রমজান মাসে সুস্থ থাকার জন্য ইফতারে কি খাওয়া উচিত এবং সেহরিতে খাবারের তালিকা এর মধ্যে কি রাখা উচিত আপনি যদি এ সম্পর্কে জানতে চান তাহলে আমাদের এই আর্টিকেলটি আপনার জন্য এ সম্পর্কে আমরা এই আর্টিকেলে বিস্তারিত আলোচনা করেছি।

ইফতারে কি খাওয়া উচিত


তাই আপনি যদি রমজান মাসে সুস্থ থাকতে চান তাহলে আমাদের এই আর্টিকেলটি সম্পূর্ণটা একবার পড়ে আসুন।

সূচিপত্রঃ  ইফতারে কি খাওয়া উচিত রমজান মাসে সুস্থতার জন্য

ইফতারে কি খাওয়া উচিত

রমজান মাসে সুস্থ থাকার জন্য সবচেয়ে প্রয়োজন ইফতারে কি খাওয়া উচিত এবং কি খাওয়া উচিত নয় এ সম্পর্কে আমাদের সবারই ভালোভাবে লক্ষ্য রাখা। কারণ আমরা যদি সারাদিন রোজা রাখার পর ইফতারের সময় ভাজাপোড়া অথবা অস্বাস্থ্যকর খাবার বেশি খায় তাহলে আমাদের শরীরে অনেক ক্ষতি হতে পারে।
 আল্লাহর অশেষ রহমতে প্রতিবছরের মত এবার ২০২৪ সালেও আমরা একটি রমজান মাস পেতে চলেছি। রমজান মাসে সারাদিন না খেয়ে রোজা রাখার ফলে আমাদের মধ্যে অনেকের মনে প্রশ্ন আসে যে ইফতারের সময় কি খাওয়া উচিত এবং কি খাওয়া উচিত নয়।

তাই আজকে আমরা আপনাদেরকে জানাবো যে রমজান মাসে ইফতারের সময় কি খাওয়া উচিত এবং কি খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। ফলে আপনারা খুব সহজে বুঝতে পারবেন যে সারাদিন রোজা রাখার পর ইফতারে আপনাদের কি খাওয়া উচিত এবং কি খাওয়া উচিত নয়।

১। সারাদিন কোন কিছু না খেয়ে রোজা রাখার পর আমরা যদি ইফতারিতে বেশি ভাজাপোড়া এবং তেলাক্ত জিনিস খাই তাহলে আমাদের গ্যাস্টিক সহ এসিজিটির নানান সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই ইফতারের সময় এ সকল খাবার থেকে আমাদের সবাইকে বিরত থাকতে হবে।

২। ইফতারের সময় বেশি বেশি ভিটামিন এ ভিটামিন বি এবং ভিটামিন সি যুক্ত ফলমূল খেতে হবে এতে করে আমাদের শরীরে ভিটামিনের অভাব পূরণ হবে।

৩। ফলমূলের ভিতরে আপনি কমলা, মাল্টা, আপেল, পেঁপে ইত্যাদি রাখতে পারেন। এছাড়া ইফতারের সময় খেজুর তো অবশ্যই রাখবেন। কারণ খেজুরে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ আয়রন থাকে যা আমাদের শরীরে সারাদিনের আয়রনের ঘাটতি পূরণ করে।

৪। সারাদিন না খাওয়ার ফলে আমাদের শরীরে পানির একটি বড় ঘাটতি দেখা দেয় তাই ইফতারের সময় শরবত জাতীয় পানি রাখতে হবে এতে করে এটি আমাদের শরীরের সারাদিনের পানির ঘাটতি পূরণ করবে।

৫।বিশেষ করে ইফতারের সময় লেবুর রস, গুড়ের শরবত, পাকা বেলের শরবত ইত্যাদি বেশি বেশি পান করতে হবে। এবং চেষ্টা করতে হবে এ সকল শরবতের মধ্যে যেন চিনির পরিমাণ অনেক কম থাকে।

