লাইলাতুল কদর কেমন প্রকৃতির রাত এবং নামাজের নিয়ত
প্রিয় পাঠক আপনি যদি লাইলাতুল কদর কেমন প্রকৃতির রাত এবং লাইলাতুল কদরের নামাজের
নিয়ত সম্পর্কে জানতে চান তাহলে আমাদের এই আর্টিকেলটি আপনার জন্য। কারণ আমাদের এই
আর্টিকেলে এই সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।
তাই আপনি যদি পুরো আর্টিকেলটি ভালোভাবে পড়েন তাহলে লাইলাতুল কদর সম্পর্কে সকল
তথ্য জানতে পারবেন।
সূচিপত্রঃ লাইলাতুল কদর কেমন প্রকৃতির রাত এবং নামাজের নিয়ত
লাইলাতুল কদর কেমন প্রকৃতির রাত
রমজান মাস এলে আমাদের সবারই প্রশ্ন থাকে যে লাইলাতুল কদর কেমন প্রকৃতির রাত।
আসলে রমজান মাসের শেষ দশকের বিজোড় রাতগুলোকে লাইলাতুল কদরের রাত বলা
হয়ে থাকে। এই বিজর রাতগুলোর মধ্যে যেকোনো একটি রাতেই লাইলাতুল কদর হয়।
আরো পড়ুনঃ ঈদের নামাজের ফরজ কয়টি
আল্লাহ তা'আলা বলেছেন রমজানের শেষ দশকের বিজোড় এ রাতগুলোকে অনুসন্ধান
করতে কারণ এই রাতগুলোর মধ্যে যে কোন একটি রাতেই লাইলাতুল কদর হবে।
এছাড়াও লাইলাতুল কদরের রাতকে চেনার কিছু আলামত হাদিসে এসেছে যেমন রাতটিতে বেশি
অন্ধকার থাকবে না, মৃদু একটি বাতাস প্রবাহিত হবে, ঝিরিঝিরি বৃষ্টিপাত হবে,
এবাদত করে অনেক তৃপ্তি পাওয়া যাবে, কোন ঈমানদার ব্যক্তি স্বপ্নে দেখতে পাবে
ইত্যাদি। তাই আমাদের সকলের উচিত এই রাতগুলোতে ভালোভাবে জেগে আল্লাহতালার এবাদত
করা।
লাইলাতুল কদর হচ্ছে অনেক ফজিলতপূর্ণ একটি রাত এ রাতের গুরুত্ব অন্যান্য রাতের
চেয়ে অনেক বেশি। হাদিসে এসেছে যে ব্যক্তি রমজান মাসের লাইলাতুল কদরের রাতে
এবাদত থেকে বিরত থাকবে তার মত হতভাগা আর কেউ নেই।
লাইলাতুল কদরের বিজর রাতগুলোতে আল্লাহতালা শেষ আসমানে নেমে আসে এবং সকল
ফেরেশতাকে বান্দাদের কাছে পাঠিয়ে দেয় এবং বলতে থাকে আজ বান্দাদের সকল
আশা-আকাঙ্ক্ষা পূরণ করব। এই রাতে কেউ যদি চোখের পানি ফেলে আল্লাহ তায়ালার কাছে
কোন কিছু চাই তাহলে আল্লাহতালা তাকে ফেরায় না।
তাই পরিশেষে বলা যায় যে লাইলাতুল কদর হচ্ছে অনেক ফজিলতপূর্ণ একটি যা প্রতিটি
মুসলিম জাতির জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ।
লাইলাতুল কদরের নামাজের নিয়ত
ইতিমধ্যে আপনারা সবাই জেনেছেন যে লাইলাতুল কদর কেমন প্রকৃতির রাত। রমজান মাসের
সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এবং ফজিলতপূর্ণ রাত হচ্ছে লাইলাতুল কদর তাই লাইলাতুল
কদরের নামাজের নিয়ত সম্পর্কে জানা এবং সে অনুযায়ী আমল করা আমাদের প্রত্যেকেরই
প্রয়োজন।
রমজান মাসের শেষ দশকের বিজর পাঁচটি রাতকে লাইলাতুল কদরের রাত ধরা হয়ে
থাকে। এই পাঁচটি রাতের মধ্যে যে কোন একটি রাতেই লাইলাতুল কদর হয় তাই পাঁচটি
জাতি আমাদেরকে ইবাদত করতে হয়।
আরো পড়ুনঃ ঈদুল ফিতরের নামাজের ফজিলত
যার ফলে অনেকেই লাইলাতুল কদরের নামাজ কত রাকাত পড়বে এবং কিভাবে পড়বে এ নিয়ে
মতবিরোধ দেখা যায়। তাই আজকে আপনারা আমাদের এই আর্টিকেলটি পড়লে বুঝতে পারবেন
যে লাইলাতুল কদরে কিভাবে নামাজ পড়তে হয় এবং এবাদত করতে হয়।
নামাজের নিয়ম
রমজান মাসের শেষ দশকের এই ২১,২৩,২৫,২৭,২৯ পাঁচটি রাতকে লাইলাতুল কদরের রাত বলা
হয়। তাই সর্বপ্রথম এশার ফরজ এবং সুন্নত নামাজ পড়ার পর তারাবির নামাজ পড়তে
হবে। তারাবির নামাজ পড়ার পর বেতের নামাজটি বাকি রাখতে হবে।
তারাবির নামাজ শেষ হয়ে গেলে কিছুক্ষণ বিশ্রাম নেয়ার পর গভীর রাতে নামাজ শুরু
করতে হবে চেষ্টা করবেন এ সময় এবাদতটি একা একা করার এতে করে এবাদতটি কবুল
হওয়ার চান্স বেশি থাকে। লাইলাতুল কদরের কেমন কোন নামাজের নিয়ম নেই আপনি চাইলে
দুই রাকাত দুই রাকাত করে যতক্ষণ পারেন করতে পারবেন।
প্রতি দুই রাকাত নামাজ পর পর একটু করে বিরতি নিতে হবে এবং বিরোধী সময়টি যিকির
আজগার বেশি বেশি করে করতে হবে। এবং কুরআন তেলাওয়াত করতে হবে।
নামাজ শেষ করার আগে বাকি থাকা বেতের নামাজটি ওই সময় করে নিতে হবে বেতের নামাজ
পড়া হয়ে গেলে এরপর দুহাত তুলে আল্লাহর কাছে দোয়া করতে হবে। এভাবে আপনি চাইলে
লাইলাতুল কদরের নামাজ আদায় করতে পারেন।
লাইলাতুল কদর এর ফজিলত
লাইলাতুল কদর কেমন প্রকৃতির রাত রাত এই নিয়ে আমরা অনেক সময় অনেক রকম মন্তব্য
করে থাকি। আসলে একজন মুসলমানের জীবনে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ রাত হচ্ছে শবে কদর
অথবা লাইলাতুল কদরের রাত।
কারণ লাইলাতুল কদর এর ফজিলত অন্যান্য রাতের চেয়ে অনেক বেশি কারণ এই রাতে
আল্লাহতালার এবাদত করার মাধ্যমে আমরা আমাদের সকল গুনাহ মাফ করাতে পারি। রমজানের
শেষ দশকের বিজোড় রাতগুলোকেই লাইলাতুল কদরের রাত্রি বলা হয়ে থাকে।
আরো পড়ুনঃ ২০২৪ সালের রোজার ঈদ কত তারিখে
মূলত শেষ রমজানের দশম রাত্রি যেমন ২১,২৩,২৫,২৭,২৯ এই রাত্রিগুলোতে বিজর রাত্রি
বলা হয়। আরে রাত্রিগুলোতেই আল্লাহতালার ইবাদত-বান্দীগী করতে হয় কারণ এগুলোর
মধ্যে যে কোন একটি শবে কদর হতে পারে। এটি অন্যান্য মাসে অথবা বছরের রাতের
তুলনায় অনেক ফজিলতপূর্ণ একটি রাত কারণ এই রাতে আল্লাহতালা এবং সকল ফেরেশতা শেষ
আসমানে নেমে আসেন।
এবং বান্দাদের এবাদত বান্ধবী দেখতে থাকেন এবং তাদের সকল গুনাহ খাতা মাফ করে
দেন। রাসুল (সঃ) বলেন যে ব্যক্তি রমজান মাস পেল এবং শবে কদরের রাত পেল তারপরেও
নিজের গুনাহ গুলোকে মাফ করাতে পারল না তার মত হতভাগা আর কেউ নেই।
শবে কদরের রাত্রে কেউ যদি তারাবির নামাজ পড়ার পর ফজরের ওয়াক্তের আগে পর্যন্ত
আল্লাহতালা এবাদত করে এবং চোখের পানি ছেড়ে আল্লাহর কাছে কিছু চায় তাহলে
আল্লাহতালা তার চাওয়া ফেরায় না। তাই বলা যায় যে লাইলাতুল কদর এই রাতটির অনেক