৬।এবং যারা ডায়াবেটিসের রোগী বিশেষ করে তারা ইফতারের সময় বেলের শরবত এবং লেবু শরবত খেতে পারবে কিন্তু এর মধ্যে কোন চিনি দেওয়া যাবে না। কারণ চিনি থাকলে ডায়াবেটিস রোগীদের ডায়াবেটিস বেড়ে যাওয়া সম্ভাবনা থাকে।

৭। এছাড়াও ইফতারের সময় আপনি যদি ভাজাপোড়া খেতে চান তাহলে ছোলা এবং মুড়ি খেতে পারেন তাও সেটি বাসায় তৈরি করা হতে হবে।

৮। এবং ইফতারের পর অনেকে একবারে ৪-৫ ক্লাস পানি খেয়ে ফেলে এটি করা যাবে না। প্রথমে একটি খেজুর খেতে হবে এবং তারপর এক গ্লাস পানি খেয়ে ফলমূল খেয়ে তারপর অল্প অল্প করে পানি খেতে হবে।

তাই পরিশেষে বলা যায় যে আপনি যদি পবিত্র রমজান মাসে সুস্থ থাকতে চান এবং সুস্বাস্থ্যকর ভাবে ইফতার করতে চান তাহলে এই নিয়মগুলো আপনাকে মেনে চলতে হবে।

সেহরিতে খাবারের তালিকা

রমজান মাসে ইফতারে কি খাওয়া উচিত এবং সেহরিতে কি খাওয়া উচিত এ সময় কি খেলে আমাদের শরীর ভালো থাকবে এ সম্পর্কে আমরা অনেকেই জানিনা। তাই। রমজান মাসে সারাদিন না খেয়ে রোজা রাখার মূল ইন্ধন বা শক্তি যোগান দেয় সেহেরির খাবারটি তাই সেহরিতে খাবারের তালিকা মধ্যে পুষ্টিকর এবং কার্বোহাইড্রেট যুক্ত খাবার রাখতে হবে।
 রমজান মাস আমরা ফজরের ওয়াক্তের এক থেকে দুই ঘণ্টা আগে ঘুম থেকে উঠে যে খাবারটি খায় সেটি হচ্ছে সেহেরির খাবার আর এটি খেয়েই আমরা একবারে মাগরিবের আগ পর্যন্ত না খেয়ে রোজা থাকি।

তাই বুঝতেই পারছেন যে সেহরির খাবারটা আমাদের শরীরের জন্য কতটা গুরুত্বপূর্ণ কারণ এটি রমজান মাসে আমাদের শরীরে সারাদিনের শক্তির যোগান দিয়ে থাকে। তাই আজকে আমরা আপনাদেরকে বলব যে সেহেরিতে আপনারা কোন কোন খাবার বেশি বেশি খাবেন এবং কোন খাবার থেকে বিরত থাকবেন।

১। সেহেরির সময় খাবারের তালিকায় এমন কিছু খাবার রাখতে হবে যা খেলে আপনি সারাদিন না খেয়েও এনার্জিটিক থাকতে পারেন এবং সুস্থ থাকতে পারেন।

২। সেহরির খাবারগুলো যেন কার্বোহাইড্রেট সম্পন্ন হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। কার্বোহাইড্রেট সম্পূর্ণ খাবার বলতে বোঝায় ভাত, রুটি, মুড়ি ইত্যাদি। এটি আপনার শরীরে কার্বোহাইড্রেটের ঘাটতি পূরণ করবে।

৩। এছাড়াও সেহরিতে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যেটি সেটি হল প্রোটিন সম্পন্ন খাবার। সেহেরিতে আপনি যে খাবারটি খাবেন সেটি অবশ্যই প্রোটিন সম্পন্ন হতে হবে। এতে করে আপনার শরীরে সারাদিনের প্রোটিনের চাহিদা পূরণ করবে।

৪। প্রোটিন সম্পন্ন খাবার বলতে বোঝায় দুধ, ডিম, কলা ইত্যাদি। এ সকল খাবার সেই সময় অবশ্যই রাখতে হবে।

৫। এছাড়াও সেহেরির সময় চেষ্টা করবেন মাছ-মাংস না খাওয়া এতে করে আপনার গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা হতে পারে। সেহরির সময় বেশি বেশি করে শাকসবজি এবং ফলমূল খাবেন।

৬। অনেকে রয়েছে সারাদিন না খেয়ে থাকা লাগবে এটি ভেবে সেহরির সময় অতিরিক্ত আত্রাই খেয়ে ফেলে যা একেবারেই ঠিক নয়। অতিরিক্ত মাত্রায় খাওয়ার ফলে অনেক সময় বদহজম হতে পারে তাই সেইরিতে অতিরিক্ত মাত্রায় খাবেন না।

৭। এবং ইফতারে যেরকম আমরা সবাই খেজুর খেয়ে থাকি তেমনি সেহরির সময়তেও একটি দুটি করে খেজুর খাওয়া উচিত। কারণ খেজুরে প্রচুর পরিমাণে আয়রন ভিটামিন ফাইবার থাকে যা আমাদের সারাদিনের ক্ষুধা নিবারণে সাহায্য করে।

৮। সর্বশেষে সেহেরিতে দুধ খাওয়ার অভ্যাস করতে হবে কারণ দুধ হল অনেক ভারী একটি খাবার হেরে সময় কেউ যদি এক গ্লাস দুধ খায় তাহলে সারাদিন তার কোন ক্ষুধা লাগবে না।

রমজান মাসে সুস্থ থাকার উপায়

আপনি যদি রমজান মাসে সুস্থ থাকতে চান তাহলে আপনাকে অবশ্যই ইফতারে কি খাওয়া উচিত এবং কি খাওয়া উচিত নয় এ সম্পর্কে লক্ষ্য রাখতে হবে। অশেষ রহমতে প্রতিবছরই আমরা একটি করে রমজান মাস পেয়ে থাকি।

 আরে রমজান মাসে আমরা আল্লাহর উদ্দেশ্যে সেহেরি থেকে শুরু করে ইফতারীর আগে পর্যন্ত না খেয়ে থাকি। এই রমজান মাসে প্রতিটি মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষ ব্যস্ত থাকে আল্লাহতালার এবাদতে।
অনেকে রয়েছে রমজান মাসে না খেয়ে থাকার ফলে অনেক রকম সমস্যা দেখা দেয় আর এটির কারণ হচ্ছে আমাদের দৈনন্দিন জীবনের খাবারের যে রুটিন সেটি হঠাৎ চেঞ্জ হওয়ার কারণ। তাই অনেকে আমাদের কাছে জানতে চাই যে রমজান মাসে সুস্থ থাকার উপায় সম্পর্কে।

তাই তাদের উদ্দেশ্যে আজকে এই আর্টিকেলে বলবো যে কি করলে তারা রমজান মাসে সুস্থ থাকতে পারবে এবং আল্লাহ তায়ালার এবাদত করতে পারবে।

১। রমজান মাসে আমরা ফজরের আগে খাবার খেয়ে তারপর সারাদিন না খেয়ে মাগরিবের আগ পর্যন্ত রোজা রাখি। তাই সবসময় চেষ্টা করবেন সে দিতে পুষ্টিকর এবং প্রোটিন যুক্ত খাবার খাওয়া যাতে করে আপনি সারাদিন না খেয়েও থাকতে পারেন।

২। এবং রমজান মাসে ইফতারির পর বেশি বেশি করে পানি পান করুন কারণ এ সময় আমাদের শরীরে অনেক পানি শূন্যতা দেখা দেয়।

৩। বিশেষ করে ইফতারির পর লেবুর শরবত, ডাবের পানি অথবা বেলের শরবত খেতে হবে এতে করেও আমাদের শরীরে পানি শূন্যতার ঘাটতি অনেক পূরণ হবে।

৪। এবং ইফতার এবং সেহরির সময় তেলাক্ত খাওয়ার থেকে নিজেকে যতটা পারা যায় দূরে রাখবেন কারণ এগুলো খাওয়ার ফলে গ্যাস্ট্রিক সহ বদহজমের সমস্যা হতে পারে।