ফজিলত এবং গুরুত্ব আল্লাহতালা রেখেছেন তাই প্রতিটি মুসলিম জাতির জন্যই এর একটি
ইবাদতের রাত।
শবে কদর অর্থ কি
শবে কদর অর্থ কি শাব হচ্ছে একটি ফারসি ভাষা এবং লাইলাতুল হচ্ছে আরবি ভাষা যার
অর্থ রজনী বা রাত্রি। এবং কদর শব্দের অর্থ সম্মান অথবা মর্যাদা অর্থাৎ লাইলাতুল
কদর অথবা শবে কদর অর্থ হচ্ছে সম্মানিত রাত্রি।
রমজান মাসের শেষ দশম রমজানের পাঁচটি বিজোড় রাতকেই শবে কদর অথবা লাইলাতুল
কদর বলা হয়ে থাকে। এ পাঁচটি বিজোর রাতের মধ্যে যেকোনো একটি রাতকেই শবে কদর বলা
হয়ে থাকে।
আরো পড়ুনঃ ছাগল এবং গরু জবাই করার নিয়ম
আল্লাহ তায়ালা বলেছেন রমজানের শেষ দশকের বেজোড় রাত গুলি তোমরা সবাই অনুসন্ধান
করো কারণ এই রাতগুলোর মধ্যে যে কোন একটিতেই শবে কদর হবে। অন্যান্য মাস অথবা
অন্যান্য বছরের তুলনায় শবে কদরের এ রাত্রি অনেক গুরুত্বপূর্ণ এবং ফজিলতপূর্ণ
একটি রাত। এই রাত্রে আল্লাহতালা এবং সকল ফেরেশতা শেষ আসমানে নেমে আসে এবং
বান্দাদের সকল চাওয়া পাওয়া পূরণ করে।
এবং এ রাত্রে যারা বেশি বেশি ইবাদত করবে এবং আল্লাহ তা'আলার কাছে তার আগের
দিনগুলোর জন্য ক্ষমা চাইবে তাহলে আল্লাহতালা সে বান্দাদের সকল গুনাহ খাতা মাফ
করে দিবেন।
লাইলাতুল কদর কাকে বলে
বর্তমানে অনেক মুসলিম ভাইয়েরা রয়েছে যারা রমজান মাসে শবে কদরের রাত্রে রাত
জেগে আল্লাহ তায়ালার এবাদত করে থাকে কিন্তু লাইলাতুল কদর কেমন প্রকৃতির
রাত এবং লাইলাতুল কদর কাকে বলে এ সম্পর্কে তাদের সঠিক কোন ধারণা নেই।
রমজান মাসের শেষ দশকের বিজোড় রাতগুলোকেই লাইলাতুল কদর বলা হয়ে থাকে।
রমজানের শেষ দশকের প্রায় পাঁচটি বিজোড়া আমরা পেয়ে থাকি এই পাঁচটি বেজোড়
রাতের মধ্যে যেকোনো একটি রাতে লাইলাতুল কদর হয়ে থাকে।
হাদীসে এসেছে রমজানের শেষ দশকের এই পাঁচটি রাতকে অনুসন্ধান করতে হবে কারণ এই
পাঁচটি রাতের মধ্যে যে কোন একটি রাতেই লাইলাতুল কদর হবে। বর্তমান সময়ে অনেকে
27 রমজানকেই লাইলাতুল কদর হিসেবে চিহ্নিত করে থাকে।
আরো পড়ুনঃ কোরবানি করার সঠিক নিয়ম
কিন্তু এটি একবারে ভুল একটি ধারণা কারণ আল্লাহতালা আল কুরআনে বলেই দিয়েছেন যে
তোমরা রমজানের শেষ দশকের বেজোড় রাতগুলোকে অনুসন্ধান করো তাহলে তোমরা লাইলাতুল
কদরের দেখা পাবে।
লাইলাতুল কদর অনেক ফজিলত অন্য একটি রাত এ রাত অন্যান্য রাতের তুলনায় অনেক
গুরুত্ব এবং ফজিলত পূর্ণ। তাই আমাদের প্রত্যেকের উচিত এ রাতে বেশি বেশি করে
আল্লাহতালার এবাদত করা।
লেখকের মন্তব্য
আপনাদের যদি লাইলাতুল কদর সম্পর্কে আমাদের এই আর্টিকেলটি ভালো লেগে থাকে তাহলে
আর্টিকেলটিতে একটি লাইক এবং কমেন্ট করুন এবং এটি অন্যদেরকে শেয়ার করুন।
rsfahim it নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url