৫। সেহরীর সময় বেশি বেশি করে হাইড্রোয়েড ও প্রোটিনযুক্ত খাবার যেমন দুধ ডিম কলা ইত্যাদি বেশি বেশি করে খাবেন। এতে করে সারাদিনের ক্লান্তি দূর হবে।

৬। এবং ইফতারের সময় একবারে বেশি কিছু খাবেন না চেষ্টা করবেন অল্প অল্প করে খাবার কারণ সারাদিন না খাওয়ার ফলে আমাদের পেটে হজম শক্তি অনেক কমে যায় যার ফলে একসাথে বেশি কিছু খেলে সেটি আমাদের শরীরে ক্ষতি হতে পারে। তাই যা খাবেন অল্প অল্প করে খাবেন।

রমজান মাসে কি বিয়ে করা যায়

আশা করি ইতিমধ্যে আপনারা বুঝতে পেরেছেন ইফতারে কি খাওয়া উচিত রমজান মাসের সুস্থ থাকার জন্য। আমরা এক মাস আল্লাহ তায়ালা নির্দেশে রমজান মাসে রোজা রেখে থাকি।

 এ সময় আমরা আল্লাহর নির্দেশে সেহেরি থেকে ইফতারের আগ পর্যন্ত সকল প্রকার খাবার এবং পানাহার থেকে বিরত থাকি। আবার অনেকে মনে করে রমজান মাসে যেমন খাবার থেকে বিরত থাকতে হয় তেমনি রমজান মাসে কি বিয়ে করা যায় না কি বিয়ে থেকেও বিরত থাকতে হয়।
এটি অবশ্যই একটি ভুল ধারণা কারণ হাদিসের কোন জায়গায় বলা নেই যে আপনি রমজান মাসে বিয়ে করতে পারবেন না। বরং হাদিসে সুস্পষ্ট ভাবে বলা হয়েছে যে যে কোন সময় যেকোনো পরিস্থিতিতে বিয়ে করতে পারেন ইসলামে বিয়েকে অনেক সহজ করে দেওয়া হয়েছে। আপনি চাইলে বিয়ের জন্য রোজা থেকে পাত্রী অথবা পাত্র দেখতে পারেন।

কারণ বিয়ের জন্য পাত্রী অথবা পাত্র দেখা হল সুন্নত। আপনি রমজান মাসেও চাইলে বিয়ে করতে পারেন কিন্তু একটি বিষয়ে আপনাকে খেয়াল রাখতে হবে সেটি হচ্ছে বিয়েতে কোন খাওয়া-দাওয়ার ব্যবস্থা অথবা অনুষ্ঠান করা যাবে না।

কারণ আমরা সবাই জানি রমজান মাসটি হলো রোজা রাখার একটি মাস সেই মাসে আপনি যদি বিয়ের জন্য অনুষ্ঠান এবং খাওয়া-দাওয়ার ব্যবস্থা করেন সেটি একবারে অনুচিত একটি কাজ হবে। তাই রমজান মাসে যদি বিয়ে করতে চান তাহলে বাবা-মার অনুমতি নেন পরিবারের অনুমতি নেন এবং রেজিস্ট্রি কালমা করে বিয়ে করে নিন।

পারলে একটি মসজিদে যান এবং ভালো একটি আলেমের সাথে কথা বলে মসজিদে কালমা পড়ে বিয়ে করুন এটিতে আরও বেশি সুয়াব পাবেন রমজান মাসে।

লেখকের মন্তব্য

আপনি যদি আমাদের এই আর্টিকেলটি পড়ে বুঝতে পারেন যে রমজান মাসে সুস্থ থাকতে হলে কখন কিভাবে খাওয়া দাওয়া করতে হবে এবং কোন কোন খাবার থেকে দূরে থাকতে হবে তাহলে আমাদের এই আর্টিকেলটিতে একটি লাইক কমেন্ট ও শেয়ার করুন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

rsfahim it নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url